১২ জুলাই পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হবে কেজরিওয়ালকে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আরো ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকতে হবে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। এমনটাই রায় দিয়েছেন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত।

সিবিআইয়ের আবেদন শনিবার (২৯ জুন) মঞ্জুর করেছেন বিচারক। ওই আবেদনে কেজরিওয়ালকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা-সিবিআই।

উল্লেখ্য, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।

তিন দিন আগে গত ২৬ জুন একই মামলায় আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানকে আদালতে গিয়ে গ্রেফতার করে সিবিআই। তারা তাকে তিনদিনের হেফাজতেও নিয়েছিল।

সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শনিবার কেজেওেয়ালকে আদালতে হাজির করানো হয়। তখর আরও ১৪ দিন তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

তাই আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে তিহার জেলেই থাকতে হবে। হেফাজতের মেয়াদ শেষ হলে ওই দিন দুপুর ২টা নাগাদ জেল থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আবার কেজরিওয়ালকে আদালতে হাজির করানো হবে।

শনিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের বিচারক সুনেনা শর্মার বিশেষ বেঞ্চে কেজরিওয়ালের মামলাটি উঠে। সিবিআই জানায়, তদন্তের অগ্রগতি এবং প্রকৃত ন্যায় বিচারের স্বার্থে কেজরিওয়ালের আরো কিছু দিন হেফাজতে থাকা প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় এই সংস্থা আরো জানায়, তিন দিন তাদের হেফাজতে থাকাকালীন কেজরিওয়ালের তদন্তে সহযোগিতা করেননি, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। এমনকি, তিনি প্রমাণের বিরোধিতাও করেছেন।

শুনানির পরে রায় দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। এরপর শনিবার বিকালে রায় ঘোষণা করা হয়।

সমুদ্রে সাঁতার কাটা উপভোগ করছে ছয় পায়ের কুকুর ছানাটি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: ছয়টি পা ও একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করা কুকুর ছানা এরিয়েল

ছবি: ছয়টি পা ও একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করা কুকুর ছানা এরিয়েল

  • Font increase
  • Font Decrease

জীব বৈচিত্র্যময় এই বিশ্বে কত কিছুই-না দেখা যায়। তেমনই ছয়টি পা ও একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল একটি কুকুর ছানা। নাম তার এরিয়েল। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য মালিক তাকে ফেলে আসে রাস্তায়। এরপর কুকুর ছানাটি আশ্রয় পায় নতুন একটি পরিবারে। নতুন সেই বাড়িতে বেশ ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে এরিয়েল। সেখানে সমুদ্রে সাঁতার কাটা, প্যাডেল বোডিং ও সার্ফিং উপভোগ করছে বলে জানায় তার নতুন মালিক। স্কাই নিউজের এক খবরে এমন তথ্য জানানো হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বেরে ওয়েলসের পেমব্রোকেশায়ার শহরের একটি বিএন্ডএম স্টোরের সামনে পাওয়া যায় এরিয়েলেকে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। হ্যাভারফোর্ড ওয়েস্টের স্থানীয় রেসকিউ টিম গ্রিনক্রেস তাকে উদ্ধার করে। আদরে এই কুকুর ছানা ছয়টি পা, দুইটি ভাল্ব ও একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল।

এরিয়েলের নতুন মালিক অলি বার্ড পশ্চিম ওয়েলসে একটি সার্ফ স্কুল চালান। ৪০ বছর বয়সী ওই লোক পশ্চিম ওয়েলসের সমুদ্র সৈকতের (ফ্রেশওয়াটার ওয়েস্ট) কাছাকাছি বসবাস করেন।

এই কুকুর ছানা ছয়টি পা, দুইটি ভাল্ব ও একটি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে

তিনি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘সম্ভবত ওয়েলসে আমরা একমাত্র পরিবার যারা এরিয়েলকে দত্তক নেওয়ার সময় তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে গুরুত্ব দেইনি।’

তিনি জানান, এমন একটি সময় তারা এরিয়েলেকে পান যখন তারা কুকুর হারানোর শোক কাটানোর চেষ্টা করছিলেন। ১৩ বছর ধরে তারা সমুদ্রের কাছে কুড়িয়ে পাওয়া একটি কুকুর ছানা পালন করে আসছিলেন। কিন্ত দুর্ভাগ্যবশত সেই কুকুরটি মারা যায়। শোকের এই সময়ে তারা আবার এরিয়েলকে দত্তক হিসেবে পান।

মি. বার্ড বলেন, ‘পুরো ৪৮ ঘণ্টা আমরা কুকুর ছাড়া ছিলাম, বাড়িটি খালি খালি লাগছিল। কুকুরের জন্য গ্রিনক্রেস্টে আবেদনও করেছি। কিন্তু ভেবেছিলাম হয়তো আর কুকুর পাওয়া যাবে না। তবে তখনই গ্রিনক্রেস্ট আমার জন্য সুখবর নিয়ে আসে। এরিয়েলের সাথে আমাদের পরিচয় হয়। তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা জানলেও আমরা আনন্দিত ছিলাম।’

মি. বার্ড বলেন, ‘এরিয়েল নতুন বাড়িতে বেশ ভালোভাবে মানিয়ে নিয়েছে। আমারা যেখাই যাই এরিয়েল আমাদের সঙ্গে যায়, সে খুব ভালো হাটতেও পারে। তবে লম্বা পথ হাটতে হলে তাকে বারবার বিশ্রামের জন্য বিরতি দিতে হয়। এজন্য কুকুর ছানাটি বহনের জন্য একটি ব্যাগ সঙ্গে রাখি। সে সমুদ্রে সাঁতার কাটা, প্যাডেল বোডিং ও সার্ফিং উপভোগ করছে। এরিয়েল একটি কোমল বাচ্চা, সে স্থির হয়ে বসে থাকতে এবং সমুদ্র দেখতে পছন্দ করে।’

এরিয়েলকে যখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তখন তার জন্য ১৫ হাজার পাউন্ডের বেশি অনুদান সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশী প্রায় ২২ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৭ টাকা। তাদেরকে সাহায্য করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এরিয়েলের নতুন পরিবার।

ওয়েলস একটি ভিন্ন দেশ হলেও এটি যুক্তরাজ্যের অংশ। আর পেমব্রোকেশায়া হলো ওয়েসের সবচেয়ে জনবহুল শহর।

;

যে কারণে ৩ বছরে ৩ প্রধানমন্ত্রী দেখলো যুক্তরাজ্য



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: এনডিটিভি

ছবি: এনডিটিভি

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাজ্যে প্রায় পাঁচ বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতার ধারাবাহিকতায় কনজারভেটিভ পার্টির এমপিদের সমর্থনে দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে ২০২২ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঋষি সুনাক। এর আগে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টিতে অস্থিরতার কারণে পরপর দুইজন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। যার ফলে গত তিন বছরে তিনজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন দেশটির জনগণ।

এদিকে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে আগামী বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ভোট দিবেন দেশটির জনগণ। আর মাত্র ৩ দিন পরেই ভাগ্য নির্ধারিত হতে যাচ্ছে দেশটির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির। ব্রিটিশ ভোটাররা বেছে নিতে চলেছেন তাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে।

নির্বাচনে কেইর স্টারমারের নেতৃত্বে বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টির ঐতিহাসিক জয় এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ১৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে প্রায় সবগুলো জরিপ।

প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক লেবার পার্টির ভূমিধস বিজয় রোধ করতে রক্ষণশীলদের প্রতি ভোটারদের বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এছাড়া রিফর্ম ইউকে, গ্রিনস এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের মতো ছোট দলগুলো প্রধান দুই দলের প্রতি অসন্তোষকে পুঁজি করে সুইং ভোটার বা ভাসমান ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।

নির্বাচন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। যুক্তরাজ্য গত তিন বছরে তিনজন প্রধানমন্ত্রী দেখেছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে ঋষি সুনাক দায়িত্ব নেওয়ার আগে যুক্তরাজ্য রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় জর্জরিত ছিল। তার আগে বরিস জনসন এবং লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।

২০১৯ সালের ২৪ জুলাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বরিস জনসন। ২০২২ সালের ৭ জুলাই পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পার্টিগেটসহ নানান কেলেঙ্কারির কারণে মন্ত্রীদের গণবিদ্রোহের কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

করোনা লকডাউনের সময় বিধিভঙ্গ করে মদপার্টির আয়োজনের ঘটনায় সৃষ্ট বিতর্কের ঘটনাকে পার্টিগেট কেলেঙ্কারি বলা হয়ে থাকে।

২০২১ সালের শেষের দিকে অভিযোগ ওঠে লকডাউনের ওই সময় লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিকবার নিজের বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীসহ মদপার্টির উদযাপন করেছেন। পুলিশি তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা মেলার পর এটি পরিচিতি পায় ‘পার্টি গেট কেলেঙ্কারি’ নামে এবং এই কেলেঙ্কারির জেরে ২০২২ সালের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ৫৮ বছর বয়সি বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে বরিস জনসনই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় বিধিলঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এবং তার জেরে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে।

পার্টিগেট কেলেঙ্কারির বিষয়ে বিশেষাধিকার কমিটির তদন্তের পরে তিনি ২০২৩ সালের ৯ জুন এমপি পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।

জনসনের পদত্যাগের পর, লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে জয়ী হয়ে ব্রিটেনের চতুর্থ মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন।

তিনি ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর এ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৫০ দিন পর ব্রিটিশ ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতি টানতে হয় তাকে।

ট্রাস সরকার যেভাবে অর্থনীতি পরিচালনা করেছে তার জন্য সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এসবের মধ্যে একটি হলো বিতর্কিত মিনি-বাজেট। যা বাজারের অস্থিরতা এবং জনসাধারণের বিশ্বাসকে ভেঙে দিয়েছিল। নীতির উপর ধারাবাহিক পরিবর্তন এবং তার এমপিদের মধ্যে আস্থা হারানোর কারণে তার নেতৃত্বকে আরও ক্ষুণ্ন হয়।

কনজারভেটিভ পার্টি বিশৃঙ্খলার কারণে কিছু এমপি ট্রাসের পদত্যাগের আহ্বান জানান এবং অন্যরা নেতৃত্বের পরিবর্তনের দাবি করেন। ফলে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ঋষি সুনাক নির্বাচিত হন।

;

প্রবল বৃষ্টির পর রাস্তায় ৮ ফুট লম্বা কুমির, ভিডিও ভাইরাল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বেশ কয়েকদিন ধরেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এই বৃষ্টির মধ্যে এক অদ্ভুত দৃশ্যের দেখা মিলেছে দেশটির মহারাষ্ট্র প্রদেশে। ভারী বৃষ্টিপাতের পর মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলায় রাস্তায় একটি বিশাল আকারের কুমিরকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন।

সোমবার (১ জুলাই) ভারতীয় গণমাধ্যম জি টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারী বৃষ্টিপাতের পর মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলায় রাস্তায় একটি ৮ ফুট লম্বা কুমিরকে চলাচল করতে দেখা যায়। গাড়িতে বসে থাকা এক যাত্রীর তোলা একটি ভিডিওতে চিপলুনের রাস্তায় এই সরীসৃপটিকে হাঁটতে দেখা গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, কুমিরটি নিকটবর্তী শিব নদী থেকে উঠে এসেছিল। বৃষ্টির কারণে কুমিরটি ভেসে এসেছে বা নদীর পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে সড়কে এসেছে বলেও অনেকে ভাবছেন। এই নদীতে অনেক কুমিরের বসবাস রয়েছে।

এদিকে এই ঘটনায় এলাকাবাসীকে কুমির সম্পর্কে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে এবং কোথাও কুমির দেখতে পেলে কর্তৃপক্ষকে খবর দিতে বলা হয়েছে।

৪০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বর্ষণমুখর রাতের রাস্তায় কুমিরটি হেঁটে বেড়াচ্ছে। সোমবার এই ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এর আগে ২০১৯ সালে রত্নাগিরিতে এরকম আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। তখন ৮ ফুট লম্বা একটি কুমিরকে লোকালয়ে দেখা গিয়েছিল। পরে উদ্ধারকারী দল চিপলুনের পর্যটন কেন্দ্রে ড্রেন থেকে সরীসৃপটিকে উদ্ধার করে।

উল্লেখ্য, রত্নাগিরি ভারতবর্ষীয় কুমিরের জন্য পরিচিত। নোনা জল এবং ঘড়িয়াল কুমির ব্যতীত এটি ভারতের তিনটি কুমির প্রজাতির মধ্যে একটি।

;

প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতি চীনের যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
চীনের সামরিক বাহিনী

চীনের সামরিক বাহিনী

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, অপরদিকে চীনের নেতৃত্বে রোড অ্যান্ড বেল্ট উদ্যোগসহ একাধিক বৈশ্বিক উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে। এমন সময় চীনের প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির খবর দেশটির যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দশকব্যাপী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেখানে খবর চীনের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফু ও ওয়েই ফেংহেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। এনিয়ে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) উচ্চপদে অস্বস্তি শুরু হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র সাত মাস দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালের অক্টোবরে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফুকে এবং পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালে সরিয়ে দেওয়া হয় ওয়েই ফেংহেকে। ইতোমধ্যে দুর্নীতির তদন্তের পর ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি থেকে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও বলা হয়, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফু ও ওয়েই ফেংহেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত দেশটির সেনাবাহিনী করছে বলে, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেইজিংয়ের স্থানীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে।

সিএনএন জানায়, গত গ্রীষ্মের পর থেকে চীনের প্রতিরক্ষা বিভাগে শুদ্ধি আভিযানে বাদ যাওয়াদের মধ্যে এই দুজনই সবচেয়ে বড় মাথা। এছাড়াও সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স থেকে এক ডজনেরও বেশি সিনিয়র জেনারেল এবং নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছেন এবং বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলো দখলে আনতে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করছেন। এমন একটা সময় প্রতিরক্ষায় দুর্নীতিকে চীনের দুর্বল দিকই ফুটে উঠছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্লেষকদের মতে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দুর্নীতিবিরোধী প্রচারাভিযান সত্ত্বেও সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ স্তরের এমন দশা দুর্নীতি প্রতিরোধে বাধার হয়ে দাঁড়ায়।

সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের একজন গবেষণা ফেলো জেমস চার বলেছেন, যদিও শি জিনপিং দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কিছুটা সাফল্য অর্জন করেছে। তবে এটি কঠিন, তাই দুর্নীতি অব্যাহত থাকবে।

অস্ত্র সংগ্রহে দুর্নীতি

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি-পিএলএ-কে যুদ্ধের জন্য বিশ্বমানের শক্তিতে রূপান্তর করার জন্য প্রেসিডেন্ট শিং জিনপিং সরঞ্জাম কেনা এবং আধুনিক করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঢেলেছে। শিং জিনপিং রকেট ফোর্স তৈরি করেছেন, এটি এমন একটি অভিজাত শাখা যা দেশের দ্রুত সম্প্রসারিত পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের তদারকি করে।

সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফু ও ওয়েইসহ গত বছর ব্যাখ্যা ছাড়াই বরখাস্ত বা নিখোঁজ হওয়া বেশিরভাগ জেনারেলই রকেট ফোর্স বা সামরিক সরঞ্জামের সাথে যুক্ত ছিলেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার আগে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হওয়া সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি সাংফু পাঁচ বছর পিএলএ এর সরঞ্জাম উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ছিলেন। পিএলএ সদর দফতরে পদায়ন হওয়ার আগে ৬৬ বছর বয়সী লি চীনের রকেট এবং স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে কয়েক দশক দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কাটিয়েছেন। তিনি একজন প্রকৌশলীও।

৭০ বছর বয়সী ওয়েই রকেট ফোর্সের উদ্বোধনী কমান্ডার ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের শেষের দিকে পিএলএ আসার আগে কয়েক দশক ধরে কাজ করেছেন সেকেন্ড আর্টিলারি কর্পস ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীতে। রকেট ফোর্সে ওয়েই এর দুই উত্তরাধিকারীকেও আভিযানে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ঘোষণার পর লির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো স্পষ্টভাবে অস্ত্র সংগ্রহে দুর্নীতির দিকে ইঙ্গিত করে।

চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষ নেওয়া, দেওয়া এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি লির বিরুদ্ধে সামরিক সরঞ্জাম খাতের নিয়মকানুনে মারাত্মক অনিয়মের অভিযোগও আনা হয়েছে।

মার্কিন পেন্টাগনের অর্থায়নে চলা ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির সিনিয়র গবেষক জোয়েল উথনো বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলো যে অস্ত্র তৈরি করে তার সঙ্গে পিএলএর সংগ্রহ ব্যবস্থার মধ্যে যোগসাজশ নির্দেশ করে। আমরা জানি কিছু যোগসাজশ আছে, কিন্তু এটা স্পষ্ট নয় - এবং সিসিপি এটা স্বীকার করবে না।

তিনি আরও বলেন, যেসব অস্ত্র কেনায় দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, সেসব অস্ত্র যদি নিম্নমানের প্রমাণিত হয়, তা হবে শিং জিনপিংয়ের জন্য ভয়ংকর খবর। কারণ তখন কেবল নৈতিকতা নয়, প্রকৃত সামরিক প্রস্তুতি নিয়েও সন্দেহ তৈরি হবে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, পিএলএ-র ক্রয় ব্যবস্থায় সমস্যা বহু বছরের পুরোনো।

২০১৮ সালে চীনের নেভাল ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাডিতে দেখা গেছে, নৌবাহিনীর সরঞ্জাম সংগ্রহ কেন্দ্র এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন পিএলএ এর সরঞ্জাম সংগ্রহে বিড কারচুপির বিশ্লেষণ করেছে। তারা তখন পিএলএ এর বিডিং ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।

;