নুসরাত হত্যাকাণ্ড: সকাল ১০টায় আদালতে আনা হবে আসামিদের

  নুসরাত হত্যা
  • মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নুসরাত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ফেনী থেকে: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বহুল আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর)। রায়কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।

সকাল ৯টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বহুল আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে। যেকোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় তারা সচেষ্ট রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, আদালত সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বেলা ১১টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হবে। আর এর পরপরই বিচারকের রায় ঘোষণার কথা রয়েছে বলেও জানা গেছে।

ফেনী আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য

এর আগে সকাল ১০টা নাগাদ ফেনী জেলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আসামিদের কোর্ট প্রাঙ্গণে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ফেনী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আসামিদের কখন আদালতে তোলা হবে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আদালতের উপরে। এ বিষয়ে আমাদের বেশি কিছু বলার সুযোগ থাকে না। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন সূত্র মতে জানতে পেরেছি, সকাল ১০টা নাগাদ ফেনী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এই মামলার আসামিদের আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হবে।’ ‌

আরও পড়ুন: নুসরাত হত্যা মামলার রায়, আদালতে তিন স্তরের নিরাপত্তা

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কর্তব্যরত ফেনী জেলা পুলিশের পরিদর্শক সুদীপ বলেন, ‘আসামিদের নিয়ে আসা এবং রায়ের পরের তাদের আবার আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে আসামি পক্ষের লোকজন ও বাদী পক্ষের লোকজন আসবে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’ৎ

গত ১০ জুন নুসরাত হত্যা মামলাটি আদালত আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন।

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও বাদীপক্ষের খণ্ডন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৪ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার কার্যালয়ে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি যৌন হয়রানির শিকার হন। এ ঘটনায় তার মা শিরীন আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে পাঠায়।

এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণ। অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে নুসরাতের পরিবারকে চাপ দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে ৬ এপ্রিল পরীক্ষার কক্ষ থেকে ডেকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে কেরোসিন ঢেলে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার চিৎকারে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল নুসরাতের মৃত্যু হয়। ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।