জিতে গেল বাংলাদেশ
‘স্বপ্ন ছুঁয়েছে’ পদ্মার এপার-ওপারঅপেক্ষার প্রহর শেষ। স্বপ্ন এখন বাস্তব। সমালোচক আর ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে ছাঁই ঢেলে দিয়ে নির্মাণ হয়ে গেল পদ্মা সেতু। এই পদ্মা সেতু নির্মাণের পিছনে রয়েছে এক আত্নপ্রত্যায়ী মহিয়সী নারীর দৃঢ় সাহসিকতার গল্প। সেই গল্প যেন রুপকথার মতো। দেখতে দেখতে কেটে গেল কয়েকটি বছর। তারপর অবশেষে গল্প হলো সত্য।
দেশী-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সমালোচনার মুখে যখন পদ্মা সেতু নির্মাণ অবাস্তব সেই সময়েও নিজের জায়গা থেকে দৃঢ় সাহসিকতা আর মনোবল নিয়ে অটুট ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা। কড়া সমালোচনার মধ্যেই তিনি ঘোষণা দিলেন ‘ নিজস্ব অর্থায়নেই হবে পদ্মা সেতু’। হয়েছেও তাও। সব কিছু পিছনে ফেলে সগৌরবে মাথা উচুঁ করে খরস্রোতা পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে আছে কোটি মানুষের স্বপ্ন। হেরে গিয়েছে ওরা; জিতেছে বাংলাদেশ।
একটি সেতুকে কেন্দ্র করে যত আলোচনা-সমালোচনা হলো পৃথিবীতে অন্য আর কোন সেতু নিয়ে এতো আলোচনা হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। একটি গোষ্ঠি স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র আর মিথ্যাচার করে আসছিল। কিন্তু তাদের সেই মিথ্যাচার আজ ধরা পড়েছে। তারা এখন কোটি কোটি বাঙালির কাছে ঘৃণার পাত্র।
ষঢ়যন্ত্রকারীরা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্নবিশ্বাস পাহাড় সমান। ঠুনকো অভিযোগে শেখ হাসিনাকে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। শত বাধা-বিপত্তি আর প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও দৃঢ় সাহসিকতার সাথে নিজেকে অটল রেখেছিলেন পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে। সব কিছু ভেদ করে এখন বিজয়ের হাতছানি দিচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বিশ্বকে জানান দেওয়া হচ্ছে বাঙলির সক্ষমতার কথা। বাঙালি জাতি মাথা নত করার নয় সেটা আবারও পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিলেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
দুর্নীতি চেষ্টার ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া, রাজনৈতিক মতভেদ, গুজব, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এখন মাথা উচুঁ করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম সেতু। এই সেতুই প্রমাণ করে দেয় বাঙালিরা কখনো হারতে জানেনা। বাঙালিদের ইতিহাস সমৃদ্ধে ভরা গৌরবের ইতিহাস। বাঙালি ও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে নতুন এক সফল সংগ্রামের নাম।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ এই পদ্মা সেতু নির্মাণ করে শেখ হাসিনা বিশ্বকে জানিয়ে দিলেন আমাদের সক্ষতার কথা। এই সেতুর উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণকে ঘিরে এখন দেশে চলছে আনন্দের বন্যা। দেশ জুড়ে চলছে উৎসব। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হচ্ছে খুবই জমকালো। সারা দেশের মানুষ যাতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পারেন সেজন্য দেশের প্রতিটি জেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রিয় শিক্ষার্থীদেরও দেখানো হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সারা বিশ্বের আজ চোখ থাকবে বাংলাদেশে। তারা দেখবে বাংলাদেশের নতুন জয়ের জমকালো চোখ ধাঁধাঁনো মহাযজ্ঞ।