খুলে গেল স্বপ্ন সেতুর দ্বার, নবযুগের ‘টার্নিং পয়েন্টে’ বাংলাদেশ
‘স্বপ্ন ছুঁয়েছে’ পদ্মার এপার-ওপারবাংলার, বাঙালির ইতিহাসে যুক্ত হলো লাল হরফের গৌরবময় দিন। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে নবযুগের 'টার্নিং পয়েন্ট' স্পর্শ করলো বাংলাদেশ। পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক যাত্রারথে সংযোগ, গতি, উন্নয়ন, জনমৈত্রী আর বাঙালির ক্ষমতায়নের শিখরস্পর্শী প্রত্যাশা খুঁজে পেলো বাস্তবের দিশা।
শনিবার (২৫ জুন) প্রমত্তা নদীর সেতুবন্ধনে লক্ষ-কোটি মানুষের হর্ষ ও আনন্দধ্বনিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু।
ঘড়িতে যখন ১২টা, মাওয়া পয়েন্টে একজন যাত্রী হিসেবে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে মাওয়া পয়েন্টে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন।
তিনি সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে মাওয়া পয়েন্টে পৌঁছান। সেখানে তিনি সুধী সমাবেশে যোগ দেন কর্মসূচিতে যোগ দেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে খুলে গেলো স্বপ্নের দ্বার। পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহু যুগের লালিত স্বপ্ন। সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী আরেকবার জানল বাংলাদেশের অহং, আবেগ ও আভিজাত্যের জৌলুশ।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটি কোটি দেশবাসীর সঙ্গে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত এবং উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্তা পদ্মার বুকে আজ বহু-কাঙ্ক্ষিত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এই সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহার কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয় এ সেতু আমাদের অহঙ্কার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের।
শেখ হাসিনা বলেন, তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের ভাষায় তাই বলতে চাই: সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়ঃ জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।
মাওয়া প্রান্তের ফলক উন্মোচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল ২-এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন।
এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী-সমাবেশে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে যাবেন। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন। আওয়ামী লীগ এ জনসভায় ১০ লাখ লোক জমায়েত করার ঘোষণা দিয়েছেন। জনসভায় যোগদান শেষে জাজিরা প্রান্তের সার্ভিস এরিয়া-২ তে যাবেন। সেখান থেকে তিনি হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরে আসবেন।