এক শতাব্দী পর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে খেলাপি রাশিয়া
রুশ-ইউক্রেন সংঘাতরাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে দেশটির অর্থনীতির ওপর। বলশেভিক বিপ্লবের পর এই প্রথমবারের মতো সময়মত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি রাশিয়া। রোববার (২৬ জুন) দেশটির ঋণ পরিশোধ করার শেষ সময় ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক (নিউইয়র্ক) ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণ পরিশোধের রোববারের সময়সীমা মিস করায় রাশিয়া এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো তার বৈদেশিক ঋণে খেলাপি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৬ জুন ১০০ মিলিয়ন ডলারের সুদ পরিশোধ করার কথা ছিল রাশিয়ার। তবে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারের পরিবর্তে রুবলে শোধ করতে চেয়েছিল ক্রেমলিন, কিন্তু ঋণদাতাদের রুবলে অর্থ প্রদান করতে না পারায় ঋণ খেলাপের দায়ে পড়তে রাশিয়াকে। যা দেশটির মর্যাদার জন্য একটি বড় আঘাত।
রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ এ পরিস্থিতিকে একটি প্রহসন হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
শেষবার রাশিয়া ঋণ খেলাপি হয়েছিল ১৯১৮ সালে বলশেভিক বিপ্লবের সময়। যখন নতুন কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিন রাশিয়ান সাম্রাজ্যের ঋণ পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিলেন।
ইউক্রেন আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে রাশিয়া ডিফল্টের একটি অনিবার্য পথে বলে মনে হচ্ছে।
রাশিয়ান সরকার বলেছে, তারা তার সমস্ত অর্থপ্রদান সময়মতো করতে চায়। তবে ইউক্রেন আক্রমণের পরে রাশিয়াকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞার জালে জড়িয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি মিত্র দেশ। এর ফলে বিদেশে মজুত রাশিয়ান রিজার্ভের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অকেজো হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া এ ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে তা বিশ্ববাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা, পৃথিবীর অন্যতম প্রধান উৎপাদনশীল দেশ হওয়ার কারণে এর ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পৃথিবীব্যাপী দ্রব্যমূল্য এবং মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়িয়ে দিচ্ছে।