কারাগারের অন্ধ কুঠুরিতে মনির সন্তান, ভবিষ্যৎ কী?

নুসরাত হত্যা

  নুসরাত হত্যা


শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কামরুন নাহার মনি, নুসরাত হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ‘নুসরাত কিলিংমিশনে’ অংশ নেন। নুসরাত হত্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর কারাগারেই ঠাঁই হয় অন্তঃসত্ত্বা মনির। এরপর তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। গত ২৪ অক্টোবর কন্যা সন্তান কোলে নিয়ে আদালতে ফাঁসির রায় শুনেছেন নুসরাত হত্যার অন্যতম এই আসামি। শুধু নিজেই এই রায় শোনেননি, রায় শুনেছেন তার এক মাস বয়সী নবজাতকও।

গত ২০ সেপ্টেম্বর মনির প্রসববেদনা উঠলে কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় ফেনী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কন্যা সন্তানের মা হন মনি। হাসপাতালে দুইদিন বাবা-মাসহ পরিবারের সান্নিধ্য পায় শিশুটি। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গে কারাগারের অন্ধ কুঠুরিতে দিন কাটছে শিশুটির।

শিশুটির নাম রাখা হয় মোবাশিরা খানম রথি। মনির স্বামীর দাবি, নুসরাত জাহান রাফির নামানুসারে তার নাম রাখা হয়েছে। যদিও মনি তার মেয়েকে ডাকেন ‘রোজা’ নামে।

নুসরাত হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মনির শিশু সন্তান 

নুসরাত হত্যায় মনির ভূমিকা সম্পর্কে পিআইবি‘র তদন্তে জানা যায়, মনি হত্যার জন্য বোরকা ও হাতমোজা কেনেন। ঘটনার সময় নুসরাতের হাত বাঁধেন এবং চেপে ধরেন।

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্তার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজাও শুনেছেন। জেল বিধি ৯৯৪ অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত স্ত্রীলোককে গর্ভবতী বা দুগ্ধপোষ্য অবস্থায় পাওয়া গেলে হাইকোর্টবিভাগ দণ্ড স্থগিতের আদেশ দিতে পারেন। অথবা উপযুক্ত মনে করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারবেন। তবে মনি নবজাতকের মা হিসেবে আপিল বিভাগের রায়ে কতটা সুবিধা পাবেন তা সময়ই বলে দেবে।

তবে নিজের ‘অনিশ্চিত জীবনের সঙ্গে সন্তানকে জড়াতে’ চান না মনি। চান না, কারা দেয়ালের ভেতরে বন্দী অবস্থায় বেড়ে উঠুক তার মেয়ে। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে- কারা ফটকে দেখা করতে গেলে মনি তার পরিবারকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকে মেয়েটা তার বাবা ও পরিবার কিছুই পেল না। আমার কারণে মেয়েটি পরিবার থেকে আজ বিচ্ছিন্ন। আমি ওকে কারাগারে রাখতে চাই না। আমি ওকে আমার কাছ থেকে মুক্ত করে দেব। আমি চাই সে তার বাবার কাছে চলে যাক। আমার সাজা আমি সন্তানকে দিতে চাই না’।

রায় ঘোষণার দিন, সন্তান নিয়ে আদালতে আসেন মনি

কারাগার সূত্র বলছে, জেল কোড ৯৫৭ ধারা অনুযায়ী কারাদণ্ড অবস্থায় কোন মা যদি সন্তান প্রসব করে। চাইলে সে সন্তান ৪ বছর পর্যন্ত মায়ের সঙ্গে কারাগারে থাকতে পারে। তবে জেল সুপার চাইলে আরো দুই বছর অর্থাৎ মোট ৬ বছর শিশুটি কারাগারে থাকতে পারবে।

বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে যে ধারণ ক্ষমতা, তার বেশি বন্দী থাকেন। এর মধ্যে একটি বড় অংশই নারী বন্দী। এই নারী কয়েদীদের অনেকের সাথেই তাদের শিশু সন্তানরাও থাকছে কারাগারের উঁচু ফটকের ভেতরে। কারাগারগুলোতে শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাস, বিনোদনের ব্যবস্থা।  

ফেনী জেলা কারাগার-১ এর আলো-বাতাসহীন সাধারণ মহিলা ওয়ার্ডের একটি কক্ষে মায়ের সঙ্গে রয়েছেন শিশু রথি। যেখানে বিভিন্ন অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত নারী বন্দীরা রয়েছেন।

বন্দী মায়ের সাথে বন্দী দশায় থাকা শিশু রথী সঠিক খাবার পাচ্ছে কিনা, তার চিকিৎসা হচ্ছে কিনা, মানসিক বিকাশ ও তার ভবিষ্যৎ কেমন হবে?-অন্যদিকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর সমাজ শিশুটিকে কিভাবে গ্রহণ করবে? কবে সে পৃথিবীর আলো-বাতাস পাবে? এসব প্রশ্নও থেকে যায়, হয়ত সময়ই একদিন তার উত্তর দেবে। 

ফেনী জেলা কারাগার

যদিও ফেনী জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার মনির হোসেন দাবি করেন, মনির সন্তানের কারাবিধি অনুযায়ী সঠিক পরিচর্যাই হচ্ছে। তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমাদের এই কারাগারে দুটি শিশু বাচ্চা রয়েছে। একটির বয়স এক বছর। মনির বাচ্চার বয়স এক মাস। এ বয়সী শিশুর মায়েদের বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয়, কারাগার থেকে তাদের খাবার দেয়া হয়। তাছাড়া শিশুর পরিচর্যার জন্য আলাদা যত্ন নেওয়া হয়।

মায়ের সঙ্গে কারাবন্দী শিশুদের বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, মায়ের অপরাধে শিশুরা এভাবে কারাগারে বন্দিজীবন-যাপন করবে তা সুস্থ-সুন্দর সমাজ-পরিবেশের কাম্য হতে পারে না। একটা বাচ্চা কারাগারে জন্ম নিয়েছে এবং আগামী চার বছর কারাগারে থাকবেন বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে বাচ্চাটিকে কারাগারের বাইরে নিয়ে এসে লালন পালন করাও কষ্টসাধ্য। কেননা এই মুহূর্তে তার মায়ের সান্নিধ্যই তার প্রয়োজন। কষ্টের ব্যাপার এটা, মায়ের সাজা ভোগ করছেন অবুঝ শিশুটি।

পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে মনি ও তার সন্তান

এ মানবাধিকার কর্মী বলেন, বহির্বিশ্বে এসব ঘটনায় মায়েদেরকে উন্মুক্ত কারাগারে রাখা হয়। যেখানে ওই মা শিশুটিকে নিয়ে একটা নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত যেতে পারবেন, নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবেন। সেই নিয়ম যেহেতু আমাদের কারাবিধিতে এখনো যোগ হয়নি। তাই আপাতত শিশুটি মায়ের কাছে থাকাটাই নিরাপদ।

শিশু হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মমিনুল হক বলেন, একটা শিশুর মানসিক বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় শূন্য থেকে ৫ বছর। এই সময়টাতে সে যা দেখবে, যে পরিবেশ পাবে সেখানে থেকেই তার মানসিক বিকাশ ঘটবে। যদি কোন শিশু এই সময় কারাগারে থাকে। অবশ্যই সে পারিবারিক বন্ধন, সামাজিকতা থেকে দূরে থাকবে। তার বিকাশ অন্য সাধারণ শিশুর মতো হবে না। কিছুটা বুদ্ধি ও আচরণ প্রতিবন্ধকতা নিয়েই তাকে সারা জীবন চলতে হবে।

   

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বঙ্গভবনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করে দেশকে অন্য পথে পরিচালিত করতে চেয়েছিল কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেয়নি।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, এ বিষয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।

সাক্ষাৎকালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিনিধিদল ৩ মে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সম্মেলনে যোগদানের জন্য রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানান।

প্রতিনিধিদল ১৯৭১ এর গণহত্যাকারীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আদালতে অধিক সংখ্যক বিচারক নিয়োগ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য স্মারকপত্র প্রদান করেন।

তাঁরা সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করবে মর্মে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ কমিশন সাহাবুদ্দিন কমিশন নামে পরিচিত।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস. এম সালাহউদ্দিন ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

  নুসরাত হত্যা

;

নোয়াখালীতে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক প্রবাসী তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক প্রবাসী তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও এক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়। নিহত আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলের দিকে বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেল যোগে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন অনিক। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডের পাশে হায়দার ইলেক্ট্রনিক্সের সামনে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অনিক গুরুত্বর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের বাবা মন্টু মিয়া জানান, অনিক ২ মাস আগে বিয়ে করে। সে আবুধাবি প্রবাসী ছিল। ২মাস ৫দিন আগে সে দেশে ফিরে আসে। আসরের নামাজের পর বাড়ি থেকে সে বের হয়। আমাকে বলেছিল তাদের একটা ইফতার পার্টি আছে। ইফতার পার্টি শেষে বাড়ি ফিরবে। ইফতারের সময় একটি নম্বর থেকে আমার মুঠোফোনে কল দিয়ে জানানো হয় অনিককে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। হাসপাতালে এসে জানতে পারি আমার ছেলে মারা গেছে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। লিখিত অভিযোগ পেলে আনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  নুসরাত হত্যা

;

ট্রেনের অগ্রিম ৩৩ হাজার টিকিট পেতে ২ কোটিবার চেষ্টা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিটের জন্য পঞ্চম দিনে ৩২ হাজার ৫৯১টি টিকিটের বিপরীতে প্রায় ২ কোটিবার চেষ্টা করেছেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ট্রেনে ভ্রমণের জন্য আগামী ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়।

রেলসেবা অ্যাপ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সহজ ডট কমের প্রধান নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ দেবনাথ জানান, আগামী ৭ এপ্রিলে ট্রেনে যাত্রীদের জন্য ঢাকা থেকে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৫৯১টি টিকিট, এর মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

তিনি জানান, এদিন সকাল ৮ থেকে সাড়ে ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট ছাড়ার পিক আওয়ারে চেষ্টা হয়েছে ৮২ লাখ। আর বেলা ২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলের টিকিট ছাড়ার পিক আওয়ারে ৭৪ লাখবার চেষ্টা করেছেন যাত্রীরা।

রেল কর্তৃপক্ষ জানান, এবার ঈদে পশ্চিমাঞ্চলের জন্য আজকের রেগুলার টিকিট ১৫ হাজার ৯৩৩টি। আর পূর্বাঞ্চলের জন্য নির্ধারিত টিকিট ১৬ হাজার ১০০টি। তবে ঈদ উপলক্ষে ৭ তারিখ যে স্পেশাল ট্রেন যাবে, সেখানে আরও ৫০০ টিকিট যোগ হবে দুই অঞ্চলের জন্য।

রেলওয়ে বলছে, এ বছর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর ৪২ জোড়া ট্রেনের টিকিট দুই পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ ঈদ উপলক্ষে এই অগ্রিম টিকিট সম্পূর্ণ অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে ৷ এবার মোবাইলে ওটিপি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হচ্ছে ৷ ঈদযাত্রাকে সুশৃংখল রাখার জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ৷

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ৮ এপ্রিলের ভ্রমণের টিকিট পাওয়া যাবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের ভ্রমণের টিকিট পাওয়া যাবে ৩০ মার্চ। এই ঈদে ৩৩ হাজার ৫০০টি আন্তনগর ট্রেনের টিকিট প্রতিদিন অনলাইনে উন্মুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ঈদের সময় আটটি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৪ মার্চ; ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৫ মার্চ; ৫ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৬ মার্চ এবং ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৭ মার্চ।

  নুসরাত হত্যা

;

মশা নিয়ন্ত্রণে গবেষণার প্রয়োজন বোধ করছেন চসিক মেয়র!



স্টাফ করেসপেন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে তিন বছর পূর্ণ হয়েছে মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেইে গত তিন বছরে ছোট্ট মশাই যেন বড় ব্যর্থতা তাঁর! তবে মেয়র এই ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছেন মশার প্রতিরোধক্ষমতার উপর। এবার মশা নিয়ন্ত্রণ করতে গবেষণার প্রয়োজনও বোধ করছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে লালদিঘী পাড়স্থ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, মশার ঔষধের প্রতি মশার প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হয়েছে। এখন ঔষধ মেরেও মশা মারা যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে গবেষণা প্রয়োজন।

সভায় মশার প্রকোপ কমাতে আগামী সপ্তাহ (৩১ মার্চ) থেকে কার্যক্রম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মশা দ্রুত বাড়ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে স্প্রেম্যান থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট লোকবল বাড়িয়ে মশা নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে আরও ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ডেঙ্গু প্রকোপ প্রতিরোধে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কাউন্সিলরদের মাঠে থেকে তদারকি করতে হবে এ কার্যক্রম।

‘অনেকে মনে করে টনকে টন মশার ঔষধ মারলেই মশা কমবে, এটা ঠিকনা। আমাদেরকে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। একসময়ে শহরে ব্যাঙ পাওয়া যেত যেটা মশার লার্ভা খেয়ে মশা কমাতে সহায়তা করত। বিভিন্ন ধরনের উপকারী কীট-পতঙ্গ পাওয়া যেত, যা পাওয়া যাচ্ছে না।’

জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্ন বিভাগ নালা-গুলো পরিস্কার করছে। অনেক সময় দেখা যায় নালায় ডাবের খোসা থেকে লেপ-তোষক সব ফেলা হয়েছে যা জলাবদ্ধতা তৈরি করে মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে মশার প্রকোপ কমানো কঠিন হবে। জনগণ বাড়িতে থাকা জমা পানি প্রতি তিনদিনে একদিন ফেলে দিলে এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি থেকে জনগণকে বিরত রাখতে পারলে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। সিডিএ ৩৬টা খালে যে জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্প করছে সেগুলোতে বাধ দিতে হয়েছে। সিডিএ বর্ষার আগে বাধ ও খালের মাটি অপসারণ করলে জলাবদ্ধতা ও মশার প্রকোপ কমবে।

আর্থিক সমস্যায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় শহর। চট্টগ্রামকে ঘিরে বে-টার্মিনাল, শিল্পপার্ক, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ অনেকগুলো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পগুলোকে সফল করতে যে ধরনের অবকাঠামো চট্টগ্রামের দরকার তা কেবল শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স আর ট্র্রেড লাইসেন্সের আয় দিয়ে তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়।

‘আমরা বন্দরের আয়ের ১ শতাংশ চেয়েছিলাম। আইনের গ্যাড়াকলে তা হয়নি। অথচ বন্দরের ৩০ থেকে ৪০ টনের লরি চলাচল করে শহরের রাস্তা নষ্ট করে ফেলছে। প্রতিদিন যে কন্টেইনার খালাস হচ্ছে তা থেকে আয়ের একটি অংশ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে দেয়া উচিৎ। চসিকের ভবনগুলোকে উর্ধ¦মুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে আয়বর্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করব। চসিকের রাজস্ব বিভাগকেও আয় বহুমুখীকরণে মনোযোগ দিতে হবে। সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানাচ্ছে। সিডিএ টোল আদায় করবে কিন্তু চসিকের হিস্যা কী হবে তা আলাপ করা উচিৎ ছিল। কারণ সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় এক্সপ্রেসওয়ে বানাবেন, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি উঠা-নামা করবে, আমরা সড়ক সংস্কারে ব্যয় করব অথচ আমাদের কোন হিস্যা থাকবেনা তা হবেনা।’

নগরীতে আলোকায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চসিকের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলাম রমজানে সড়কে, মসজিদে, কবরস্থানে আলোকায়ন করতে। কিন্তু, আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি অনেক রাস্তায়, গলিতে বাতি জ্বলেনা।

কাউন্সিলররা নিজ নিজ এলাকার বিদ্যুতের ইন্সপেক্টরদের নাম্বার রাখার পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, কোন সড়কে বাতি না জ্বললে জানতে চাবেন কেন বাতি জ্বলছেনা। কেউ রেসপন্স না করলে লিখিত অভিযোগ দিবেন। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা অনেক সময় শোনা যায় এক-দুই ঘন্টা কাজ করে চলে যায়। এদের ব্যাপারেও অভিযোগ দিবেন। তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বরখাস্ত করে দিব।

হকার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র‌্যাবের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অবৈধ হকার উচ্ছেদ হওয়ায় মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। মানুষ খুবি খুশি। মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ নিরসণ হয়েছে। গরীব হকারদের জন্য হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করব। তবে, হকারদের নিয়ে কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেয়া হবে না। অলিতে-গলিতে হকার বসিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া বন্ধ করব। রেলওয়ে ও গণপূর্তর সাথে আমরা যোগাযোগ করছি। পরিত্যক্ত ভূমিতে কেবল সপ্তাহে দু’দিন হলিডে মার্কেট চালু করা হবে।

হলিডে মার্কেট প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী রমিজুর রহমান জানান, চসিকের উচ্ছেদ অভিযানে বায়েজিদ বোস্তামীতে দুটি ভূমি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত হয়েছে। বায়েজিদ এলাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের উদ্ধারকৃত জায়গায় হকারদের জন্য হলিডে মার্কেট স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। জনস্বার্থ বিবেচনায় হলিডে মার্কেট বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

চসিকের প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, শুস্ক মৌসুমে ফুটপাত রং করা, জ্যাব্রাক্রসিং এবং রোডমার্কিং এর কাজ একমাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। কিছুদিন আগে একজন জানালো একটা রাস্তা বানানোর মধ্যে রাস্তাটা কেটে ফেলেছে। সমন্বয় করলে রাষ্ট্রের সম্পত্তির এ অপচয় রোধ করা যাবে। আমাদেরকে কিছু কিছু সড়কে ব্লক দিয়ে নির্মাণ করা যায় কীনা তা ভাবতে হবে। প্রয়োজনে পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে

ঈদের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান মেয়র।

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্থায়ী কমিটির পরামর্শ অনুসারে ১ জুলাই থেকে অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হবে। চসিকের অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের কার্যক্রমও অনেকটুকু এগিয়ে গেছে।

সভায় ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রউফ জানান, গ্রীস্মে কিছু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পানি সরবরাহ ও লিকেজ মেরামতের জন্য ভিজিল্যান্স টিম গঠন করেছি। সহসাই পানির সংকটের সমাধান হবে।

সভায় ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, অবৈধ হকার উচ্ছেদ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করেছে এবং ভবিষ্যতেও এধারা অব্যাহত থাকবে। তবে, উচ্ছেদ অভিযান বিকালে পরিচালনা করলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে। কারণ হকাররা মূলত বিকালে সড়ক-ফুটপাত দখল করে নিচ্ছে যা নগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি করছে। নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপারের স্বার্থে নগরীজুড়ে জেব্রা ক্রসিং গড়ে তুলতে হবে।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

  নুসরাত হত্যা

;