হামলাকারীদের প্রশিক্ষক ছিলেন ‘আইএস টুপি’ পরা রিগ্যান
হলি আর্টিজান মামলার রায়হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত জঙ্গির কারও মধ্যে কোনো অনুশোচনার লেশমাত্র দেখা যায়নি। তবে রায় শোনার পর কয়েকজন জঙ্গি কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েন। ঝিমিয়ে পড়া জঙ্গিদের মূহূর্তেই চাঙ্গা করে তোলেন জঙ্গি প্রশিক্ষক রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান।
রায় শোনার পর শরিফুল ইসলাম খালেদ বিচলিত হয়ে পড়েন। তখন রিগ্যানকে বলতে শোনা যায়—ওর কী হয়েছে? ও এমন করছে কেন? সব ভুলে গেছে নাকি!
রায়ের পর এজলাস কক্ষ থেকে বের করার সময় জঙ্গিরা স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জোরালো কণ্ঠ ছিল রিগ্যানের। এর একটু আগেই অবশ্য জঙ্গি রিগ্যান মাথায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর প্রতীক সম্বলিত টুপি পরে নেন।
রায়ের দিন বুধবার (২৮ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, আসামিরা লোহার খাঁচার কাঠগড়ায় বসে থাকা অবস্থায়, একটু এদিক-ওদিক তাকিয়ে পকেট থেকে টুপি বের করে পরে নেন রিগ্যান। বার বার লক্ষ্য করছিলেন আইএসএ’র প্রতীকটা মাথার সামনের অংশেই আছে কিনা। টুপিটা মাথায় পরেই কাঠগড়া থেকে বের হন রিগ্যান। পাশাপাশি আসামিরা যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন তারও নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় রিগ্যানকে। এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন—আমাদের বিজয় খুব শিগগিরই।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে লোহার খাঁচার কাঠগড়ায় ওঠানো হয় আসামিদের। ভেতরে প্রবেশ করেই এক কোণায় বসে চুপচাপ ছিলেন রিগ্যান। জঙ্গিদের মাথায় আইএস টুপি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার পর এখন সবার কৌতূহল কে এই রিগ্যান, হলি আর্টিজান হামলায় তার ভূমিকা কী?
জঙ্গি নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্ট ইউনিটের তথ্য বলছে, জঙ্গি সংগঠনগুলোতে রাফিউল ইসলাম রাফি, রিপন, হাসান, অন্তর নামে পরিচিত রিগ্যান। তার বাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার ইসলামপুরের পশ্চিমপাড়ায়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, রিগ্যান নব্য জেএমবির প্রশিক্ষক ছিলেন, অর্থ লেনদেনের দায়িত্বও ছিল তার। নিষিদ্ধ সংগঠনের পদগ্রহণ করে অর্থ গ্রহণ, হামলায় জড়িতদের প্রশিক্ষণ দিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা যায়, আসামি রাকিবুল ইসলাম ওরফে রিগ্যান এইচএসসি পাস। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী জঙ্গিদের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে পড়ার সময় জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন এবং পরের বছর ঢাকায় চলে আসেন। কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ে ডিএমপির কাউন্টার টেরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অভিযানে গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেফতার হন রিগ্যান। তিনি দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।