বার্লিনের হোটেলে রহস্যময় ল্যাপটপ!



এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম
বার্লিনের মেহ্কিউর হোটেলের প্রবেশদ্বার

বার্লিনের মেহ্কিউর হোটেলের প্রবেশদ্বার

  • Font increase
  • Font Decrease

ট্রেনের মাইক্রোফোনে ঘোষকের শব্দে ঘুম ভাঙল।

-মিনিট কয়েকের মধ্যে বার্লিন স্টেশনে থামছে ট্রেন।

ট্যুরিস্ট গাইডে বার্লিন রেলস্টেশনের স্থাপত্য কীর্তি নিয়ে বিস্ময় ছড়ানো বর্ণনা। এটি ইউরোপের সেরা রেলস্টেশন- এমন দাবিও শুনেছি জার্মানির অনেকের মুখে। বার্লিন রেলস্টেশন নিয়েই তাই আমার ব্যক্তিগত কৌতূহল ছিল একটু বেশি।

কৌতূহলটা আরো বাড়িয়ে দিলেন ওল্ডেনবুর্গের টিপু মোল্লা।

সেই গল্পের আগে টাঙ্গাইলের এই যুবকের ‘জার্মানি জয়ের’ গল্পটা হয়ে যাক।

নব্বই দশকের শুরুতে জার্মানিতে এসেছিলেন টাঙ্গাইলের টিপু। ভালো গুছিয়ে নিয়েছেন। ভাষা-স্টাইল ও জীবন ধারণে পুরোপুরি জার্মান হয়ে গেছেন। কিন্তু মননে-চিন্তায় এবং আতিথেয়তায় এখনো খাঁটি বাঙ্গালি, বাংলাদেশি!

বার্লিনের মেহ্কিউর হোটেলে নিয়ে গেলেন এম. এম. কায়সার 

বছর কয়েক পরপর দেশে ফিরেন। টাঙ্গাইলে মা-বাবার সঙ্গে কিছুদিন কাটান। ইউরোপের পরিশ্রমী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন টিপু। সম্পর্কে ইত্তেফাকের দিলু ভাই’য়ের (দিলু খন্দকার) নিকটাত্মায়ী এই ভদ্রলোক জার্মানিতে ৩৭ দিনের সফরে আমাদের জন্য যা করেছেন সেই কৃতজ্ঞতার কোনো শেষ নেই। ওল্ডেনবুর্গে তার কাঠের দোতলা বাড়িটিকে আমরা বেস বানিয়েছিলাম। ওল্ডেনবুর্গ জার্মানির একেবারে উত্তরে। টিপুর রান্নাঘরের খিঁচুড়ি ও ইলিশ মাছ ভাজা খেতে আমরা ট্রেনে তিন-চারশ’ কিলোমিটার পর্যন্ত টপকে গেছি। যখনই যে আবদার করেছি, সবই এনে হাজির করেছেন এ ভদ্রলোক। টাঙ্গাইলে একসময় ভালো ফুটবলও খেলতেন টিপু। স্টপার ব্যাক। এখনো বাংলাদেশ এবং বিশ্ব ফুটবলের খোঁজ-খবর রাখেন। যেদিন জার্মানির খেলা থাকত সেদিন টিপুর সব কাজ বন্ধ। টেলিভিশনের সামনে বসে পড়তেন কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে। গায়ে জার্মান জাতীয় দলের জার্সি।

-আমি বলে রাখছি, জার্মানি এবারের বিশ্বকাপে অনেক দূরে যাবে।

টিপুর বিশ্বাসে কোনো ভুল ছিল না।

বার্লিন যাব শুনে টিপুও শহরের নতুন রেলস্টেশন ঘুরে দেখার জন্য বারবার করে বলে দিলেন- ‘আমি বলছি, ওখানে সময়টা আপনাদের খারাপ কাটবে না।’

১৩ জুন সকাল সকাল বার্লিন রেলস্টেশনে নামলাম আমরা পাঁচজন। ট্রেনের বগি থেকে নেমেই অবাক।

-কয় তলায় আছি আমরা?

দোদুলের প্রশ্ন শুনে লিফটের দিকে তাকালাম।

-এটা ছয় তলা।

মেহ্কিউর হোটেলের রুমে কাজ ও বিশ্রাম শেষে আড্ডা

চকচকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। একরত্তি ধুলো-ময়লা নেই। ছাই রংয়ের স্টিল স্ট্রাকচারের অপূর্ব স্থাপত্য শিল্পের এই রেলস্টেশন সত্যিই বিস্ময় ছড়াবে প্রথম দেখায়। চওড়া এলিভেটর, লিফট ও সিঁড়ি দারুণ ব্যস্ত, চারধার। বিশাল ইলেক্ট্রনিক্স ডিজিটাল বোর্ডে সারা দিনের ট্রেনের সিডিউল দেওয়া। কোন ট্রেন কখন কোন প্লাটফর্ম থেকে ছাড়বে তার পথ নির্দেশনা আছে সেই বোর্ডে। শপিং সেন্টার, ফুড কোর্ট, ম্যাকডোনাল্ডস কি নেই সেখানে! আশপাশ দিয়ে এত ট্রেন আসছে, যাচ্ছে। লোকজন নামছে, উঠছে কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, তেমন কোনো হইচই নেই, হল্লা নেই। আর হ্যাঁ, কেউ ব্যাগ ধরে টানাটানি করতেও আসে না! বিশাল এই রেলস্টেশনের চারধার ঘুরে দেখতেই আমাদের অনেক সময় কেটে গেল।

রেলস্টেশনের বাইরে আসতেই আমাদের ‘হোটেল চিন্তা’ শুরু হয়ে যায়। বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে সেই রাতে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচ। জার্মানির সময় রাত ৯টায় শুরু হবে ম্যাচ। আমরা বার্লিনে এসেছি সকালের ট্রেনে। স্টেডিয়ামে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই পুরোটা সময় কোথায় কাটাব?

বার্লিন শহরটা দেখে দিনটা কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু রিপোর্ট তো লিখতে হবে। লেখার পরিবেশ চাই। তাছাড়া ট্রেনে রাত কাটানোর পর ফ্রেশও হতে হবে। ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ জার্মানির সময় রাত ন’টায়। পরিকল্পনা হলো দিনের বেলার জন্য আমরা হোটেলে উঠব। সন্ধ্যার মধ্যেই হোটেল ছেড়ে দিব। রাতটা আবার ট্রেনে কাটিয়ে পরদিন অন্য কোনো শহরে।

জার্মানি বিশ্বকাপে আমাদের বেশির ভাগ রাত এভাবেই কেটেছে! দিনটা কয়েক ঘণ্টার জন্য হোটেলে। বিকেল-সন্ধ্যা রাত ১১টা পর্যন্ত স্টেডিয়ামে, মিডিয়া সেন্টারে। গভীর রাতের বড় অংশটা আবার ট্রেনের বগিতে। পরদিনের সকালটা আবার অন্য শহরে!

বার্লিন রেলস্টেশনের বাইরে এসে জনকণ্ঠের মজিবুর ডায়েরি থেকে নাম্বার খুঁজে কাকে যেন ফোন করছিলেন। আমরা উৎসুক হতেই মজিবুর দারুণ উৎসাহ নিয়ে আমাদের আশ্বস্ত করলেন।

জার্মানির আনন্দময় রেল ভ্রমণে দিলু খন্দকার ও নাসিমুল হাসান দোদুল

-দেখি আমাদের কবি ও কলামিস্ট ভাইরে ফোন করি। তিনি আমাকে বার্লিনে এসে ফোন করতে বলেছিলেন। অনেক দিন ধরে এ শহরে আছেন। নিশ্চয়ই হোটেল-মোটেলের ঠিকানা তার জানা।

মজিবুর ফোনটা স্পিকারে দিলেন। আমরা সবাই শুনছি। ও’পাশ থেকে আর্তনাদের মতো আওয়াজ এল।

-কি পাঁচজন!

বেচারা কবি আমরা পাঁচজন একসঙ্গে আছি শুনেই যেন ভয় পেয়ে গেলেন! চিন্তায় পড়ে গেলেন আমরা না তার বাসায় গিয়ে হাজির হই! এ ভয়েই নিজের ঠিকানা পর্যন্ত দিলেন না। হঠাৎ ব্যস্ততার সুর তার গলায়।

-তুমি ঘণ্টাখানেক পর আমাকে ফোন কর।

বুঝলাম তিনি ‘আপদ’ এড়াতে চাইছেন। মজিবুর তো ক্ষেপে আগুন। ট্যাক্সি ডেকে সিটি সেন্টারে গেলাম আমরা। সকাল প্রায় ৯টার মতো বাজে। নাশতা করা হয়নি। সব বাদ রেখে আমরা পাঁচজন দু’ভাগ হয়ে হোটেল খুঁজতে শুরু করলাম।

সামনের হোটেলের বিশাল গেটে ‘নো রুম অ্যাভেইলেভেল’ এর নোটিশ দেখেও ঢুকে পড়লাম। যদি কোনোমতে পটিয়ে অন্তত দিনের বেলার জন্য দুটি রুম মিলে! রিসিপশনের মেয়েটিকে আমাদের বৃত্তান্ত খুলে বললাম। স্বদেশি পরিচিত ‘কবি মহাশয়ের’ চেয়ে অনেক বেশি কাছের মনে হলো বার্লিনের প্রথম দেখা সেই তরুণীকে! বুক পকেটে নেমপ্লেটে লেখা তার নাম মনে রাখলাম- মারিয়া।

সময় বাঁচাতে ট্রেনের মধ্যেই লিখতে হয়েছে বেশিরভাগ রিপোর্ট

-দেখেছ নিশ্চয়ই আমাদের হোটেলে কোনো রুম খালি নেই। তবে তোমাদের জন্য আমি অন্য জায়গায় চেষ্টা করে দেখতে পারি।

-প্লিজ! আমরা তো তোমার মতোই একজন সুহৃদ খুঁজছিলাম এ শহরে।

ডেস্ক কম্পিউটারে হোটেল খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে গেল মারিয়া। বার কয়েক এদিক-ওদিক টেলিফোন করল।

-ইয়েস, জেন্টেলমেন মনে হচ্ছে তোমাদের কপাল ভালো। সিটি সেন্টার থেকে একটু দূরে হোটেল মেহ্কিউরে কয়েকটা রুম ফাঁকা আছে। আমি বলে দিয়েছি। ওরা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

-যাব কিভাবে? জায়গাটা তো চিনি না?

মারিয়া সেই সমাধানও করে দিল। টেলিফোন করে একটি ফাইভ সিটার মার্সিডিজ ডেকে আনল। হোটেল মেহ্কিউর যাওয়ার পথ ম্যাপ এঁকে ড্রাইভারের হাতে ধরিয়ে দিল।

মারিয়াকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে আমরা ট্যাক্সিতে উঠে বসলাম। যতক্ষণ দেখা যাচ্ছিল ততক্ষণ মেয়েটি হোটেলের গেটে দাঁড়িয়ে আমাদের হাত নাড়ছিল! অথচ তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল মাত্র আধঘণ্টা আগে। সেও জানত আর কখনো হয়তো দেখা হবে না। তবুও কত আপনজনের মতো আচরণ।

-বিদেশে আইস্যা আর কোনো দিন ‘দেশি কবি’ খুঁইজেন না। রানা ভাইয়ের ঠাট্টায় আমাদের হো হো হাসিতে ট্যাক্সি চালকও চমকে উঠল।

বার্লিনের হোটেল মেহ্কিউরের বিশাল পোর্চের নিচে এসে থামল আমাদের মার্সিডিজ। এটি চেইন হোটেল। জার্মানির বিভিন্ন শহরে রয়েছে ফোরস্টার এ হোটেল। রিসিপশনের যুবক আমাদের দেখেই চিনল।

-তোমাদের জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম।

হোটেল রেজিস্ট্রারে নাম-পরিচয় লেখার পর ছয়তলায় উঠলাম আমরা। কিন্তু সেই প্রবেশ পথে কি ভয়াবহ বিপদকে সঙ্গে নিয়ে উঠেছিলাম তা আমরা কেউ টের পেলাম না!

নজর কাড়া বার্লিন রেলস্টেশন

রুমে পা রেখেই গোসল সেরে ঝটপট রিপোর্ট লিখে হোটেলের নিচ থেকে মেইল করে দুই রুমে যে যার মতো বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। আগের রাতটা না ঘুমানোর ক্লান্তিতে অস্থির সবাই। ওদিকে আবার বিকালের আগে মাঠে যেতে হবে। ব্রাজিলের ম্যাচ। এই প্রথম নামছে তারা এবারের বিশ্বকাপে। সাম্বা উৎসব নিয়েও রিপোর্ট লিখতে হবে। তাই দুপুর শেষ হওয়ার আগেই আবার মাঠে যাওয়ার জন্য তৈরি সবাই। রুম ছাড়ার সময় দেখি কালো রংয়ের একটা ডেল ল্যাপটপের ব্যাগ আমার বিছানার পাশে হেলান দিয়ে রাখা।

-এই ব্যাগটা কার। জলদি উঠান।

দেখি কেউ সাড়া দেয় না। সবাই নিজ হাতে ব্যাগ নিয়ে রুমে চাবি লাগানোর পথে।

-আরে কি মুশকিল, এটা কার ব্যাগ?

আমার চেঁচামেচি শুনে রানা হাসান ছুটে এলেন অন্য রুম থেকে।

-বস, এটি তো আমি রিসিপশন থেকে ওঠার সময়ে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। আমি মনে করছি এটি দোদুলের ব্যাগ। ওর লাগেজ বেশি তাই একটু হেল্প করলাম আর কি! হায় হায় অন্য কারোর ব্যাগ নিয়ে চলে এলাম নাকি?

হতভম্ব রানার মুখ থেকে কথা বেরোচ্ছিল না যেন।

নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে ব্যাগটা খুললাম আমরা। দেখি ভেতরে ডেলের ঝা চকচকে ল্যাপটপ! বুঝলাম ভীষণ বড় ভুল করে ফেলেছি আমরা। রিসিপশন থেকে উঠার পথে অন্য কারোর ব্যাগ রুমে নিয়ে এসেছি।

-না জানি কার ল্যাপটপ এটি। ওই বেচারা নিশ্চয়ই কান্নাকাটি করছে।

সিদ্ধান্ত হলো নিচে রিসিপশনে গিয়ে আমরা ল্যাপটপটা ফেরত দেব এবং ভুলটা স্বীকার করব। সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব চাপল আমার ও রানার কাঁধে।

রিসিপশনে গিয়ে ব্যাপারটা খুলে বলতেই হোটেল কর্তৃপক্ষ যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।

-তুমি জানো না পুরো বার্লিন পুলিশ এ ব্যাগ খুঁজছে! সকাল থেকে অনেক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। হোটেলের শ’দুয়েক বোর্ডারের নাম-ঠিকানাও নিয়ে গেছে পুলিশ। যাক, এখন যখন ব্যাগটা পাওয়া গেছে তখন আর কোনো সমস্যা নেই।

-দেখ এটি নেহাৎ একটা দুর্ঘটনা। আমরা ভীষণ দুঃখিত। এ ব্যাগের মালিকের সঙ্গে দেখা করে তার কাছেও দুঃখ প্রকাশ করতে চাই। ব্যাপারটি হয়তো আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারত।

বার্লিন রেলস্টেশনের সৌন্দর্য

ব্যাগের খোঁজ পেয়ে খানিক পরে দেখি স্যুট পরা এক ভদ্রলোক পড়িমড়ি করে ছুটে এলেন। হোটেল লবিতে সকাল থেকে তিনি বসেছিলেন মন খারাপ করে। পুরো পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সেই ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গে হাত মেলালেন। পরিচিত হলেন। একটি বীমা কোম্পানিতে কাজ করেন তিনি।

-বার্লিনে আজ সন্ধ্যায় আমাকে একটা সেমিনারে যোগ দিতে হবে। সেই সেমিনারের ডকুমেন্টস সব আমার ল্যাপটপে। বার্ষিক হিসাব-নিকাশ সবকিছু ওতে। বুঝতেই পারছ বিষয়টা আমার জন্য কত মূল্যবান? যাক, তোমাদেরও ধন্যবাদ। তোমরা ভালো মানুষ। বিষয়টা নেহাৎই ভুল বোঝাবুঝির।

হোটেলের দুই রুমের বিল চুকিয়ে বেরিয়ে আমরা হাঁফ ছাড়লাম।

-যাক বাবা বাঁচা গেছে। যদি রিসিপশনে সিসিটিভি থাকত তবে তো পুরোপুরি চোর প্রমাণিত হতাম আমরা সবাই। পুলিশ এসে রুম থেকে ওই ব্যাগ উদ্ধার করলে তখন তো আর কোনো যুক্তিই দাঁড় করাতে পারতাম না আমরা।

-কী যেন বলে একে? ওহ হ্যাঁ, বমাল গ্রেফতার!

দোদুলের মস্করায় আমরা হাসলাম। তবে সেই সঙ্গে ভয়ের একটা শীতল স্রোত ঠিকই পিঠ বেয়ে নেমে গেল!

পরের গল্প: সাম্বার শিহরণে ব্রা জি ল!

আরও পড়ুন-

বিশ্বকাপে ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে, দিতে হলো!

রাতের ট্রেনে বিশ্বকাপ পার্টি

তিমি’র সঙ্গে ছবি তোলা!

শচীন’স সসেজ, গাঙ্গুলি’স গ্রিল, মিয়াঁদাদ ম্যাজিক ম্যাঙ্গো জুস...

হাতিদের এতিমখানায়!

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে নিমন্ত্রণ

গল দুর্গের অ্যাডভেঞ্চারে...

ক্যান্ডির মন খারাপ করা সৌন্দর্য!

   

আফগানিস্তানের ১৬ বছর বয়সী স্পিনারকে দলে টেনেছেন শাহরুখ খান



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হাতের চোটে আইপিএলে খেলা হচ্ছে না আফগান স্পিনার মুজিব-উর-রহমানের। তার বদলি আফগানিস্তান থেকেই খুঁজে নিয়েছে আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, মুজিবের বদলি হিসেবে ১৬ বছর বয়সী আফগান স্পিনার আল্লাহ ঘাজানফারকে দলভুক্ত করেছে বলিউড তারকা শাহরুখ খানের মালিকানাধীন দল নাইট রাইডার্স। এবারের আইপিএল নিলামে সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় ছিলেন এই স্পিনার।

৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার ঘাজানফারের নিবাস আফগানিস্তানের পাক্তিয়া প্রদেশের জুরমাত জেলায়। উচ্চতার কারণে ক্রিকেটে তার শুরুটা হয়েছিল পেস বোলার হিসেবে। তবে আফগানিস্তানের সাবেক অধিনায়ক দৌলত আহমদজাইয়ের তত্ত্বাবধানে পেস বোলিং ছেড়ে একজন স্পিনার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন।

চলতি বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন ঘাজানফার। সেখানে ব্যাটিংয়ে ৫২ রান করেন আর বল হাতে ৮ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।

গত মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ঘাজানফারের।

;

সাকিব ফেরায় কোচের উচ্ছ্বাস



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় দলের জার্সিতে সাকিব আল হাসানকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল গত বিশ্বকাপে, সময়ের হিসেবে প্রায় পাঁচ মাস আগে। আর দেশের হয়ে সাদা পোশাক গায়ে জড়িয়েছিলেন প্রায় বছরখানেক আগে। জাতীয় দলে তার অনুপস্থিতি আরও দীর্ঘ হওয়ার কথা ছিল। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলার ইচ্ছা নিজেই প্রকাশ করেন। অবধারিতভাবেই দলে ডাক পেয়ে যান সাকিব।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ৩২৮ রানে হারের ক্ষত ভুলে বাংলাদেশের সামনে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ। এমন সময়ে সাকিবকে দলে পেয়ে খুশি হেড কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত কোচ নিক পোথাস।

ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকে দলে স্বাগত জানিয়ে এই কোচ বলেন, ‘সাকিব যে দলেই খেলুক, তাদের ভাগ্যবান বলতে হবে। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। ড্রেসিংরুমে তাকে পাওয়া সব সময়ই দারুণ ব্যাপার। তার শক্তিমত্তা খুব দ্রুত সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।’

আঙুলের চোটের কারণে গত বিশ্বকাপর শেষ ম্যাচে  খেলা হয়নি সাকিবের। তখন থেকেই মাঠের বাইরে সাকিব। এরপর চোখের চোটও বেশ ভুগিয়েছে তাকে। মাঝে বিপিএল এবং ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলেছেন। সাকিবের ফিটনেস নিয়ে তাই কোনো দুশ্চিন্তা নেই পোথাসের, ‘মনে হয় সে (সাকিব) ওজন কমিয়েছে। ওর বিপিএলটা ভালো গেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো শুরু করেছে। সে খুশি, আর আমরাও সাকিবকে খুশি দেখতে চাই।’

;

দলে ফিরলেন কেইন, ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে শঙ্কায় নয়্যার



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

বুন্দেসলিগায় অভিষেক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩০ গোলের রেকর্ডটি এতদিন ছিল হামবুর্গের কিংবদন্তি উয়ি সিলারের। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে গড়া এই রেকর্ডটি ৬০ বছর ধরে ছিল অক্ষত। জার্মান শীর্ষ লিগটির এখনো বাকি ৮ রাউন্ড। এর আগেই সেই ৬০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইংলিশ তারকা ফরোয়ার্ড হ্যারি কেইন। মৌসুমে এই অবস্থানেই কেইনের গোল সংখ্যা ৩১। গত ১৬ মার্চ ডার্মস্ট্যাড৯৮ এর বিপক্ষে ৫-২ গোলের বায়ার্নের জয়ের ম্যাচে একটি গোল করে সিলারের রেকর্ড ছাড়িয়ে যান সাবেক এই টটেনহাম ফরোয়ার্ড। 

তবে কীর্তি গড়ার সেই ম্যাচে গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন কেইন। এতে আন্তর্জাতিক বিরতিতে ইংল্যান্ডের দুই ম্যাচের দলে থাকলেও মাঠে নামেননি তিনি। তবে লিগ ম্যাচে ফেরার আগেই বায়ার্ন পেল সুসংবাদ। অনুশীলনে ফিরেছেন কেইন। সামনে টমাস টুখেলের দলের ম্যাচ বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে। এই বিগ ম্যাচের আগেই দলে যোগ দিলেন ক্লাবটির সময়ের সেরা এই ফুটবলার। 

তবে আসন্ন ম্যাচটিতে বায়ার্ন কাপ্তান ম্যানুয়েল নয়্যারকে নিয়ে দেখা দিয়েছেন শঙ্কা। আগামীকাল (শনিবার) বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে লিগের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচটি। 

লিগের এই অবস্থায় ২৬ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সবার ওপরে বায়ার লেভারকুজেন। সমান ম্যাচে জাভি আলোন্সোর দলের চেয়ে ১০ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে বায়ার্ন। ডর্টমুন্ড আরও পিছিয়ে। ২৬ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান চারে।

;

৩৪ দিনের বিরতি শেষে আজ মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএল ফুটবল



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

আন্তর্জাতিক বিরতি শেষ ফের মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের খেলা। সবশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে বিপিএলের প্রথম ভাগের খেলা। সেখান থেকে ৩৪ দিনের বিরতি শেষে আজ (শুক্রবার) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় ভাগের খেলা। মাঝের এই আন্তর্জাতিক বিরতিতে সুদানের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ এবং ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। 

বিরতিতে অবশ্য মাঠের বাইরের ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত ছিল প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো। এর মধ্যে দলগুলো সেরেছে মৌসুম মধ্যবর্তী দলবদল। প্রিমিয়ার লিগে আজ আছে তিনটি ম্যাচ। 

মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম আবাহনী ও পুলিশ এফসি। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব খেলবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে। এবং ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে মোহামেডান খেলবে ফরটিস এফসির সঙ্গে। তিনটি ম্যাচই শুরু হবে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে।

প্রথম লেগে বিদেশীদের নিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়েছিল শেখ রাসেল ও বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। এবার তাই সর্বোচ্চ চারজন করে বিদেশী খেলোয়াড় নিবন্ধন করিয়েছে এই দল। এদিকে তালিকার শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংস দলে ভিড়িয়েছে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফন উদোহকে। এর আগেও উদোহ বসুন্ধরার হয়ে খেললেও এবার নিবন্ধিত ফুটবলার হিসেবে তাকে দলে নিল টেবিল টপাররা। এদিকে জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়াকে নিবন্ধন করিয়ে দলে ভিড়িয়েছে আবাহনী। আর্জেন্টিনা ক্লাব সোল দে মায়োর ছাড়পত্র পাওয়াতেই এই সময়ে আকাশী-হলুদের হয়ে মাঠ মাতাবেন জামাল। 

এদিকে মধ্য মাঠকে শক্ত করতে উজবেক মিডফিল্ডার মুজাফফর মুজাফফরভের বিকল্প হিসেবে বেখরুজ সাদিলোয়েভকে দলে ভিড়িয়েছে মোহামেডান। এছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনী ৩ জন, শেখ জামাল ২ জন এবং একজন করে বিদেশী ফুটবলার টেনেছে ফরটিস ও রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি।  

;