করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সর্তক অবস্থানে বরিশাল
করোনা ভাইরাসকরোনাভাইরাস মোকাবিলায় বরিশালে আগাম সর্তক অবস্থানে রয়েছে স্বাস্থ্য ও স্থানীয় প্রশাসন। জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে আলাদা করে পাঁচটি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বরিশালে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে কর্মরত চিনা নাগরিকদের নিয়ে অরিয়েন্টেশন করা হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বরিশালে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে বরিশাল, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের তিনটি বড় প্রকল্পে কর্মরত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার চীনা নাগরিকদের নিজ দেশে না যাবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বরিশালের লেবুখালীর পায়রা সেতু, পিরোজপুরের বেকুঠিয়াতে ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে তিন হাজার চীনা প্রকৌশলী ও কর্মচারী কর্মরত আছে।
চলতি মাঘ মাসেই চীনাদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। এ সময় এখানে কর্মরত চীনা শ্রমিকরা তাদের দেশে গিয়ে উৎসবে সামিল হন। তবে করোনাভাইরাস চীনে ছড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণাঞ্চলে কর্মরত চিনা নাগরিকদের তাদের দেশে না যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এদিকে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নতুন ওয়ার্ডে স্থাপন করাসহ ভেল্টিলেটিং মেশিন এবং যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কম-কে জানান, করোনাভাইরাসের উপসর্গ, লক্ষণসমূহ এবং করণীয় সম্পর্কে কর্মরত চীনা কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদেরকেও সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের যেসব চীনা নাগরিক দেশে গেছেন তারা যেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ফিরে না আসেন সেজন্যও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বার্তা২৪.কম-কে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে ইসোলেশন কক্ষ। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৫ জনের একটি সেবিকা দল প্রস্তুত রাখাসহ ওই কক্ষের জন্য চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান এই পরিচালক।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ বার্তা২৪.কম-কে জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের সব জেলা ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় ৫ বেডের আইসোলেশন ইউনিট খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার কোনো শঙ্কা নেই। তবুও করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বরিশালের স্বাস্থ্য বিভাগ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে জানান, করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও লেবুখালী ব্রিজের কর্মরত চিনা নাগরিকদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
তাদের কোনো ধরনের করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা ও উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য ঢাকায় পাঠানোর সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান এই প্রশাসক।