বিশ্বকাপে ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে, দিতে হলো!



এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম
জার্মানির সান্ধ্য দৈনিক টি জেডের পাতায় ক্রীড়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার

জার্মানির সান্ধ্য দৈনিক টি জেডের পাতায় ক্রীড়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ জুন ২০০৬, মঙ্গলবার।

মিউনিখে পা রেখেই ডয়েস ভাষায় তিনটি শব্দ শিখলাম। রেল স্টেশনকে এরা বলে ‘বানহাফ’। আর প্রধান বা বড় রেল স্টেশন হলো ‘হাফবানহাফ’। ‘ডাঙ্কে’ মানে ধন্যবাদ। উচ্চারণের সময় গলার ভেতর অর্ধেক শব্দ আটকে থাকে, বাকি অর্ধেক বের হয়- বলার ভঙ্গিতে এমন কায়দাটা টের পেলাম!

ডয়েসের এই তিনটি শব্দকে সঙ্গী করেই ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে আমাদের কাজের শুরু। তিন দিন পরে বিশ্বকাপ। অনেক জরুরি কাজ বাকি। সেলফোনের সিম কিনতে হবে। ইন্টারনেটের সংযোগ নিতে হবে। স্টেডিয়ামে যাওয়ার শাটল বাসের সিডিউল জানতে হবে। পরের ম্যাচে অন্য শহরে যাওয়ার ট্রেনের টিকিট রিজার্ভ করতে হবে। তারচেয়ে বড় কথা- স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তা চিনতে হবে। মিউনিখ (এরা বলে মুনসেন) এর বাস ও রেল স্টেশন খুঁজে বের করতে হবে। তাই পরদিন অর্থাৎ ৭ জুনের সকালেই রেল স্টেশনে ছুটলাম চারজন। আমি, এনটিভি’র দোদুল, জনকণ্ঠের মজিবুর ও সমকালের রানা ভাই।

মিউনিখ সিটি সেন্টারে ‘হাফবানহাফ’। চারধারে রেললাইনের অনেক ম্যাপ। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়াল ভাষা। সবকিছুই লেখা ডয়েস ভাষায়। ইংরেজির কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। অ্যাক্রিডিটেশন সেন্টারে যেতে হলে যে স্টেশনে নামতে হয়- তার নাম কেউ মনে করতে পারলাম না। শেষমেশ হেল্পডেস্কে বসা এক রেল কর্তার সাহায্য নেওয়া হলো। ভদ্রলোক হাতে পুরো মিউনিখ সিটির পাতাল রেলের একটা মানচিত্র ধরিয়ে দিলেন। সেই ম্যাপে একটা রেল স্টেশনের নামের পাশে ফুটবলের ছবি আঁকা। ব্যস ঠিকানা খোঁজার টেনশন শেষ!

 নেওয়ার আগে এম. এম. কায়সার নিজেই সাক্ষাৎকার দিলেন 

হাঁটুর ওপর ম্যাপ বিছিয়ে দোদুল পুরোদস্তুর ট্র্যাকার। ম্যাপে কলম ধরে আঁকিবুকি দিয়ে জানাল- মিউনিখের আন্তর্জাতিক ব্রডকাস্টিং সেন্টার (আইবিসি) যেতে হলে আমাদের ৮টা স্টেশন পরে নামতে হবে।’

সারাদিনের জন্য পাতাল রেলের একটা গ্রুপ টিকিট কিনে আইবিসি’তে পৌঁছে আমরা তো অবাক। চারধারে ভীষণ ভিড়। জানা গেল দুপুরে এখানে সেপ ব্লাটার ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের প্রেস কনফারেন্স আছে। পাসপোর্ট আর ই-মেইলের কনফার্মেশন কপি দেখাতেই ঝটপট অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড হয়ে গেল। দুপুর হতে তখনো অনেক বাকি। বিশাল আইবিসি’র চারপাশ দেখতে হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যথার যোগাড়! সেন্টারের ভেতরে সাইকেলের আলাদা লেনও রয়েছে। ভাড়ায় সাইকেলও মিলে।

টি-মোবাইলের শপিং কর্নারে গিয়ে মেজাজ আরেক দফা খারাপ হয়ে গেল। মোবাইল কিনতে বা সিম কিনতে হলে ক্রেডিট কার্ড লাগবে।

-সরি, উই আর নট টেকিং এনিথিং ইন ক্যাশ’-ফিনফিনে সাদা শার্ট ও স্কার্টের জার্মান তরুণী মুখে চমৎকার হাসি ধরে রেখেই আমার দুঃখে যেন গলে গেল!

-কিন্তু আমাকে যে সিম কিনতেই হবে। মোবাইল ছাড়া আমি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ কিভাবে করব? কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি আমার সমস্যার সমাধান করতে পারবে।’

নীল নয়নার হাসি মুখে হাসি, কিন্তু সমাধান নেই- সরি স্যার। নো অপসন।’

জার্মানির সান্ধ্য দৈনিক টি জেডের  নজর কাড়া প্রথম পাতা

ভালোই টেনশনে পড়ে গেলাম দেখি! দুঃশ্চিন্তা দূর করল বুদ্ধিমান দোদুল। টি-মোবাইলেরই এক কর্মকর্তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে তার ক্রেডিট কার্ডে নিজের ও আমার জন্য টেলিফোনের দুটো সিম যোগাড় করে ফেলল। আমরা ওই ভদ্রলোককে নগদ ইউরোর সঙ্গে অনেকগুলো থ্যাঙ্ক ইউ (ডাঙ্কে) দিলাম।

টেলিফোনের সিম তো মিলল। এখন ইন্টারনেটের কি হবে? ওতে যে ম্যালা খরচ। স্টেডিয়ামের ভেতরে ও মিডিয়া সেন্টার- দু’জায়গার জন্য আলাদা ইন্টারনেটের সংযোগ কিনতে হবে। একেকটার জন্য খরচ প্রায় চারশ’ ইউরো। বাংলাদেশি টাকায় ৩৬ হাজার করে!

নিলে নেন, নইলে লাইন ছাড়েন। দামাদামি করার কোনো উপায় নেই। দ্বিতীয় কোনো প্রোভাইডার নেই। ডাচেস টেলিকম বিশ্বকাপের অফিসিয়াল পার্টনার। ইন্টারনেট লাইন ছাড়া বিশ্বকাপ কাভার করা অসম্ভব। কিন্তু ইন্টারনেট লাইন কিনতেও সেই ক্রেডিট কার্ড সমস্যা। যে ভদ্রলোকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে টেলিফোন লাইন কিনেছিলাম, ফের তার কাছে দৌড়ানো। আমাদের অবাক করে ভদ্রলোক আরেকবার তার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে দিলেন। কিন্তু সমস্যা যেন পিছু ছাড়ছে না। তার কার্ডে চারশ’ ইউরোর ব্যালান্স নেই!

মিউনিখ স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টার থেকে ইন্টারনেট লাইন পরদিন কেনার কোনোএকটা উপায় বের করা যাবে- এই চিন্তা করে সেদিনের মতো আইবিসি ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় হঠাৎ দেখি ভিডিও ক্যামেরা হাতে দোদুল মোটাসোটা এক লোকের পেছনে দৌড়াতে শুরু করল।

-কি জানি কাকে পেল?

জার্মানির পত্রিকায় লাল-সবুজের পতাকা, লেখক ও তার সাক্ষাৎকার 

আরে এ তো চিলাভার্ট! প্যারাগুয়ের বহুল আলোচিত সেই গোলকিপার। অনেক মুটিয়ে গেছেন। দোদুল ক্যামেরা চালু করে। আমাদের প্রশ্ন শুনে দু’পাশে মাথা ঝাঁকিয়ে দুর্বোধ্য (সম্ভবত স্প্যানিশ) ভাষায় হড়বড় করে কি যেন বললেন প্যারাগুয়ের সাবেক অধিনায়ক। দাঁড়িয়ে থাকলে ভীষণ বিপদ হবে; বড় রকমের আর্থিক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে- এমনই ভঙ্গি করে প্রায় দৌড়ে আমাদের টপকে চলে গেলেন চিলাভার্ট। পরে জেনেছিলাম লাতিন আমেরিকার একটি টিভি চ্যানেলে ধারাভাষ্য দিতেই বিশ্বকাপে এসেছেন এই তারকা। প্যারাগুয়ে এবারের বিশ্বকাপে নেই। তাই চিলাভার্টের সাক্ষাৎকার তেমন জমত না- এই সান্ত্বনা নিয়েই হোটেলে ফেরার জন্য ট্রেন ধরতে ছুটলাম আইবিসি থেকে।

দুপুর শুরুর সময় বলেই হয়তো তেমন ভিড় নেই ট্রেন স্টেশনে। গলার অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের দিকে আশপাশের অনেকেই উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে তাকাচ্ছে।

‘এক্সকিউজ মি’-শুনে ঘাড় ঘুরালাম। গোল ফ্রেমের চশমা চোখে দাঁড়ানো এক জার্মান তরুণী। এক কাঁধে ব্যাগ ঝুলছে। অন্য কাঁধে ক্যামেরা।

-আমি রিপোর্টার। জার্মানির একটি পত্রিকায় কাজ করি। তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই।

-আরে আমিও যে কাউকেই খুঁজছিলাম, এখানে।

ততক্ষণে ট্রেনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।

-তুমি কোথায় যাবে?

-সিটি সেন্টার।

-গুড, আমিও সেখানেই নামব। চলো ট্রেনে বসে আলাপ করা যাবে।

পত্রিকায় অন্য দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার

ট্রেন ছাড়ার পর টি জেডের রিপোর্টার আন্দ্রেই ওভারমেইয়ার আমাকে চমকে দিল- আমি আসলে তোমার ইন্টারভিউ নেব।

-বলো কি, এতদিন তো আমি ইন্টারভিউ নিতাম। আজ দেখি উল্টো। বিশ্বকাপে এসে এখনো কারো ইন্টারভিউ নিলামই না, বরং দিতে হচ্ছে! পাশের সিটে বসা দোদুল আমার অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসছে।

ওভারমেইয়ার তার নোটবুক খুলে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করার আগে ক্ষমা চেয়ে নিল- আমার ইংরেজি জ্ঞান অত ভালো নয়।

তাকে আশ্বস্ত করলাম- নো প্রবলেম, ইংরেজি আমারও মাতৃভাষা না।

বিশ্বকাপের শহর মিউনিখ কেমন লাগছে? লোকজনের মধ্যে উৎসাহ কেমন দেখলাম? এই শহরের কোন জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে? ফেভারিট দল কোনটি? জার্মানির কেমন সম্ভাবনা এবার- এ ধরনের সাদামাটা প্রশ্ন দিয়ে ঝটপট শেষ ইন্টারভিউ পর্ব।

মিউনিখ হাফবানহাফে ট্রেন থামতেই মনে হলো- ১০ জুনের রাতে হামবুর্গ যাওয়ার ট্রেনের টিকিট রিজার্ভ করতে হবে। ওভারমেইয়ার ভরসা দিল- কোনো সমস্যা নেই, ৪৮ ঘণ্টা আগে নিশ্চয়ই টিকিট রিজার্ভ করা যাবে।

রেল স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে ওভারমেইয়ার কাঁধের পেনট্যাক্স ক্যামেরা নামিয়ে আমাকে স্টেশনের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে ছবি তুলল।

-তুমি কাল বিকালের কাগজেই পাবে ইন্টারভিউটা। সান্ধ্য দৈনিক টি জেড, বিকাল পাঁচটার দিকে পেপারস্ট্যান্ডে খোঁজ নিও। কব্জি উল্টে ঘড়ির দিকে তাকাল ওভারমেইয়ার।

-আমাকে যেতে হবে। আমার নিউজ ছাড়ার ডেডলাইন মিস করব নইলে। ঝটপট ব্যাগ গুছিয়ে অফিসের পথে হাঁটা ধরল ওভারমেইয়ার।

উদ্বোধনী ম্যাচের পরে মিউনিখে আরো তিনবার এসেছি। কিন্তু কোনোবারই ওভারমেইয়ারের সঙ্গে দেখা করার সময় বের করা যায়নি। বিশ্বকাপের ব্যস্ততা সেই সুযোগ হতে দেয়নি।

তবে ৮ জুনের মিউনিখের বিকাল ঠিক চমকে দেয় আমাকে। সিটি সেন্টারের পাশেই পেপারস্ট্যান্ড। ৪০ সেন্ট বক্সে ফেলে ভাঁজে মোড়া টি জেড পত্রিকা হাতে নিলাম। ভেতরের চার নম্বর পৃষ্ঠার পুরোটা জুড়েই বিশ্বকাপ কাভার করতে আসা বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার। মাঝের বক্সে আমার ছবি। ডয়েস ভাষায় ছাপা হয়েছে সাক্ষাৎকার। বিন্দু-বিসর্গ কিছুই বুঝতে-পড়তে পারিনি। তবে ছবির এককোণে থাকা বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকাটা বুকের ভেতর অনেক আবেগের স্ফুরণ তৈরি করে।

এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারার সুতীব্র একটা আনন্দ ছুঁয়ে গেল পুরো সত্ত্বা জুড়ে। মনে হলো আমিও যে এই বিশ্বকাপের একজন অংশীদার!

পরের গল্প: বার্লিন হোটেলের রহস্যময় ল্যাপটপ!

আর পড়ুন- 

রাতের ট্রেনে বিশ্বকাপ পার্টি

তিমি’র সঙ্গে ছবি তোলা!

শচীন’স সসেজ, গাঙ্গুলি’স গ্রিল, মিয়াঁদাদ ম্যাজিক ম্যাঙ্গো জুস...

হাতিদের এতিমখানায়!

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে নিমন্ত্রণ

গল দুর্গের অ্যাডভেঞ্চারে...

ক্যান্ডির মন খারাপ করা সৌন্দর্য!

   

২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত জার্মানির কোচ নাগেলসমান



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউরো পর্যন্তই তার জার্মানির ডাগআউটে থাকার গুঞ্জন ছিল। কিন্তু সে গুঞ্জনকে মিথ্যে প্রমাণ করে জার্মানির সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছেন ইউলিয়ান নাগেলসমান। ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই কোচকে রেখে দিচ্ছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি।

টালমাটাল অবস্থায় জার্মান দলকে পেয়েছিলেন নাগেলসমান। দায়িত্ব নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে নিজের মতো করে গড়ে নিচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরে জার্মানদের দায়িত্ব নিয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন। এর মধ্যে তিন ম্যাচে দলকে এনে দিয়েছেন জয়। যার দুটি আবার ইউরোপীয় ফুটবলের দুই পরাশক্তি নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের বিপক্ষে।

কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নতুন চুক্তি-নাগেলসমানের উচ্ছ্বাস বাঁধ মানছে না, ‘সিদ্ধান্তটা হৃদয় থেকে নিয়েছি। জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দিতে পারা এবং দেশের সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে পারা আমার জন্য অনেক সম্মানের ব্যাপার।’

নাগেলসমানের ধ্যানজ্ঞান এখন আগামী জুন-জুলাইয়ে জার্মানিতে অনুষ্ঠিতব্য ইউরো। নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের পরই সে টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দিলেন ৩৬ বছর বয়সী এই তরুণ জার্মান কোচ, ’আমরা নিজেদের মাঠে সাফল্যমণ্ডিত ইউরো খেলতে চাই। আমি এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছি এবং (এরপর) আমার কোচিং দলকে নিয়ে বিশ্বকাপ চ্যালেঞ্জ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকব।’

;

জরিমানার মুখে পড়লেন রাহুল ও গায়কোয়াড



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার রাতে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চলতি আসরের ৩৪ তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। যেখানে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে লক্ষ্ণৌ। তবে স্লো ওভার-রেটের রাখার কারণে লক্ষ্ণৌয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি চেন্নাইয়ের অধিনায়কও পাবেন একই শাস্তি।

ওভার-রেট সংক্রান্ত জরিমানার অধীনে এবারই লক্ষ্ণৌকে প্রথমবার জরিমানার মুখে পড়তে হলো। নিয়ম অনুযায়ী লোকেশ রাহুলকে ১২ লাখ রুপি জরিমানা বহন করতে হবে। একই পরিমাণ জরিমানার সম্মুখীন হবেন রুতুরাজ গায়কোয়াডও।

এদিন টসে জিতে শুরুতে বোলিংয়ে যেয়ে ধোনিদের দল চেন্নাইকে ১৭৬ রানে আটকায় লক্ষ্ণৌ। জবাবে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান কেএল রাহুল এবং কুইন্টন ডি ককের উদ্বোধনী জুটি। রাহুল ৫৩ বলে ৮২ এবং ডি কক ৪৩ বলে ৫৪ করেন যা তাদের জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তবে ফিল্ডিংয়ের সময় স্লো-ওভার রেটের আওতায় জরিমানার মুখে পড়তে হলো লক্ষ্ণৌ এবং চেন্নাইয়ের অধিনায়ককে।

;

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দৌড়ালেন শান্ত-মুশফিক-তানজিমরা



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, দেশের ক্রিকেট যাত্রা শুরু হয়েছিল এই মাঠের মাধ্যমেই। ২০০৬ সালের আগে আন্তর্জাতিক অথবা ঘরোয়া ম্যাচের বেশিরভাগই গড়াতো এই মাঠে। এরপর এই মাঠ ফুটবলের জন্য বরাদ্দতা পায় এবং ক্রিকেটের নতুন ঠিকানা হিসেবে পরিচিতি পায় মিরপুরের শেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

আজ অনেক বছর পর আবারও দেশের প্রথম সারির ক্রিকেটারদের দেখা পেল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। তবে ক্রিকেট খেলার মাধ্যমে নয়, বরং অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে দৌড়ের মাধ্যমে। ফিটনেস টেস্টকে উদ্দেশ্য করেই মুলত এই আয়োজন।

মে মাসের শুরতেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ, এরপরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই টুর্নামেন্টকে মাথায় রেখেই খেলোয়াড়দের ফিটনেস বিষয়ে বেশ সচেতন ক্রিকেট বোর্ড। তাই আজ (শনিবার) থেকে শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট। যেখানে অংশ নেবেন সিরিজের জন্য বিবেচনায় থাকা ৩৫ জন ক্রিকেটার। ফিটনেস টেস্টের শুরুর ধাপটা হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকে ১৬০০ মিটার দৌড়ের মাধ্যমে।

ভোর ৬টায় পৌঁছে ৪০০ মিটারের এই ট্র্যাকে মোট চারটি চক্কর মেরে দৌড় সম্পন্ন করেছেন টাইগার ক্রিকেটাররা। ১৬০০ মিটারের দৌড় শেষে ৪০ মিটারের স্প্রিন্টেও অংশ নেন সবাই। এরপর মিরপুরে যেয়ে জিম সেশন দিয়ে শেষ হবে আজকের ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পর্ব। ট্রেনিংয়ের এই পর্বগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন দলের নতুন ট্রেইনার নাথান কেলি।

এখনও আন্তর্জাতিক দলে খেলছেন এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে এই ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলেছেন এমন অভিজ্ঞতা আছে মাত্র দুইজনের, তারা হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ বছর পর এখানে আবারও এসে বেশ স্মৃতিচারণ করছেন তারা। গ্যালারির আশেপাশে তাকিয়ে এবং ঘুরে দেখছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

জাতীয় দলের ম্যানেজার নাফিস ইকবালের খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুটাও এখানে। তিনি পুরোনো স্মৃতি মনে করে বলেছেন, ‘সবকিছুই দেখি বদলে গেছে! কী স্টেডিয়াম ছিল রে ভাই। খেলার সময় গেট বন্ধ করে রাখা লাগত, কী মনে নাই ভাই?’

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাহাত্ম্য উল্লেখ করে নাফীস আরও বলেন, ‘এখনকার প্রজন্ম হয়তো এখানে খেলেনি। কিন্তু এই স্টেডিয়ামের কথা নিশ্চয়ই শুনেছে। অনেকের জন্ম ২০০০ সালের আশপাশে তাই তাদের খেলার কথাও নয়। তবে আইকনিক স্টেডিয়াম যেহেতু, এটার গল্প নিশ্চয়ই শুনেছে। দেখুন, সাধারণত সকাল ছয়টায় ফিটনেস টেস্ট দেখতে এত মানুষের আশার কথা নয়। যেহেতু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, তাই সবাই এসেছে। সবার জন্যই দারুণ অভিজ্ঞতা এটা।‘

মুশফিকুর রহিম মজার ছলে বলেছেন, অ্যাথলেটদের মতো যেহেতু তারা দৌড়াবেন, সেহেতু তাদের জন্য পুরষ্কারের ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো হতো। বিসিবির এক কর্মকর্তাকে তিনি মজা করে জিজ্ঞেস করছিলেন, ‘পতাকা কই? পতাকা আনবেন না!’ 

;

আইপিএলে ধোনির যে রেকর্ড ভাঙলেন রাহুল



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্ণৌয়ের মাঠে গতকাল চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি হয়েছিল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। যেখানে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। লক্ষ্ণৌ ম্যাচ জিতে নিলেও চেন্নাইয়ের প্রাণ ও মধ্যমণি মহেন্দ্র সিং ধোনি বরাবরের মতোই জিতে নিয়েছেন দর্শক এবং সমর্থকদের মন।

মাঠ লক্ষ্ণৌয়ের হলেও গ্যালারির বেশিরভাগ স্থান জুড়েই ছিল হলুদের ছড়াছড়ি। কারণটা খুব স্বাভাবিকভাবেই হলো ‘ধোনি’। কালকের ম্যাচেও তিনি খেলেছেন ৯ বলে ২৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ধোনি যতক্ষণ ২২ গজে ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ততক্ষণ গগনবিদারী চিৎকারে পুরো স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে রেখেছিলো ধোনির সমর্থকরা।

ঘরের মাঠে লক্ষ্ণৌয়ের এই জয়ের দিন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ৫৩ বলে ৮২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এই ইনিংসের সঙ্গে রাহুল ছুঁয়ে ফেললেন ধোনির অনন্য এক রেকর্ডকেও।

আইপিএল ইতিহাসে উইকেটকিপার–ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি পঞ্চাশোর্ধ্ব (৫০‍+) ইনিংস খেলার রেকর্ডটি এতদিন ছিল ভারতের বিশ্বকাপজয়ী এবং চেন্নাইয়ের অধিনায়ক ধোনির দখলে। ২৫৭টি ম্যাচে ২৪ বার ন্যূনতম ৫০ রানের ইনিংস খেলেছেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। গতরাতের ৮২ রানের ইনিংসের মাধ্যমে ধোনির রেকর্ডটি নিজের নামে করে নিয়েছেন লোকেশ রাহুল। আইপিএলে উইকেটকিপার–ব্যাটার হিসেবে এটি ছিল তার ২৫তম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস।

তবে রেকর্ড ভাংলেও নিজের সিনিয়র এবং আইডলের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা ঠিকই বজায় রেখেছেন রাহুল। ম্যাচশেষে ধোনির সঙ্গে হাত মেলানোর সময় নিজের মাথা থেকে ক্যাপটা খুলে ফেলে হাতে নেন তিনি। ধোনির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্যই মূলত এই কাজটি করেছেন রাহুল। এতে এটাই বোঝা যায় যে ধোনি শুধুমাত্র জনসাধারণের প্রিয় নয়, বরং ভারত দলের খেলোয়াড়দেরও সম্মানের ও পছন্দের ব্যক্তিত্ব।

;