বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু

রাজবাড়ীতে বাড়ির আঙিনায় বাঁশের মাচায় ঝুলছে রঙিন আঙুর



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
লাল, সবুজ, হলুদ রঙের রাশিয়ান মিষ্টি জাতের গোল আঙুর, ছবি: বার্তা২৪.কম

লাল, সবুজ, হলুদ রঙের রাশিয়ান মিষ্টি জাতের গোল আঙুর, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাড়ির আঙিনায় বাঁশের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল, সবুজ, হলুদ রঙের রাশিয়ান মিষ্টি জাতের গোল আঙুর। চলতি পথে বাড়ির আঙিনায় রঙিন এসব ফল নজর কাড়ছে পথচারীদের। কৃষি উদ্যোক্তা সরোয়ারের চোখেও দেখা দিয়েছে এক রঙিন স্বপ্ন।

সরোয়ার সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের চর বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা। রাজবাড়ী জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বাড়ির আঙিনায় ২ শতাংশ জমির ওপর আঙুর চাষ করে সফল হয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

জানা যায়, জেলার ভৌগোলিক অবস্থান, আবহাওয়া ও মাটির বৈশিষ্ট্য না জেনেই শুধুমাত্র ইউটিউব দেখে শখের বসে আঙুর চাষে আগ্রহী হন সরোয়ার। প্রথমে গাছ সংগ্রহ করে ইউটিউব দেখে নিয়মকানুন জেনে বাড়ির আঙিনায় ২ শতাংশ জমিতে শুরু করেন চাষাবাদ। পরিবার ও আশেপাশের অনেকেই তাকে নিরুৎসাহিত করেছিলেন। তবে তিনি থেমে যাননি। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক একটি গাছ থেকেই পেয়েছেন প্রায় দেড় মণ মিষ্টি আঙুর।

কৃষি উদ্যোক্তা সরোয়ার 

এখন উদ্যোক্তা সরোয়ার হোসেন বিশ্বাসের সংগ্রহে রয়েছে ৬টি জাতের পাশাপাশি ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে আনা ১২টি জাত । এ সব গাছ সংগ্রহ করে এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে নিজের ৭০ শতাংশ জমি আঙুর চাষের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সরোয়ার বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বসতবাড়িতে ঢোকার প্রধান ফটকেই আঙুর গাছের বাঁশের মাচা। মাচার দিকে তাকালেই চোখে পড়ে বাহারি রঙের আঙুর ফল থোকায় থোকায় গাছের ডালে ডালে ঝুলছে। সরোয়ার একটি স্টিলের মইয়ে উঠে তার আঙুর গাছের পরিচর্যা করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা সরোয়ারের আঙুর গাছ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, কম পরিশ্রম ও কম খরচে লাভজনক হওয়ায় আঙুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। আঙুর চাষে বাড়তি কোনো খরচ নেই। জৈব সার প্রয়োগের পাশাপাশি সঠিক পরিচর্যায় একটি গাছে ৪০ থেকে ৫০ বছর ফলন পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া বছরে একটি গাছে ৩ বার ফল আসে। প্রতিটি গাছে দেড় থেকে ২ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।


সরোয়ার বিশ্বাস জানান, তার ছাত্র জীবনে আঙুর ফলের প্রতি একটা লোভ ছিল। ১৯৯৪ সালে রাজবাড়ী বিসিকের একটি নার্সারি থেকে আঙুর ফলের চারা এনে বাড়িতে লাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই আঙুর ফল ছিল টক। সেই থেকে তার ইচ্ছা জাগে কিভাবে মিষ্টি আঙুর চাষ করা যায়। কিভাবে মিষ্টি আঙুরের চারা পাওয়া যায়। সেটা খুঁজতে থাকেন। গত বছর ইউটিউবে কুড়িগ্রাম জেলার আঙুরের একটি ভিডিও দেখেছিলেন। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করে সেখান থেকে একটি চারা নিয়ে এসে বাড়িতে লাগান। চারা লাগানোর ৮ মাস পর তিনি ফলন পান। ওই গাছে প্রায় ৫ কেজি আঙুর ধরেছিল এবং আঙুর ফলটি খুব মিষ্টি ছিল।

এবার তিনি ওই গাছ থেকে প্রায় দেড় মণের মতো আঙুর ফল পেয়েছেন।এ খন তিনি চিন্তা ভাবনা করছেন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার। ইতিমধ্যে তিনি ৭০ শতাংশ জমি প্রস্তুত করেছেন। ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে এরই মধ্যে তিনি ১২টা জাতের চারা এনেছেন। বর্তমানে তার ওখানে ৬টি জাতের চারা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, পৃথিবীতে মোট ৫২টির ওপরে আঙুরের জাত রয়েছে। এর মধ্যে যেগুলো সর্বসেরা সেগুলো তিনি সংগ্রহ করেছেন। তার সংগ্রহে রয়েছে ইতালির দুইটি জাত, রাশিয়ার ৬টি জাত ও বাকিগুলো ভারতের। তিনি পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করে সফল হবার পর এখন বাণিজ্যিকে চলে আসবেন। করোনার সময় যখন বেকার হয়ে ঘরে বসে ছিলেন তখন ইউটিউব দেখে মাল্টা ও কমলা চাষ করেও তিনি সফল হয়েছেন। প্রায় ১০ বিঘা জমির ওপর তার মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে।


সরোয়ার বিশ্বাসের বড় ভাই আজিজুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আমার ছোট ভাই ইউটিউব দেখে মাল্টা ও কমলা চাষে সফল হবার পর এবার আঙুর ফল পরীক্ষামূলক চাষ করে সেখানেও সফল হয়েছে। এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবেন। তার গাছে ধরা আঙুর বাজারের আঙুরের থেকেও মিষ্টি ও সুস্বাদু। প্রতিটি থোকায় ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম আঙুর ধরেছে। আমার ছোট ভাইয়ের আঙুর ফলের বাগান দেখতে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় করছেন।

বিমানের টিকেটে অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ চায় সংসদীয় কমিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সেবার, টিকিটের মূল্য অনিয়ম প্রক্রিয়া বন্ধকরণের নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমানের ফ্লাইট সিডিউলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং মানোন্নয়নে কার্যক্রম বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৪র্থ বৈঠকে এই রিপোর্ট জানতে চেয়েছে। বৈঠক কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, আনোয়ার হোসেন খান, আশেক উল্লাহ রফিক, শেখ তন্ময়, মাহমুদ হাসান ও মো. খসরু চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী জনবল কাঠামো, অনুমোদিত জনবল, শূন্য পদের বিবরণ ও নিয়োগ কার্যক্রম, আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের বিধি বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়।

এসময় স্থায়ী কমিটি বিমানের যেসব ভূমি বা ভূসম্পত্তি অব্যবহৃত রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। পাশাপাশি যে সমস্ত এয়ারক্রাফটের ত্রুটি আছে তা শনাক্ত করে ত্রুটি অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করা হয়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর পর অপচিকিৎসায় প্রসূতি নাজমুন নাহার (২৫) মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত প্রসূতি জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের উত্তর চরভুতেরদিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের ব্রানদিয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের মেয়ে।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) দুপুরে মৃত নাজমুন নাহারের ননদ আছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বুধবার (০৩ জুলাই) দুপুরে পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার সরিকল বন্দরস্থ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টক সেন্টারে তার ভাবির সিজারিয়ান অপারেশন হয়। সিজারের পর নবজাতকের মৃত্যুর খবর জানায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এসময় কর্তৃপক্ষ জানায় প্রসূতি সুস্থ আছে। পরবর্তীতে নাজমুন নাহার অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে বরিশাল আরিফ মেমোরিয়ালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। এরপর শেবাচিমে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে (নাজমুন) মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আছমা বেগম অভিযোগ করেন, ‘হেলথ কেয়ারে বসেই নাজমুন নাহারের অবস্থা খারাপ ছিল। তারা একবার বলে তিন ব্যাগ রক্ত লাগবে। আরেকবার বলে পাঁচ ব্যাগ লাগবে। এরপর বলে আপনারা রোগী এখান থেকে নিয়ে যান। মূলত হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে বসেই ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকসহ নাজমুন নাহারের মৃত্যু হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে সিজারকারী ডা. মুসলিমা জাহান অসি’র মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে ক্লিনিকের শুভাকাঙ্খী পরিচয় দিয়ে সুমন হোসেন নামের এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে ভর্তি করতে চায়নি। তার স্বজনদের অনুরোধে ভর্তির পর সিজার করা হয়েছে। এখানে ভুল চিকিৎসার কোনো ঘটনা ঘটেনি দাবি করে সংবাদটি প্রচার না করতে অনুরোধ করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;

সিলেটে কুশিয়ারা আতঙ্ক!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬ পয়েন্টের পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে। তবে আতঙ্ক বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জে।

কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে পানি প্রবেশ করছে এসব উপজেলায়। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ওই উপজেলার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টা পর থেকে বৃষ্টি হয়নি। তবে দুপুরের দিকে আকাশে কখনো রোদ কখনো মেঘে ঢাকা পড়েছে। বিকাল ৫টার দিকে সিলেটে বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত দুই দিন ধরে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে অনেক এলাকা থেকে পানি কিছুটা নেমে গেছে। কিন্তু কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙছে বাঁধ।

জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৪-৫টি স্থানে কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৭৩টি গ্রাম। প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও। সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিয়ানীবাজার -চন্দরপুর বৃষ্টির পানি আর ঢলে কুশিয়ারা নদীর ডাইক অতিক্রম করে পানি ডুকছে লোকালয়ে। কুশিয়ারা নদীর পানিতে বালাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্লাবিত। ৬টি ইউনিয়ের বন্যাক্রান্ত মানুষের জন্য খোলা হয়েছে ৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। বালাগঞ্জের প্রধান সড়কে হাঁটুর উপরে পানি। উপজেলা পরিষদ, বালাগঞ্জ থানা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন ও এলজিইডি সড়ক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাজারসহ নিচু এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যেই পানি ঢুকে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া কুশিয়ারার পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১৫২ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৭সে.মি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে পানি ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৬টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত। ১ হাজার ১৬০টি গ্রামের ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। জেলার ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ২৩৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, গত কয়েকদিন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হয়নি। সিলেটের নদীগুলো পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় উজানের পানি ধীরগতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। চলমান বন্যায় সিলেটের ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মেরামতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তবে বন্যার পানি পুরোপুরি না নামলে এসব বাঁধের কাজ করা যাবে না।

বালাগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, বালাগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সময়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণও প্লাবিত। উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয়ণের জন্য। এ পর্যন্ত চলমান বন্যায় প্রায় ১৩১ মেট্রিক টন চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানবৃন্দকে দেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ, শুকনো খাবার ৯৫০ প্যাকেটসহ শিশু খাদ্য, গোখাদ্য দেওয়া হয়েছে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বন্যার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসনিম জানান, প্রথম দফায় বন্যার পানিতে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভাঙে এখন সেগুলোর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের ৭৩টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে পানি উঠেছে সেগুলো থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি।

;

বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে বলে জানা গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদনদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে এবং টাঙ্গাইল জেলার কিছু পয়েন্টে পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদী-নদীগুলির পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, কুশিয়ারা ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য প্রধান প্রধান নদীগুলির পানি সমতল সার্বিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীগুলির পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা ও দুধকুমার নদীগুলির পানি সমতল কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং সেইসঙ্গে ধরলা ও ঘাঘট নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনার নদীগুলির পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

;