টানা বৃষ্টিতে স্থবির জনজীবন
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলবঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে মাদারীপুরের জনজীবনে। হেমন্তের এই দিনে ঝরছে শ্রাবণের ধারা, মনে হচ্ছে এ যেন বর্ষাকাল! আর টানা বৃষ্টিতে বিপাকে মাদারীপুরের সর্বস্তরের মানুষ।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুর থেকে জেলাজুড়ে শুরু হয় অবিরাম বৃষ্টিপাত। বৃষ্টির কারণে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা বিশেষ করে শিবচর উপজেলার চর জানাজাত, বন্দোরখোলা, কাঠালবাড়ি, সন্যাসিরচর ইউনিয়নের জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। এসব এলাকা পদ্মানদীর তীরবর্তী হওয়ায় পানি জমে গেছে বিভিন্ন গ্রামে। ফলে অঞ্চলটির দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এছাড়া বৃষ্টির মধ্যে গবাদি পশু নিয়েও অনেকে বিপাকে পড়েছেন।
এদিকে, রোববার (১০ অক্টোবর) সকাল কমেছে বৃষ্টি। কিন্তু আকাশে মেঘ থাকায় দেখা মিলছে না সূর্যের। বৃষ্টির কারণে জেলার প্রায় এলাকায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। এ অবস্থায় শহরের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। বৃষ্টির মধ্যে যারা জরুরি কাজের জন্য বের হয়েছেন তাদের অনেককেই গরম কাপড় ও রেইনকোট পরতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, বৃষ্টির কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। কাজকর্ম না পেয়ে চায়ের দোকানে অলস সময় পার করছে দিনমজুর ও শ্রমিকরা। ইতোমধ্যেই তিন দিনের বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে রবিশস্য চাষাবাদ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চর জানাজাত এলাকার জেলে নুরুল ইসলাম জানান, তার ছেলের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে হবে। কিন্তু গত তিনদিন ধরে তিনি মাছ ধরতে পারেননি। ফলে তিনি এখন কী করবেন সেটা বুঝতে পারছেন না।
বাশকান্দি এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর মল্লিক জানান, কয়েকদিন আগে ১০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ-রসুন রোপণ করেন তিনি। কিন্তু দুর্যোগে তার সব শেষ হয়ে গেছে।