মিন্নি খালাস পাবেন আশা আইনজীবীর, সর্বোচ্চ শাস্তি চান রিফাতের বাবা
রিফাত হত্যাকাণ্ডবরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় সাক্ষী থেকে আসামি বনে যাওয়া নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি খালাস পাবে মর্মে আশাবাদী তার আইনজীবী বরগুনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলাম। তবে নিহত রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ মিন্নির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মামলাটিতে ১০ আসামির রায়ের জন্য দিন ধার্য আছে। এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ২৪। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ১৪ আসামির বিচার শিশু আদালতে চলছে। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ন্যায় বিবেচনায় আদালত যা রায় দিবেন তা-ই চুড়ান্ত। আদালতের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তবে মিন্নির আইনজীবী হিসাবে আমি মনে করি, প্রসিকিউশন মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। বরং আমরা আদালতকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছি মিন্নি কিভাবে তার স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছেন। সে কোনভাবেই খুনের সাথে জড়িত নয়। রায়ে মিন্নি খালাস পাবে মর্মে আমরা আশাবাদী।
তবে যুক্তিতর্ক শেষের দিন নিহত রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের ওপর আমার আস্থা আছে। আশাকরি আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাবো।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার মাস্টার মাইন্ড আমার ছেলের সাবেক স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আমি আশা করি।
এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, মো. মুসা, নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর ও কামরুল ইসলাম সাইমুন। আসামিদের মধ্যে মো. মুসা পলাতক আছেন।
রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে চার্জশিটেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে রিফাত ফরাজী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
একই ঘটনায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামি যশোরে কিশোর সংশোধনাগারে আছে। শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান চার্জশিটের ২৪ আসামির মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিলেন।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি পৃথক চার্জশিট দেয় পুলিশ।
২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে ওইদিনই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।