দুই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও জেএমবির ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর জিয়া। গত সাত বছর ধরে আড়ালে থেকেই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অন্যতম প্রধান হিসেবে কাজ করে আসছেন তিনি।
তাকে আটক করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকটি অভিযান চালালেও সব অভিযান ব্যর্থ করে ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে গিয়েছেন তিনি।
সমকামীদের অধিকার বিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’র সম্পাদক জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যা মামলার আসামি জঙ্গি আসাদুল্লাহকে চলতি বছরের শুরুতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জোড়া খুনের এ মামলায় রিমান্ডে নিলে আসাদুল্লাহ জানান, এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দাতা ছিলেন জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক (মেজর জিয়া নামে বেশি পরিচিত)।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের উপ কমিশনার মহিবুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘জুলহাস মান্নান ও তনয় হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আসাদুল্লাহ জানান যে মেজর জিয়ার নির্দেশেই তারা তাদের কুপিয়ে হত্যা করেন।’
এদিকে আসাদুল্লাহর স্বীকারোক্তির পর আবার আলোচনায় উঠে এসেছে পলাতক এই মেজর জিয়ার নাম। প্রশ্ন উঠেছে, পুরস্কার ঘোষিত পলাতক শীর্ষ এ জঙ্গি নেতা এখন কোথায়?
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে আনসার আল ইসলামের সংগঠনিক গোয়েন্দা শাখার প্রধান জুবায়েরকে গ্রেফতারের পর মেজর জিয়া সম্পর্কে নতুন তথ্য পায় গোয়েন্দারা।
সে সময় জুবায়ের জানান, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের জাকির হোসেন রোডের ৭৬ নম্বর বাড়িতে মেজর জিয়ার সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। তখন তার মুখে দাড়ি দেখতে পাননি জুবায়ের।
এদিকে বিগত ২-১ বছরের কয়েকটি ঘটনায় জড়িত জঙ্গিদের সেলফোন, কল রেকর্ড পর্যালোচনা, ইমেইল অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে হামলার পরিকল্পনার পেছনে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে জিয়ার নামই পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র বলছে, বিশেষ কমান্ডো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়ায় অন্য জঙ্গিদের চেয়ে মেজর জিয়া অনেক বেশি কৌশলী। আর সে কারণেই তিনি গ্রেফতার এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াতে সক্ষম হচ্ছেন।
জঙ্গি এ নেতার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মেজর জিয়ার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই পুলিশের কাছে। তবে তিনি যেখানেই থাকুন না কেন নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছেন। তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
লেখক, ব্লগার, মুক্তমনা মিলে নয়জনকে হত্যার মাস্টারমাইন্ড একই জিয়া। ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক এ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।
ওই বছরেই পহেলা জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে পাঁচ জঙ্গি ও ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার পর কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গুলশান আবাসিক এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালায়। ভাগ্যচক্রে সেদিনও গ্রেফতার এড়িয়েছেন জিয়া।
কে এই মেজর জিয়া?
জিয়ার পুরো নাম সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক। গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের মোস্তফাপুরে। আত্মগোপনে যাওয়ার আগে মিরপুর সেনানিবাসে থাকতেন।
২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি সেনা সদর দফতরের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনীর সাবেক ও তৎকালীন কিছু সদস্য দেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত এবং সেনাবাহিনীতে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে মেজর জিয়া অন্যতম। তিনি জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলেও সেনা সদর দফতর জানিয়েছিল। এ অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে ইশরাক আহমেদ নামে তার এক প্রবাসী বন্ধু যুক্ত ছিলেন।
ঢাকা-খুলনা-বেনাপোল রুটে যাত্রী সেবা বৃদ্ধিতে ঢাকা-কাশিয়ানী জংশন হয়ে খুলনা ও বেনাপোল রুটে নতুন দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪ টায় ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নতুন এ ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে মাত্র পৌনে চার ঘণ্টায় বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছাবে।
এদিকে রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ায় এরুটে পাসপোর্টধারী যাতায়াত বৃদ্ধি ও আগামীতে বানিজ্য ক্ষাতেও ভুমিকা রাখবে বলছেন সংশিষ্টরা।
রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ঢাকা থেকে সকাল পৌনে ১১টায় ছাড়বে এবং বেলা ২টা ২৫ মিনিটে বেনাপোল পৌঁছাবে। আবার বেনাপোল থেকে বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবে। যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন এবং ভাঙ্গা জংশনে থেমে যাত্রী ওঠাবে এ ট্রেন।
রেল ষ্টেশন সুত্রে জানায়, ট্রেনটিতে ৭৬৮ আসনের বিপরীতে প্রথমদিনে ৯২৭ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৭৪০ টাকা, এসি সিট ৮৮৫ টাকা এবং এসি কেবিন ১,৩৩০ টাকা। প্রতিটি শ্রেণির ভাড়ার সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ভ্যাটও প্রযোজ্য হবে।
বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে সপ্তাহে ছয় দিন চলাচল করবে এ ট্রেন, সোমবার থাকবে সাপ্তাহিক ছুটি। নতুন রুটের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে বেনাপোলের যোগাযোগ আরও দ্রুত ও সহজ হবে। বর্তমানে ট্রেনটি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল-ঈশ্বরদী হয়ে বেনাপোল পৌঁছাতে ৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগলেও পদ্মা সেতু রুটে এ সময় চার ঘণ্টা কমে এসেছে।
বেনাপোল বন্দর চেকপোষ্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজিজুল হক জানান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে পাসপোর্টধারী যাতায়াত বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম হয়ে থাকে এর বড় একটি অংশ হয় বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে। প্রতিবছর এর পরিমান প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বছরে ২০ লাখের মত পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে। দুই খাতে সরকারের রাজস্ব আসে ১০ হাজার কোটির কাছাকাছি। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে৷ যোগাযোগ খাত উন্নয়নে গণমানুষের দাবির মুখে অবশেষে সরকার বেনাপোল রুটের গুরুত্ব বিবেচনা করে যাত্রীসেবা বাড়াতে বেনাপোল-ঢাকা রুটে প্রথমে বেনাপোল এক্সপ্রেস চালু করে। এবার এই সেবা আরো এক ধাপ বৃদ্ধিতে ঢাকা -কাশিয়ানী জংশন হয়ে খুলনা ও বেনাপোল রুটে নতুন দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করলো। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস চালুর ফলে বেনাপোলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল। এটি তাদের ভোগান্তি কমিয়েছে এবং ঢাকার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করেছে।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, মাত্র সাড়ে ৪ ঘন্টায় ঢাকা থেকে বেনাপোল পৌছাবে রেল। যা বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগে সময় লাগতো সাড়ে ৯ ঘন্টা। যাত্রার সময় সীমা কমে আসায় এ রুটে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত আগামীতে আরো বাড়বে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে ঢাকা বা অন্যান্য গন্তব্যে পণ্য পরিবহনের মাধ্যম কেবল সড়ক পথ। তবে খুব দ্রুত রেল রুটে পণ্য পরিবহন শুরু হবে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে কম সময় ও সাশ্রয়ে পণ্য পরিবহনের সুযোগে এরুটে আমদানি-রফতানি বাড়বে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, গত ১৬ বছর চসিকের একেকজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, ডাকাতের সরদার।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) নগরীর আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালিরছড়া খাল পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র বলেন, আমরা এখানে কালিরছড়া খাল দেখতে এসেছি। এক সময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল। কিন্তু আজ এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এই ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
‘কালিরছড়া খালটি চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এই খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখানে পাহাড় যারা কেটেছে তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। একেকজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, এক-একজন ডাকাতের সরদার ছিল। এই যে জসিম সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার আইন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, তারা তাকে গ্রেফতারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।’
পাহাড়কাটার পেছনে অনির্বাচিত শক্তি কাজ করেছে দাবি করে মেয়র বলেন, রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। গত ১৬ বছর ধরে চলা এই অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না, যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।
‘আমাদের লক্ষ্য খালগুলো পুনরুদ্ধার করা। ইতিমধ্যে আমরা কালিরছড়া খালের কিছু অংশ দখলমুক্ত করেছি এবং আরো উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। চট্টগ্রামের ২১টি খাল, যেমন পতেঙ্গার গুপ্ত খাল, বাকলিয়ার বীর্জা খাল এবং কৃষি খাল পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই খালগুলো চিহ্নিত করে খনন কর্মসূচি শুরু করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এটি একটি স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।’
খালখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলোকে পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায় এবং নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইনশাল্লাহ, আমরা চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করব।
তিনি আরও বলেন, যে ভূমিদস্যুরা দখল করে রেখেছে এবং অন্যায়ের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য শহর উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের কাজ চলতে থাকবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ) সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ওরফে কানুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন—ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩), জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), ইলিয়াছ ভূইয়া (৫৮), আবুল কালাম আজাদ (৪৮) ও ইমতিয়াজ আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)।
এর আগে, গত রোববার দুপুরে ওষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পর স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে দেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল বলেন, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ আটককৃতদের ৫৪ ধারায় আদালতে হাজির করবে। তারপর এটি নিয়মিত মামলা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু বলেন, সরকারের কাছে আমার আহ্বান যেন ন্যায়বিচার পাই। যদি তারা অপরাধীদের শাস্তি না দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের এর জবাব দিতে হবে।
আব্দুল হাই বর্তমানে ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন এবং সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার মিরপুর থানা পুলিশের অভিযানে ১৪৮ বোতল ভারতীয় আমদানি নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল, বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি, দুইটি ম্যাগজিন সহ
আদিল হোসেন (৩২) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া সড়কের সাতবাড়িয়া মাঠ এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত আদিল হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব মহিষকুন্ডি এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে কুষ্টিয়ার মিরপুর এলাকায় চুরি ছিনতাই এর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়াতে গত সোমবার দিবাগত রাত্রে থেকে মিরপুর থানা পুলিশ বিশেষ চেকপোস্ট ও অভিযান পরিচালনা করে আসছিল।
এমতাবস্থায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর তিনটার সময় মিরপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেকের নেতৃত্বাধীন মিরপুর থানার ওসি মোঃ মমিনুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স সাতবারিয়া মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে চেকপোস্ট ডিউটি জোরদার করে।
পরবর্তীতে বেলা চারটার সময় বহলবাড়িয়া থেকে নোয়াপাড়াগামী সড়কের সাতবাড়িয়া মাঠ এলাকায় কুষ্টিয়ামুখি একটি ট্রাক গতিরোধ করে ট্রাকে তল্লাশি পরিচালনা করে পুলিশ। তল্লাশি পরিচালনা সময় ট্রাকের চালকের সিটের নিচে থেকে একটি সাদা বস্তার মধ্য থেকে ১৪৮ বোতল ফেনসিডিল ও চালকের স্টিয়ারিং এর ড্রয়ার থেকে পলিথিনে পেঁচানো একটি বিদেশী পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
এসময় উক্ত মাদক ও অস্ত্র বহনের দায়ে গাড়ির চালক আদিল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও মাদক বহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা চেকপোস্ট বসিয়ে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করেছি। এ ব্যাপারে মিরপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।