ডায়বেটিস রোগীরা ভাত খেতে পারবেন যেভাবে
ডায়বেটিস বর্তমানে সময়ে খুবই আশঙ্কাজনক একটি সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। ডায়বেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা সারা বিশ্ব জুড়েই বেড়ে চলেছে। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভাত না খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে সমস্যায় পড়েন ভাত-প্রেমীরা।
বাঙালিদের সাধারণত ভাত না হলে চলেই না! প্রবাদেই রয়েছে মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই ভাত না খেলে অনেকেরই তৃপ্তি হয় না। কিন্তু ডায়বেটিস আছে যাদের, তাদের ভাত খাওয়ার কোনো উপায় নেই। তবে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করলে, ডায়বেটিসে আক্রান্তরাও নিশ্চিন্তে ভাত খেতে পারবেন। এমনটিই জানিয়েছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।’
ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান সুইডাল ত্রিনিদাদ গণমাধ্যমটির একটি প্রতিবেদনে জানান, ‘ ভাতের সঙ্গে সামান্য ঘি মিশিয়ে নিলে ডায়বেটিস রোগীরা উপকার পাবেন। ঘি এর মধ্যে উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা শর্করা হজমের ক্ষমতাকে ধীর করে ফেলে। এছাড়া রক্তে হঠাৎ করে চিনি মাত্রা বেড়ে ওঠোও প্রতিহত করতে পারে। তাছাড়া ঘি যোগ করার মাধ্যমে ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমিয়ে আনা যায়।’
এই প্রসঙ্গে ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান জি. সুষমা বলেন, ‘চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন অর্থাৎ ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে রয়েছে ঘি-তে। ভাতের সাতে ঘি খেলে অন্যান্য খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ মাত্রাকে প্রভঅবিত করতে পারে। ঘিয়ের মধ্যে বাটিরেট থাকে। এটি হলো এমন একটি শর্ট চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড যা অন্ত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিপাকীয় ক্রিয়াতেও বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে পরোক্ষভাবে রক্তের শর্করার পরিমাণের উপর প্রভাব পড়ে।
তবে বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন,‘ এই সমাধান সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। বিশেষ করে যাদের রক্তে শর্করা অনিয়ন্ত্রিত তাদের ঘি খাওয়া উচিত নয়। কারণ, ঘি‘য়ের মধ্যে থাকার স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ মাত্রাকে আরও অনিয়ন্ত্রিত করে ফেলতে পারে। এছাড়াও, যাদের হৃদরোগও রয়েছে তাদের জন্যও ঘি খাওয়া সমাধান সুবিধাজনক নয়।’
‘ এছাড়া ক্যালরির পরিমাণ বাড়া, ওজন নিয়ন্ত্রণে বাধা ইত্যাদি আরও বাড়তি সমস্যা যোগ হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে প্রতিদিন ঘি খেলে। দুগ্দজাত খাবারে যাদের এলার্জি আছে তাদেরও ঘি খাওয়া উচিত নয়। ঘি উপকারী একটি খাবার বটে। তাই বলে, বাধছাড়া নিয়মেও ঘি খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে ঘি খাওয়া উপকারী। মাত্রাতিরিক্ত খেলে নানান রোগ বাসা বাধতে পারে। আধা কাপ ভাতের সাথে ১ চা চামচ এর বেশি ঘি খাওয়া উচিত নয়। তবে ডায়বেটিস রোগীরা কেবল ভাতের সাথে ঘি খেলেই চলবে না, নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে হবে।’