করোনাভাইরাস: মুখে হাত না দেওয়াই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ!
করোনা ভাইরাসবিশ্বজুড়ে আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস এখন দেশেও তার উপস্থিতি জানান দেওয়া শুরু করেছে। এই ভাইরাস প্রতিরোধে হাত পরিষ্কার রাখা, মাস্ক ব্যবহার করা এবং মুখে হাত না দেওয়ার মতো পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মুখে হাত না দেওয়ার বিষয়টি কতটা কঠিন?
চলুন এ সম্পর্কিত একটি গবেষণার ফল তুলে ধরা যাক। ২০১৫ সালে সিডনি ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল ছাত্রদের একটি ভিডিওর মাধ্যমে রেকর্ড করে, তারা সারাদিনে কতবার হাতের সাহায্যে মুখে স্পর্শ করে সেটা জানার জন্য। দেখা গেছে ২৬ জন ছাত্র প্রতি ঘন্টায় ২৩ বার নানা কারণে মুখে হাতের সাহায্যে স্পর্শ করেছে। যার মাঝে ৪৪ শতাংশ সময়েই হাতের সাহায্যে সরাসরি চোখ, নাক ও মুখে স্পর্শ করেছে তারা।
এ থেকেই খুব স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায়, হাতের সাহায্যে মুখে স্পর্শ না করার বিষয়টিকে যতটা সহজ মনে করা হচ্ছে, আদতে সেটা নয়। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, হাতের একটি মাত্র স্পর্শের মাধ্যমেই অগোচরে চোখ, নাক ও মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে ভয়ানক করোনাভাইরাস।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ইনফেকশাস ডিজিজ স্পেশালিস্ট ডঃ ডন মুয়েনি বেকার বলেন, ‘শ্বাসযন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তারকারী ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে মিউকোসাল মেমব্রেন্স (Mucosal Membranes) এর সাহায্যে। যা নাক, মুখের ভেতরের অংশ ও ঠোঁটে পাওয়া যায়। অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে ভাইরাল এই ইনফেকশন সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
খেয়াল করে দেখুন, অজান্তেই আমরা নানা কারণে প্রতিদিন অসংখ্যবার হাতের সাহায্যে মুখে, চোখে স্পর্শ করি। পূর্বে এই অভ্যাসটি সম্পর্কে আমরা সেভাবে সচেতন ছিলাম না, কারণ এটা তখন জীবনমরণ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়নি।
কীভাবে মুখে হাত দেওয়ার অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে?
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধে যে সকল নিয়ম মেনে চলার উপর জোর দেওয়া হয়েছে, মুখে হাতের স্পর্শ থেকে বিরত থাকা তার মাঝে অন্যতম। বলা যেতে পারে, এটাই প্রধান একটি নিয়ম যা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।
কিন্তু এতোদিনের অভ্যাস কি একদিনেই পরিবর্তন করা সম্ভব? অসম্ভব না হলেও কিছুটা কঠিন বটে। তবে এক্ষেত্রে কৌশল ব্যবহার করতে হবে, যা মুখে হাতের স্পর্শ থেকে প্রতিহত করতে সাহায্য করবে।
চিন্তা করতে হবে সারাদিন হাতের সাহায্যে কী কী বস্তু ধরা হয়েছে। দরজা-জানালার হ্যান্ডেল, চাবির রিং, মোবাইল ফোন, লিফটের বাটনসহ বহুজনের স্পর্শ পাওয়া এই সকল জিনিস যদি আপনিও ব্যবহার করে থাকেন তবে চিন্তা করুন, এর মাধ্যমে বহু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস আপনার হাতে চলে এসেছে। ফলে হাতকে মুখের কাছ থেকে দূরে রাখার বিষয়টি মাথায় নিজ থেকে কাজ করা শুরু করবে। যা মুখের আশপাশ থেকে হাতকে দূরে রাখবে।