নড়বড়ে বাঁশের খুঁটি, ওপরে পলিথিনের ছাউনিতে চলছে জীবন



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পলিথিনের ছাউনিতে তারা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পলিথিনের ছাউনিতে তারা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চার কোণায় বাঁশের নড়বড়ে খুঁটি, ওপরে পলিথিনের ছাউনি। এক খাটে শুয়ে আছেন ১০-১২ জন। সারা রাত বৃষ্টিতে ভিজে কাটালেও জুটেনি রাতের খাবার। সকালে একবেলা খিচুড়ি জুটলেও, আরেকবেলার খোঁজ নেই। কাটাতে হয়েছে পানি খেয়ে। এখানে পলিথিন টানিয়ে আছে ৭ পরিবার। সবার অবস্থা প্রায় একই। রাতদিন বৃষ্টিতে ভিজে অপেক্ষায় আছে কখন কেউ খাবার নিয়ে আসবে; কিন্তু অপেক্ষা শুধু অপেক্ষায় থেকে যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বসতভিটা হারিয়ে এখন রাস্তার পাশে খোলা মাঠে পলিথিন টানিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেক অসহায় পরিবার। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে সারারাত ছেলে মেয়েকে নিয়ে রাত জেগে চলছে তাদের জীবন। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে খাবারের কষ্ট।

তেমনি একজন আফরোজা। মেয়ে মরিয়মকে কোলে নিয়ে বৃষ্টিভেজা দিনে বসে ছিলেন তিনি। চোখের দিকে তাকালে বোঝা যাচ্ছে গত রাতে ঘুম হয়নি তার। বসতভিটার সঙ্গে হারিয়েছেন খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, বিশ্রাম সবই। এভাবে চলছে তাদের জীবনযাপন।

উচ্ছেদ অভিযানে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব তারা

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, সারারাত চোখ বোজা হয়নি। মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে আছি। মেয়ে একটু ঘুমালেও বৃষ্টির পানি পড়ে আবার জেগে গেছে সে। কী করবো, আমাদের যে আর যাওয়ার জায়গা নেই। যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। এভাবে বৃষ্টিতে ভিজে, না খেয়ে থাকার চেয়ে আমাদের মরে যাওয়ায় ভালো।

শুধু আফরোজার মেয়ে মরিয়ম নয়, তার মতো জেসমিন, রাবেয়া, পারুল, খাদেজাও এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরনে ভেজা জামা-কাপড়। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এভাবে আছেন তারা।

সাতক্ষীরা সড়ক জনপথ বিভাগের উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের একমাত্র বসবাসের ঘরটি। শেষ সম্বল হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছে শহরের ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির পাশে খোলা মাঠের এক কোণে। ঝড়, বৃষ্টি, প্রখর রোদে খেলার মাঠের এক কোণে পলিথিনের ছাউনিতে কাটছে অভাবি মানুষগুলোর জীবন।

তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাই আমাদের কষ্টের কথা বলে আর কি হবে? যা কেড়ে নেওয়ার তা কেড়ে নিয়েছে, এই কষ্ট কেউ দেখবে না। এই যে রাস্তার পাশে বৃষ্টিতে ভিজে এখানে আছি কাল থেকে। এখন পর্যন্ত কেউ খাবার দেওয়া তো দূরে থাক দেখতে পর্যন্ত আসেনি। আমাদের যে বসতভিটা কেড়ে নিল, ভালো কথা, কিন্তু কোনো উপায় তো দেখাবে যে, আমরা ওখানে গিয়ে থাকবো, ওখানে খাবো। এই ছোট-ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে কীভাবে আছি আমরা জানি। আমাদের কষ্ট কেউ দেখবে না। আমরা তো মানুষ না। এভাবে বলছিলেন তারা, আর চোখের পানি নীরবে পড়ছিল।

শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন

মাঠের এক কোণে মুড়ি খাচ্ছিলেন আজগর আলী। মুড়ি খেতে খেতে বার্তা২৪.কমকে বলেন, সারারাত কিছু খাইনি। কেবল দোকান থেকে শুকনা খাবার নিয়ে আসলাম। সবকিছু কেড়ে নিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছে তো কি হয়েছে, সবাই মিলে একসাথে আছি, এটাই ভালো লাগছে।

তিনি জানান, ১৫ বছর ধরে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে এখানে বসবাস করছেন। কিন্তু এবার সড়ক জনপথ বিভাগ আমাদের পথে বসিয়ে দিয়েছে। পরিবারের ১৩ জন সদস্য এখন কে যে কোথায় থাকবে, এটাও বলতে পাড়ছি না।

উল্লেখ্য, সোমবার (১ জুলাই) থেকে সাতক্ষীরা সরকারি খাস জমির ওপর গড়ে ওঠা বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে সাতক্ষীরা সড়ক জনপথ বিভাগ। অভিযানে গ্যারেজ, কলেজের গেট, বাসাবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙা পড়েছে। এই উচ্ছেদে ভেঙে ফেলা হয়েছে অনেকের একমাত্র বসবাসের ঘরটিও।

খুলনা সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ানুর রহমানের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত অভিযান শুরু হয়, যা এখনও চলমান।

বিমানের টিকেটে অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ চায় সংসদীয় কমিটি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সেবার, টিকিটের মূল্য অনিয়ম প্রক্রিয়া বন্ধকরণের নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমানের ফ্লাইট সিডিউলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং মানোন্নয়নে কার্যক্রম বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৪র্থ বৈঠকে এই রিপোর্ট জানতে চেয়েছে। বৈঠক কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, আনোয়ার হোসেন খান, আশেক উল্লাহ রফিক, শেখ তন্ময়, মাহমুদ হাসান ও মো. খসরু চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড এর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী জনবল কাঠামো, অনুমোদিত জনবল, শূন্য পদের বিবরণ ও নিয়োগ কার্যক্রম, আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের বিধি বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়।

এসময় স্থায়ী কমিটি বিমানের যেসব ভূমি বা ভূসম্পত্তি অব্যবহৃত রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। পাশাপাশি যে সমস্ত এয়ারক্রাফটের ত্রুটি আছে তা শনাক্ত করে ত্রুটি অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করা হয়।

সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিজারিয়ান অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর পর অপচিকিৎসায় প্রসূতি নাজমুন নাহার (২৫) মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত প্রসূতি জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের উত্তর চরভুতেরদিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের ব্রানদিয়া গ্রামের শাহজাহান হাওলাদারের মেয়ে।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) দুপুরে মৃত নাজমুন নাহারের ননদ আছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বুধবার (০৩ জুলাই) দুপুরে পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার সরিকল বন্দরস্থ হেলথ কেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টক সেন্টারে তার ভাবির সিজারিয়ান অপারেশন হয়। সিজারের পর নবজাতকের মৃত্যুর খবর জানায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এসময় কর্তৃপক্ষ জানায় প্রসূতি সুস্থ আছে। পরবর্তীতে নাজমুন নাহার অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে বরিশাল আরিফ মেমোরিয়ালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। এরপর শেবাচিমে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে (নাজমুন) মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আছমা বেগম অভিযোগ করেন, ‘হেলথ কেয়ারে বসেই নাজমুন নাহারের অবস্থা খারাপ ছিল। তারা একবার বলে তিন ব্যাগ রক্ত লাগবে। আরেকবার বলে পাঁচ ব্যাগ লাগবে। এরপর বলে আপনারা রোগী এখান থেকে নিয়ে যান। মূলত হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে বসেই ভুল চিকিৎসার কারণে নবজাতকসহ নাজমুন নাহারের মৃত্যু হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে সিজারকারী ডা. মুসলিমা জাহান অসি’র মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে ক্লিনিকের শুভাকাঙ্খী পরিচয় দিয়ে সুমন হোসেন নামের এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানান, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে ভর্তি করতে চায়নি। তার স্বজনদের অনুরোধে ভর্তির পর সিজার করা হয়েছে। এখানে ভুল চিকিৎসার কোনো ঘটনা ঘটেনি দাবি করে সংবাদটি প্রচার না করতে অনুরোধ করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;

সিলেটে কুশিয়ারা আতঙ্ক!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

সিলেটে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬ পয়েন্টের পানি এখনও বিপৎসীমার ওপরে। তবে আতঙ্ক বাড়ছে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জে।

কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে পানি প্রবেশ করছে এসব উপজেলায়। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ওই উপজেলার মানুষ।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৮টা পর থেকে বৃষ্টি হয়নি। তবে দুপুরের দিকে আকাশে কখনো রোদ কখনো মেঘে ঢাকা পড়েছে। বিকাল ৫টার দিকে সিলেটে বেশ কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত দুই দিন ধরে সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে অনেক এলাকা থেকে পানি কিছুটা নেমে গেছে। কিন্তু কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙছে বাঁধ।

জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তত ৪-৫টি স্থানে কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ৭৩টি গ্রাম। প্লাবিত হয়েছে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রও। সিলেট-বিয়ানীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কসহ বিয়ানীবাজার -চন্দরপুর বৃষ্টির পানি আর ঢলে কুশিয়ারা নদীর ডাইক অতিক্রম করে পানি ডুকছে লোকালয়ে। কুশিয়ারা নদীর পানিতে বালাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্লাবিত। ৬টি ইউনিয়ের বন্যাক্রান্ত মানুষের জন্য খোলা হয়েছে ৪৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। বালাগঞ্জের প্রধান সড়কে হাঁটুর উপরে পানি। উপজেলা পরিষদ, বালাগঞ্জ থানা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন ও এলজিইডি সড়ক ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাজারসহ নিচু এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যেই পানি ঢুকে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া কুশিয়ারার পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১৫২ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৭সে.মি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে পানি ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলার ১৩ উপজেলায় ৯৬টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত। ১ হাজার ১৬০টি গ্রামের ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৯৩ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। জেলার ৬৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ২৩৪ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান, গত কয়েকদিন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হয়নি। সিলেটের নদীগুলো পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় উজানের পানি ধীরগতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। চলমান বন্যায় সিলেটের ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মেরামতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তবে বন্যার পানি পুরোপুরি না নামলে এসব বাঁধের কাজ করা যাবে না।

বালাগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, বালাগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সময়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণও প্লাবিত। উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে আশ্রয়ণের জন্য। এ পর্যন্ত চলমান বন্যায় প্রায় ১৩১ মেট্রিক টন চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানবৃন্দকে দেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ, শুকনো খাবার ৯৫০ প্যাকেটসহ শিশু খাদ্য, গোখাদ্য দেওয়া হয়েছে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বন্যার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসনিম জানান, প্রথম দফায় বন্যার পানিতে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভাঙে এখন সেগুলোর ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের ৭৩টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে পানি উঠেছে সেগুলো থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি।

;

বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে বলে জানা গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদনদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে এবং টাঙ্গাইল জেলার কিছু পয়েন্টে পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদী-নদীগুলির পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, কুশিয়ারা ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য প্রধান প্রধান নদীগুলির পানি সমতল সার্বিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীগুলির পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা ও দুধকুমার নদীগুলির পানি সমতল কিছু পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং সেইসঙ্গে ধরলা ও ঘাঘট নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতি-যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনার নদীগুলির পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

;