মসজিদে কুবায় নয় মাসে ১ কোটি ৯০ লাখ মুসল্লি
নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই মসজিদের নাম। হিজরতের সময় সময় তিনি এখানে যাত্রাবিরতি করেন, যা সময়ের সঙ্গে অমর হয়ে আছে এবং কেয়ামত অবধি থাকবে।
মদিনার কুবার অনেক ফজিলত, এখানে দুই রাকাত নামাজে এক উমরা পালনের সমান সওয়াব রয়েছে। এটি মদিনার অন্যতম প্রধান নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনীয় স্থান।
ঐতিহাসিক এই মসজিদে গত নয় মাসে ১ কোটি ৯০ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায়ের জন্য এসেছেন।
সম্প্রতি সৌদি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মদিনার মসজিদে কুবায় ১ কোটি ৯০ লাখেরও বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন।
কুবা মসজিদে ২০২৪ সালের শুরু থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি ও নফল নামাজ আদায় করেছেন। এখানে আগতরা অসাধারণ সব সেবা পেয়ে থাকেন। আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা বাড়াতে এ মসজিদে নামাজ আদায় ও পরিদর্শন করে থাকেন তারা। মসজিদে কুবার রয়েছে ১৪০০০ বর্গমিটার সুসজ্জিত চত্বর। যেটি পরিদর্শনকারীদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ দেয়।
এ মসজিদে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের জন্য সার্বক্ষণিক ৬টি বিশেষ বাহন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মসজিদ ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে ৮ হাজার বর্গমিটার নতুন কার্পেটিং করা হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার লিটার জমজম পানি মজুদ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মসজিদে অত্যাধুনিক লাইটিং ইউনিট যুক্ত করা হয়েছে, যা ভিজ্যুয়াল শৈলিকে অসাধারণ করে তুলে। এ কারণেই মসজিদে কুবা অনন্য এক জায়গা।
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত লাভের পর এটাই প্রথম মসজিদ। এমনকি ইসলামের ও উম্মতে মুহাম্মদির প্রথম মসজিদ। নবী কারিম (সা.) এই মসজিদ নিজ হাতে নির্মাণ করেছিলেন। এটি নির্মিত হয় হিজরতের প্রথম বছর। মসজিদে হারাম, মসজিদে নববি আর মসজিদে আকসার পরই মসজিদে কুবার সম্মান ও ফজিলত। এ মসজিদের আলোচনা কোরআনে কারিমে করা হয়েছে। মসজিদ সংলগ্ন অধিবাসীদের ‘পবিত্র থাকার’ বিশেষ গুণের প্রশংসা করা হয়েছে।
মসজিদে কুবায় নামাজ আদায়ে অত্যাধিক ফজিলত রয়েছে। মসজিদে কুবায় নামাজের ফজিলতের কথা অসংখ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) অশ্বারোহণ করে কিংবা হেঁটে মসজিদে কুবায় আগমন করতেন এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি নিজের ঘরে পবিত্রতা অর্জন করল, অতঃপর কুবা মসজিদে এসে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ল, তার জন্য এক উমরার সমান সওয়াব রয়েছে। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৪১২
বর্তমানে মসজিদে কুবায় সম্প্রসারণ কাজ চলছে। সম্প্রসারণ শেষে, মসজিদের আয়তন হবে ৫০ হাজার বর্গমিটার, যাতে প্রায় ৬৬ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এটি বর্তমান ধারণক্ষমতার দশ গুণ বেশি। বর্তমানে মসজিদের আয়তন সাড়ে ১৩ হাজার বর্গমিটার। মসজিদটিতে রয়েছে ৬২টি গম্বুজ, ৪টি মিনার।