করোনার চোখ রাঙানি, যুদ্ধ, ক্ষমতার লড়াই নিয়ে যেমন কাটল ‘২১

  সালতামামি


মোস্তাফিজুর রহমান পলিন, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে বিদায় নিতে যাচ্ছে ২০২১ সাল। নতুন কিছুর প্রত্যাশায় বিশ্ব বরণ করে নিতে যাচ্ছে খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২২ সালকে। তবে বিদায়ী ২০২১ সাল ইতিহাসে জায়গা করে নিবে নানা ঘটন-অঘটনের বছর হিসেবে। এসব মধ্যে রয়েছে নতুন রূপে করোনাভাইরাসের আগমন। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, মার্কিন কংগ্রেসে (ক্যাপিটল হিল) হামলা, আফগানিস্তানে তালেবানের ফের ক্ষমতায় আসা, অকাস নিয়ে বিতর্ক, মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান, গাজায় ইসরাইলি হামলা, অভিবাসী সংকট, মালালার বিয়ে, ইউরোপের দেশ সুইডেনে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীসহ নানা ঘটনার কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বিদায়ী বছরটি।

নতুন রূপে করোনা, ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ

বছরের শেষ সময়ে এসে নতুন করে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। এর ফলে ইউরোপের অনেক দেশ ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি সীমানা বন্ধের পদক্ষেপ নিচ্ছে। অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম করোনার নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) অস্তিত্ব মিলেছে ৮৯টি দেশে। মহামারি পুরোপুরি নির্মূল না হতেই লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলাকেই এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারের পরামর্শক বিজ্ঞানীরা বলেন, বিস্তার ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে হাসপাতালগুলো বিশাল চাপের মুখে পড়বে। করোনার অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন ইউরোপে বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স। এদিকে করোনা প্রতিরোধে টিকা কতটা কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছেন, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বিশ্বের সব দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিলে আগামী বছরের মধ্যে মহামারির অবসান সম্ভব।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বয়স্ক বাইডেন

মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (৭৮) ২০ জানুয়ারি শপথ নেন। এছাড়া দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রে এবারই প্রথা ভেঙে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করার পরপরই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেশ কিছু সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করেন। যুক্তরাষ্ট্র ফের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ফেরে। এছাড়া ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালের বিষয়ে আগ্রহে প্রকাশ করে বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া বাইডেন প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সৌদি আরবে ক্রমাগতভাবে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিমান হামলার মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

ক্যাপিটল ভবনে নজিরবিহীন হামলা

গত ৬ জানুয়ারি জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যয়নে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকরা নজিরবিহীন হামলা চালায়। এঘটনায় চার ব্যক্তি নিহত হন। এমনকি রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ জারি করা হয়। এ ঘটনায় বিস্মিত হয় বিশ্বের রাজনৈতিক নেতারা। একে লজ্জাজনক বলেও উল্লেখ করেন তারা। মার্কিন গণতন্ত্র নিয়েও প্রশ্ন উঠে।

২০ বছর পর ফের ক্ষমতায় তালেবান

দীর্ঘ ২০ বছর রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর গত ১৫ আগস্ট ফের আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। দেশ ছেড়ে পালান পশ্চিমা-সমর্থিত আফগান সরকারের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। তালেবান ক্ষমতায় আসায় এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। এছাড়া আফগানিস্তানে গণতন্ত্রের যতটুকু চর্চা শুরু হয়েছিল, নারীর ক্ষমতায়নের যে ধারার সূচনা হয়েছিল, তা তালেবানের ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে থমকে গেল। আবার দেশটি যেন ২০ বছর পেছনে ফিরে গেল। দেশটিতে দুই দশকের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ২ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে। সরকারি হিসেবে আড়াই হাজারের বেশি মার্কিন সৈন্য ও প্রায় ৪ হাজার মার্কিন বেসামরিক লোক নিহত হন। অন্যদিকে আফগানিস্তানে ১ লাখ ৭০ হাজারের ওপর প্রাণহানি ঘটে। এদিকে তালেবান আবারও কঠোর শাসন চালু করতে শুরু করেছে, তার সঙ্গে দেশটিতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তারা প্রায় দেশটিতে রক্তক্ষয়ী হামলা চালাচ্ছে।

অকাস উত্তেজনা

চীনকে মোকাবিলা করতে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অকাস (এইউকেইউএস) নামের একটি নিরাপত্তা চুক্তির ঘোষণা দেয়। যার ফলে ওই অঞ্চলে হঠাৎ করে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঐতিহাসিক এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সরবরাহ কথা বলা হয়েছে। এতে করে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়বে এবং এর মধ্য দিয়ে কৌশলগত এই অঞ্চলে নতুন মেরুকরণের সূত্রপাত হবে। কিন্তু পরমাণু শক্তিধর দেশ ফ্রান্স এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে। অকাসের তীব্র নিন্দা করে বলেছে এর মাধ্যমে তাদের পিঠে ছুরি মারা হয়েছে। এর জেরে ক্ষুব্ধ প্যারিস যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়। যা খুবই অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেনের ব্যাপক সমালোচনা হয়। ধারণা হচ্ছে ২০২২ সালে কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচনে এর মূল্য দিতে হবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল একটি অতি স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত নৌ-অঞ্চল। মূলত বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব মোকাবিলার জন্যই অকাস জোট গঠন করা হয়েছে।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান

চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। এর জেরে সামরিক অভ্যুত্থানের নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এক বিলিয়ন ডলারের সরকারি তহবিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ৯ এপ্রিল প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণা করে বলে আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচিত সরকারের কাছে এটি করা হবে। জান্তা সরকার ৬ ডিসেম্বর মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

গাজায় ইসরাইলি হামলা

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল এ বছরের এপ্রিল ও মে মাসে হামলা চালায়। এতে গাজায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। নারী-শিশুসহ মারা যায় ১৮১ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। যার ফলে সংঘাত ছড়িয়ে গেছে ইসরাইলেও। সেখানে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে সংঘর্ষে দেখা দেয়। পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি দখলদারদের হামলার প্রতিবাদে ফুঁসে মুসলিম বিশ্ব। পবিত্র মসজিদের ভিতর নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, বাংলাদেশসহ প্রায় সব মুসলিম দেশ। তবে এই ইস্যুতে অনেকটাই নমনীয় সুর ছিল পশ্চিমাদের।

গভীর হচ্ছে অভিবাসী-সংকট

দিন যত যাচ্ছে ততই অভিবাসী-সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ এশীয় দেশগুলো থেকে ইউরোপমুখী অভিবাসন-প্রত্যাশীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে ওই অঞ্চলে চলমান অভিবাসী-সংকট গভীর হচ্ছে। এছাড়া হাইতি ও হন্ডুরাসের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রমুখী হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপে অভিবাসী সংকট নতুন মাত্রা যোগ করে এ বছর। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ১৭ লাখ মানুষ ঢোকে, অন্যদিকে ইউরোপে গত বছরের তুলনায় এবার ৭০ শতাংশ বেশি অভিবাসী ঢুকেছে। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনেকে সাগর পথে ইউরোপে প্রবেশ করার সময় নৌকাডুবে মারা গেছে। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, এ বছর শুধু মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় পথে নৌকা দুর্ঘটনা এবং জাহাজডুবির ঘটনায় প্রায় ১৫০০ শরণার্থী ডুবে মারা গেছে। সম্প্রতি লিবিয়া উপকূলে ভেসে এসেছে ইউরোপগামী ২৭ জন শরণার্থীর লাশ। বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুটের এই ঘটনাকে সবশেষ ট্যাজেডি বলছে রেড ক্রিসেন্ট।

বিয়ে করেছেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই

পাকিস্তানের নারীশিক্ষা অধিকারকর্মী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই বিয়ে করেছেন। এ খবর প্রকাশ হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন মালালা। কারণ একসময় তিনি বলেছিলেন, মানুষ কেন বিয়ে করে। ভোগ ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ২৩ বছর বয়সী মালালা বলেন, আমি নিশ্চিত নই যে কখনো বিয়ে করবো কি না। আমি এখনো বুঝতে পারছি না কেন মানুষকে বিয়ে করতে হবে’ তিনি আরও বলেন, আপনি যদি আপনার জীবনে একজন ব্যক্তি থাকতে চান, তাহলে কেন বিয়ের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে, কেন এটি একটি কেবল অংশীদারিত্ব হতে পারে না? বিয়ে করার পর এ নিয়ে মালালা বলেন, আমি একজন সেরা বন্ধু ও সঙ্গী খুঁজে পেয়েছি। তাঁর ভাষ্য, এবার সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিয়েকে দেখেছেন তিনি।

সুইডেনে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন

সুইডেনের ইতিহাসে চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন দেশটির সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই পদত্যাগ করেন তিনি। ফের ২৯ নভেম্বর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন। আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তিনি এক দলীয় সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯১৭৫



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজার ১৭৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই)) কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া উত্তর গাজা শহরে আরও দু'জন এবং নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলার ৩৯ হাজার ১৭৫ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ৯০ হাজার ৭০৩ জন। তাছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও কয়েক লাখ মানুষ। নিহত ও আহতদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও নারী। 

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলি ১১৩৯ জন নিহত হয়েছে।

  সালতামামি

;

স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর তৃণমূল নেতার আত্মহত্যা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিলিগুড়ির খড়িবাড়ির চক্করমারি শ্মশানঘাট এলাকায় তার নিজ বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিলিগুড়ি টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, জগদীশ রায় (৬৫) নামের ওই ব্যক্তি স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং বিশিষ্ট লোকশিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার নবম শ্রেনির এক ছাত্রী জগদীশ রাযয়ের কাছে গান শিখতেন। সেই সুযোগ নিয়ে ওই ছাত্রীকে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে জগদীশ। ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারলে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) স্থানীয় থানায় অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর বাবা। এর একদিন পরেই উদ্ধার হলো অভিযুক্ত জগদীশ রায়ের মরদেহ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে খড়িবাড়ি থানার পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় চার মাস আগে ওই তৃণমূল নেতা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এতদিন পর ঘটনাটি জানাজানি হলে হয়তো লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছেন তৃণমূল নেতা।

  সালতামামি

;

শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সহিংসতার কয়েকটি ভিডিও বিশ্লেষণ করে এমন প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পুনর্বাসন করার দাবি জানায় সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, আন্দোলন-সহিংসতার প্রেক্ষাপটে কারফিউ জারি এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এর মধ্যে যেসব ভিডিও এবং আলোকচিত্র পাওয়া যায়, সেগুলো যাচাই–বাছাই ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অ্যামনেস্টি ও এর ক্রাইসিস অ্যাভিডেন্স ল্যাব বিক্ষোভ দমনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আইনবহির্ভূতভাবে প্রাণঘাতী ও কম প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের তিনটি ঘটনার ভিডিও যাচাই করেছে।

এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জ্যেষ্ঠ পরিচালক দেপোরসে মুচেনা বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা ভিডিও এবং আলোকচিত্র অব্যাহতভাবে যাচাই করে ভয়াবহ চিত্র পাওয়া যাচ্ছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকার ও এর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর প্রতি বিক্ষোভের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, সহিংস দমনাভিযান এবং যোগাযোগব্যবস্থার ওপর সব ধরনের বিধিনিষেধ অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছে।

ঢাকার সাভার, বাড্ডা ও রামপুরা এলাকায় সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে ধারণ করা তিনটি ভিডিও যাচাই করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলেছে, সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যথাযথ উপায় নয়। আগ্নেয়াস্ত্র শুধু তখনই ব্যবহার করা যাবে, যখন মৃত্যু ঘটতে পারে বা গুরুতর আহত হওয়ার মতো হুমকি মোকাবিলার প্রয়োজন হয়।

  সালতামামি

;

পাকিস্তান তার ইতিহাস থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি: মোদি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কার্গিল বিজয় দিবসের রজত জয়ন্তী উদযাপন করছে ভারত। এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ জুলাই) কার্গিল যুদ্ধে নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আয়োজিত স্মরণসভায় মোদি বলেন, পাকিস্তান তার ইতিহাস থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। যে কোনও সন্ত্রাসবাদী হামলা ব্যর্থ করবে ভারত।

শুক্রবার সকালে লাদাখে ‘কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়ালে’পৌঁছে কার্গিল যুদ্ধে শহিদ বীর সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মোদি। এসময় যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের অবদান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জন্য তাদের আত্মত্যাগ অমর। কার্গিল বিজয় দিবসে তাদের সর্বদা স্মরণ করা হবে।

পাকিস্তান এখনও জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে দাবি করে মোদি বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসবাদের প্রভুদের বলব, ওদের অপচেষ্টা কখনই সফল হবে না। শত্রুদের যোগ্য জবাব দেব। লাদাখ বা ​​জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নের পথে আসা প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে হারাবে ভারত। পাকিস্তান তার ইতিহাস থেকে কিছুই শিক্ষা নেয়নি। তারা সন্ত্রাসবাদ এবং ছায়া যুদ্ধ ব্যবহার করে। আমি আজ এমন একটি জায়গা থেকে কথা বলছি, যেখানে সন্ত্রাসবাদীরা সরাসরি আমার কথা শুনবে। আমি তাদের বলতে চাই, তাদের পরিকল্পনা কখনই সফল হবে না। লাদাখ হোক বা ​​জম্মু ও কাশ্মীর, আমরা উন্নয়ন চালিয়ে যাব।’

এর আগে এদিন সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘২৬ জুলাই প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য একটি বিশেষ দিন। এবার আমরা ২৫তম কার্গিল বিজয় উদযাপন করব। আমাদের দেশকে যারা প্রাণ দিয়ে রক্ষা করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই বিশেষ ভাবে পালিত হচ্ছে আজকের এই দিন।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রায় তিনমাস যুদ্ধের পর কার্গিলে ভারতের দিকে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীদের দখল করা অংশ পুনরুদ্ধার করে অভিযানের বিজয়ের সাফল্য ঘোষণা করে। যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জয়কে স্মরণ করতে দিনটিকে কার্গিল বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে দেশটি।

 

  সালতামামি

;