সুদ পরিশোধে বরাদ্দ ১১৩৫০০ কোটি টাকা

  সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ
  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ঋণের সুদ পরিশোধে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখছে অর্থ বিভাগ। এই অর্থ বাজেটের মোট অর্থ ৭ লাখ ৯৭ কোটি টাকার মধ্যে একক ব্যয়ের খাত হিসেবে সর্বোচ্চ।

এই বরাদ্দের ৯৩ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পুরশোধে ব্যয় হবে। আর অবশিষ্ট ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা যাবে বিদেশি ঋণের সুদ বাবদ। এ হিসেবে এবারের অর্থবছরের মোট সুদ পরিশোধ ব্যয়ের প্রায় ৮২ শতাংশই ব্যয় হবে অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে।

বিজ্ঞাপন

গেল অর্থবছরের চেয়ে সামান্য বাড়িয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রনালয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে নতুন এই বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

প্রস্তাব পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুরো বাজেটের আকার মাত্র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়লেও সরকারের সুদ বাবদ ব্যয় বাড়ছে ২০ শতাংশেরও বেশি।

বিজ্ঞাপন

দেশে ও দেশের বাইরে সুদের হার বৃদ্ধি, টাকার বিনিময় হারে বড় ধরনের পতন, বিদেশি মূদ্রার রিজার্ভে সঙ্কট আর গত কয়েক বছরে বৃহৎ প্রকল্পে বেহিসাবি ব্যয়ের কারনে সুদ ব্যয় দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে সুদ বাবদ ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়িয়ে বরাদ্দ ধরা হয় এক লাখ পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে চলতি বাজেটের মূল বাজেটের তুলনায় ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ বাড়ছে সুদ ব্যয়। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ৮২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থেকে ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী অর্থবছরে দেয়া হচ্ছে ৯৩ হাজার কোটি টাকা।

বিদেশি ঋণের সুদের ব্যয় এক বছরেই প্রায় ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছে অর্থমন্ত্রনালয়।

চলতি অর্থবছরে এ খাতে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকার বরাদ্দ থাকলেও বিনিময় হারে অবনমনের কারণে সংশোধিত বাজেটে তিন হাজার ৪২৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে দেয়া হয় ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

এর সঙ্গে আরও ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা যোগ করে নতুন অর্থবছরে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে। চলতি বছরের মূল বাজেটের তুলনায় আগাম অর্থবছরে বিদেশি ঋণের সুদের বরাদ্দ ৬৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হযেছে, সরকার বেশ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে বিদেশি ঋণ বেশি নিতে হয়েছে এবং সেগুলোর বিপরীতে বেশি সুদ দিতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত কয়েক বছরে বাজেট বাস্তবায়নের নামে সরকারের ব্যয় অযাচিতভাবে অনেক বাড়ানো হয়েছে।

ঋণ করে ব্যয় করার দায পরিশোধ করতে এখন সুদ বাবদ ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হার বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ফ্লটিং সুদে নেয়া ঋণের দায়ও বাড়ছে।

বর্তমান বাস্তবতায় সুদ বাবদ প্রস্তাবিত বরাদ্দে দায পরিশোধ সম্ভব হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, টাকার মানের অবনমন হলে সরকারের সুদ ব্যয় আরও বাড়বে।