রিফাত হত্যা মামলা: রায়ের কপি পেয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে মিন্নির বাবা

  রিফাত হত্যাকাণ্ড
  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রিফাত হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।

শনিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পেয়েছেন মিন্নির বাবা। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে মিন্নিই ছিলো রিফাত হত্যার মূল হোতা।

বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে মিন্নির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বার্তা২৪.কম-কে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়ের কপি আজ সন্ধ্যার দিকে হাতে পেয়েছি । রায়ের কপি নিয়ে মিন্নির বাবা আজ রাতেই ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়ে গেছেন। আগামীকালই উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য আবেদন করবেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ছয় আসামির সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। এ হত্যার ঘটনায় পুলিশ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলেও তার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচার চলে এ আদালতে।

বিজ্ঞাপন

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৪), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২২), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (২০), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৩), মো. হাসান (২০) ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (২০)।

এছাড়াও মামলার অপর চার আসামি রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২১), মো. সাগর (২০), মো. মুসা (২৩) ও কামরুল ইসলাম সাইমুনকে (২২) খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর মিন্নিসহ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে বরগুনা জেলা কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। এই কনডেম সেলে রিফাত হত্যার ছয় আসামি ছাড়া অন্য কোনো বন্দিই নেই বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।

গত বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে কিশোর গ্যাং বন্ড বাহিনী কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রিফাত শরীফকে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকেলেই বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন রিফাত। পরদিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা মো. আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ছয় দিন পর ২ জুলাই ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন এ মামলার আলোচিত প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড।

তদন্ত শেষে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই ভাগে বিভক্ত করে দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামি এবং ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় অভিযোগপত্রে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। পরে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার শুরু হয়। ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার ৭৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেন আদালত। ১৬ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়।