বইমেলার যত দৃষ্টিনন্দন ও পরিবেশবান্ধব স্টল

  ‘এসো মিলি প্রাণের মেলায়’
  • কানজুল কারাম কৌষিক, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার। এর পরই পর্দা উঠছে বাঙালির প্রাণের মেলা, ঐতিহ্যের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪ এর।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন এই বইমেলা। বইমেলার সকল স্টলের সাজসজ্জার কাজ প্রায় শেষ। মেলায় এবার রয়েছে নজর কেড়ে নেওয়ার মত বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন সুসজ্জিত স্টল ও পরিবেশবান্ধব 'ইকো স্টল'।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় বিভিন্ন আঙ্গিকে সাজসজ্জার কাজ করা হয়েছে স্টলগুলোতে। আবার বেশ কিছু স্টল ডিজাইন করা হয়েছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নির্মাণ সামগ্রীর সাহায্যে।


মেলায় নজর কেড়ে নেওয়ার মতো স্টলগুলো হলো অন্যপ্রকাশ, আকাশ প্রকাশনী, সময় প্রকাশন, মিজান পাবলিশার্স, ক্রিয়েটিভ ঢাকা পাবলিকেশনসসহ আরও বেশ কিছু স্টল। পরিবেশবান্ধব ইকো স্টলগুলোও মেলার সৌন্দর্য বর্ধন করছে। এছাড়াও রয়েছে কোয়ান্টাম, সংহতি, গল্প ভয়েজ, জাগৃতিসহ আরও কিছু ইকো স্টল।

বিজ্ঞাপন

সংহতি এবং জাগৃতি প্রকাশনীর স্টলগুলো সাজানো হয়েছে সম্পূর্ণ পাটের সামগ্রীর দিয়ে। কোয়ান্টাম এবং গল্প ভয়েজ সাজানো হয়েছে বাঁশ-কাঠ দিয়ে।

'কোয়ান্টাম' স্টলে কর্মরত একজন নির্মাণ শ্রমিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা বান্দরবানের লামা থেকে এসেছি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক তৈজসপত্র দিয়ে স্টল সাজানোর জন্যে। আমরা গাছের কাণ্ড, বাঁশসহ নানা সামগ্রী দিয়ে এই স্টল ডিজাইন করেছি।


'অন্যপ্রকাশ' এবার নতুনত্ব নিয়ে এসেছে স্টল ডিজাইনে। কিছুদিন আগেই বিশ্ব ঐতিহ্যে জায়গা করে নেয়া রিকশা পেইন্টকে তারা নিজেদের স্টল সাজাতে ব্যবহার করেছে। রিকশার আদলেই বড় করে করা হয়েছে স্টলের ফ্রেম। তাছাড়াও স্টলের দেয়ালে আঁকা রয়েছে নানারকম দৃষ্টিনন্দন রিকশাচিত্র।

আকাশ প্রকাশনী এবারও গতবারের মতই নিয়ে এসেছে একটি দো-চালা টিনের ঘর। মেলায় এ স্টলটি একেবারেই অন্যমাত্রার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। অনেকটা একই রকম স্টল মিজান পাবলিশার্সের। তারা লাল দালানের আঙ্গিকে দৃষ্টিনন্দন স্টল তৈরি করেছে।


'ক্রিয়েটিভ ঢাকা পাবলিকেশন্স'-এর স্টলটিও তাদের সাজসজ্জার মাধ্যমে জানান দেয় তাদের 'ক্রিয়েটিভ' কাজের। অন্য স্টলগুলো থেকে অনেকটাই আলাদা দেখতে এই স্টলটি। পুরোনো কিছু বই মেলে সাজিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে স্টলটির।

এদিকে, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি এবং সরকারের সহযোগী কিছু ইন্সটিটিউট এবং নানারকম সমাজসেবামূলক সংগঠনের স্টল।


সেখানেও চোখে পড়ার মত সুন্দর নান্দনিক ডিজাইনের বাহারি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের স্টলটি ডিজাইন করা হয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক দালানের আঙ্গিকে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টলটি ডিজাইন করা হয়েছে গ্রামীণ নানা রকম কারুকাজ করা সামগ্রী- ডালা, মাছ ধরার শাঁক দিয়ে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্টলও সাজানো হয়েছে বাঁশ দিয়ে। বাঁশের ব্যবহার প্রসঙ্গে কৌতুক করে লিখে রেখেছে তারা 'নিন্দকেরা যে বাঁশ দিয়েছে সেটাই বিক্রির ব্যবস্থা করেছে সেচ্ছাসেবীরা'। এছাড়াও এ প্রাঙ্গণে নজর কেড়েছে উন্মুক্ত লাইব্রেরির স্টলটি। এই স্টলে উন্মুক্ত লাইব্রেরির পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে স্টলে গাছের গুঁড়ি সাজানো হয়েছে কৃত্রিম উপায়ে।

এছাড়াও বইমেলায় শিশুদের জন্যে বিশেষ করে তৈরি করা হয়েছে শিশু প্রাঙ্গণ। সেখানে সিসিমপুর এর স্টল এবং স্টেইজটিও মেলার সৌন্দর্যবর্ধন করছে। সিসিমপুরের স্টলটি ছাড়াও শিশুদের জন্যে তৈরি প্রায় প্রতিটি স্টলই নানাবিধ রঙ ও হরেক রকম কার্টুন-চিত্রে সাজানো হয়েছে।

বইমেলায় স্টল সাজসজ্জার ব্যাপারে প্রকাশকগণ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বইমেলায় স্টল দেয় বাংলা একাডেমি, কিন্তু যার যার স্টলের সাজসজ্জার কাজ নিজেরাই করেছি আমরা। আমরা চাই, এবার বইমেলায় পাঠকরা এসে সুন্দর বইমেলা দেখুক এবং বই কিনুক।