শুরু থেকেই জানতাম মিন্নি ছিল নাটের গুরু: রিফাতের বাবা

  রিফাত হত্যাকাণ্ড
  • শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রিফাতের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ

রিফাতের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ

বরগুনা থেকে: আমরা প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিলাম। মিন্নি ছিল নাটের গুরু। কিন্তু কে বিশ্বাস করবে তখন আমাদের কথা। আদালতের এই রায়ে আজ তা দিনের আলোর মতো স্পট হয়ে গেল। এই মিন্নির ষড়যন্ত্রে আমার ছেলে রিফাতের প্রাণ গেছে।

বরগুনা জেলা জজ আদালত চত্বরে রায়ের পরে প্রতিক্রিয়া বার্তা২৪.কম-কে এসব কথা বলেন নিহত রিফাতের বাবা আ. হালিম দুলাল শরীফ।

বিজ্ঞাপন

দুলাল শরিফ বলেন, আমার ছেলের হত্যা মামলার রায়ে আমি সন্তুষ্ট। আমরা প্রথম থেকেই জানতাম মিন্নি ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূলে। তার ষড়যন্ত্রে পরিকল্পনায় আমার ছেলেকে হত্যা করেছে নয়ন বন্ডসহ অন্যরা। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার পেয়েছি।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর)  বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শাসিদ্দিকা মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসির নির্দেশ দেন আদালত। বাকি চার আসামিকে খালাস দিয়েছেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। 

বিজ্ঞাপন

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৪), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২২), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (২০), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২৩), মো. হাসান (২০) ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (২০)। আসামিদের মধ্যে মো. মুসা পলাতক আছেন। মুসা ছাড়া অন্য আসামিদের উপস্থিতিতেই এ রায় ঘোষণা করা হয়। 

এছাড়াও মামলার অপর চার আসামি রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২১), মো. সাগর (২০), মো. মুসা (২৩)  ও কামরুল ইসলাম সাইমুনকে (২২) খালাস দেওয়া হয়েছে।

রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড (২৫) বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে চার্জশিটেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে রিফাত ফরাজী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

একই ঘটনায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামি যশোরে কিশোর সংশোধনাগারে আছে। শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান চার্জশিটের ২৪ আসামির মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছিলেন। এদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকা ও অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকা ও আসামিদের পালাতে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে কারাগারে আটক আট আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এছাড়াও বাবার সঙ্গে আদালতে হাজির হন এ মামলায় জামিনে মুক্ত থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। এক আসামি পলাতক আছেন।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি পৃথক চার্জশিট দেয় পুলিশ।

গত বছরের ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে ওইদিনই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।