কোরবানির ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল ফরিদের
সীতাকুণ্ডে ডিপোতে আগুন

ফরিদুজ্জামান ফরিদ
শনিবার (০৪ জুন) সন্ধ্যায় শেষবারের মতো মোবাইলে কথা হয় ছেলে ফরিদুজ্জামান ফরিদেরের সঙ্গে বাবা সাইফুল ইসলামের। এ সময় ফরিদ তাকে বলেছেন, এবার কোরবানির ঈদ বাবা-মায়ের সঙ্গে করতে বাড়ি আসবেন। একটি খাসি কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান ফরিদ। কিন্তু চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নেভাতে গিয়ে নিখোঁজ ফায়ার ফাইটার ফরিদুজ্জামান ফরিদের সন্ধান এখনএ মেলেনি।
একমাত্র ছেলে নিখোঁজের খবরে ফরিদের বাবা সাইফুল ইসলাম ও মা ফুলমতি বেগম বারবার জ্ঞান হারিয়ে মুর্ছা যাচ্ছেন। তাদের বুক ফাটা আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে এলাকার বাতাস ।
ফরিদের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামে। দুই ভাইবোনের মধ্যে ফরিদ বড়। ছোট বোন সাবিহা আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
ফরিদের চাচা তোতা মিয়া জানান, ফরিদের বাবা সাইফুল ইসলাম ভ্যান চালিয়ে তাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। দু বছর আগে ফরিদ ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। ছেলে চাকরি করলেও তার বাবা ভ্যান চালানো বন্ধ করেননি। ইচ্ছে ছিল, ছেলে আরও একটু স্বাবলম্বী হলে ভ্যান চালানো বন্ধ করে দেবেন।
চট্টগ্রামের কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নয়জন ফায়ার ফাইটারসহ এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এঘটনায় এখনও নিখোঁজ আছেন চারজন ফায়ার ফাইটার, তাদের মধ্যে ফরিদও আছেন।
রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফরিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ফরিদুজ্জামান ফরিদ সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন । অগ্নিকাণ্ডের পর পরই আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ফরিদও গিয়েছিল। এরপর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।