শ্রীলঙ্কার চলমান সংকটের জন্য দায়ী রাশিয়া: জেলেনস্কি
রুশ-ইউক্রেন সংঘাতকার্যত দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা। মিলছে না খাবার, ওষুধ, জ্বালানি। জনরোষ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এমন পরিস্থিতির জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের ফলে খাদ্যপণ্য বন্ধের কারণে শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) সিউলে অনুষ্ঠিত এশিয়ান লিডারশিপ কনফারেন্সে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, রাশিয়ার জন্যই বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য ও জ্বালানির জোগান ধাক্কা খাচ্ছে। এর ফলে ভুগতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোকে।
দ্বীপরাষ্ট্রটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, জোগান ধাক্কা খাওয়ায় খাদ্য ও জ্বালানির দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এর ফলে সমাজে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটেছে। কেউ জানে না এই পরিস্থিতি কতদিন চলবে।
জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধে ইউক্রেনকে ঘিরে ‘অর্থনৈতিক অবরোধ’ জারি করেছে রাশিয়া। অর্থাৎ, কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে খাদ্য বা জ্বালানির রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে রুশ সেনারা। যার ফলে প্রায় মাস তিনেক ধরে অবরোধ চলার পর সম্প্রতি ইউক্রেনের বন্দর থেকে শস্য রফতানিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে মস্কো।
ইউরোপের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ইউক্রেন। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বহু দেশে খাদ্যশস্য রফতানি করে কিয়েভ। সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রুশ হামলার জেরে খাদ্য, জ্বালানি বা আর্থিক কোনও না কোনও সংকটের মুখে পড়েছে ৯৪টি দেশের ১৬০ কোটি মানুষ। চরম দুর্দশা দেখা দিয়েছে আরও ১২০ কোটি মানুষের জীবনে। সবমিলিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধের ফলে ধাক্কা খেয়েছে গোটা দেশ।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। জনরোষ এড়াতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। জনতার ক্ষোভে চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে। গত সপ্তাহের শেষে রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নেয় সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে তা আগেই আঁচ করেছিলেন গোতাবায়া । তাই আগেভাগেই রাজপ্রাসাদ ছাড়েন তিনি। তারপর থেকে তার কোনও সন্ধান ছিল না। এমনও শোনা যায়, তিনি শ্রীলঙ্কার নৌসেনা শিবিরে লুকিয়ে রয়েছেন। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে সেনা বিমানে দেশ ছাড়েন গোতাবায়া।