অগ্রাধিকারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট পেশ বৃহস্পতিবার

  সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ
  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেয়ার মূল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রস্তুত বাজেটের আকার বেড়েছে চলতি অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। যা হবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট।

বিজ্ঞাপন

এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পচ্ছে বলে অর্থবিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বিদেশি  ঋণে নেবে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

যদিও প্রকৃত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকায়। কারণ বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়াও সঞ্চপত্র থেকে নেয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ব্যাংক বর্হিভুত ঋনের পরিমাণ ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অন্যান্য উৎস থেকে পাওয়া যাবে ৮ হাজার কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে যা ছিল ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ। বরাবরের মতো এবারো বেশির ভাগ আয় করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। নন-এনবিআর থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বর্হিভূত কর আসবে আরো ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগ সুত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপির আকার করা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার রয়েছে সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। গত মাসে তা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে সাত লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটের আকার কমানো হয়েছে মূল বাজেটের থেকে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৪৭ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান আসন্ন বাজেট নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন তুলে ধরে বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনমানের যে অবনমন হয়েছে সেটা যেন আমরা বন্ধ করতে পারি। তাদেরকে সুরক্ষা দিতে পারি। শিক্ষা স্বাস্থ্যের মত খাতগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবারের বাজেটে। নতুন করে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সংযত হওয়া প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দিতে গিয়ে বাজেটের আকার বাড়ানোর দিকে নজর দিতে পারেনি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৮ লাখ কোটি টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছেন দেশের ১৮তম অর্থমন্ত্রী। যেখানে আড়াই লাখ কোটি টাকারও বেশি বাজেট ঘাটতি পূরণে দেশি-বিদেশি ঋণ নিতে হবে।

অতীতের রেকর্ড ভেঙ্গে বাজেটের প্রায় ৬৪ শতাংশ অর্থ পরিচালন ব্যয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবার। একরকম বাধ্য হয়েই আরও ১৪ শতাংশ অর্থ ব্যয় করছেন ঋণের সুদ পরিশোধে। ফলে উন্নয়ন বরাদ্দে অর্থের বরাদ্দ নেমে এসেছে ৩০ শতাংশের আশেপাশে।