৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  বিজয়ের ৫০ বছর



আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের হাজিরহাট এলাকায় জাফরগঞ্জ ব্রিজের পাশে রংপুর শহরের ব্যবসায়ী অশ্বিনী ঘোষসহ ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ব্রিজের ওপর দুই দিনে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। আমার বাবাকেও জাফরগঞ্জ ব্রিজের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনারা।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না জাফরগঞ্জ ব্রিজ বধ্যভূমির কথা। নিহতদের স্মরণে সেখানে নির্মাণ করা হয়নি কোনো নামফলক বা স্মৃতিস্তম্ভ। এমন আরও অনেক জায়গা রয়েছে, যা আজও সংরক্ষণ করা হয়নি।

আক্ষেপের সঙ্গেই কথাগুলো বললেন প্রজন্ম একাত্তর রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি দেবদাস ঘোষ দেবু।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রংপুরে পুরোপুরি সংরক্ষণের আওতায় আসেনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো। কিছু বধ্যভূমি সংস্কার করা হলেও অযত্ন আর অবহেলায় অরক্ষিতভাবে পড়ে থাকা বেশীর ভাগ বধ্যভূমি নিশ্চিহ্নের পথে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তারই রক্ষমাখা নীরব সাক্ষী বধ্যভূমি এবং গণকবরগুলো। এর মধ্যে কিছু জায়গা বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলেও অনেক জায়গা এখনো চিহ্নিতই করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরে ছোট-বড় অনেক বধ্যভূমি থাকলেও সরকারিভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে মাত্র ১৩টি। সেগুলো হলো- রংপুর টাউন হল, দখিগঞ্জ শ্মশান, সাহেবগঞ্জ, দমদমা, বালার খাইল, নব্দীগঞ্জ, লাহিড়ীরহাট, ঘাঘট নদী, নিসবেতগঞ্জ, জাফরগঞ্জ ব্রিজ, বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর এবং মিঠাপুকুর উপজেলার জয়রাম আনোয়ারা বধ্যভূমি। এছাড়াও জানা-অজানার মধ্যে রয়েছে মডার্ন সিনেমা হল, কুকুরুন বিল, নারিরহাট, শংকরদহ, বৈরাগীগঞ্জ, বলদিপুকুর, দেবীপুর, শিবগঞ্জ এলাকা বধ্যভূমি এবং রংপুর সেনানিবাস গণকবর। এসব দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা বধ্যভূমি আর কোন জায়গায় রয়েছে গণকবর। নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানানোর জন্য বেশির ভাগ বধ্যভূমিতে নেই তথ্য নির্ভর কোনো নামফলক ও শহিদদের তালিকা।


ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর বধ্যভূমি:

রংপুরের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে অন্যতম বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদাররা দুইটি ট্রেনে চড়ে রামনাথপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া ও কিসমত ঘাটাবিল এলাকার ঝাকুয়াপাড়া সংলগ্ন স্থানে আসে। এরপর তারা রামনাথপুর ও বিষ্ণুপুরে বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ সময় যারা বেঁচে যান তারা প্রাণভয়ে আশ্রয় নেন ঝাড়ুয়ার বিল-পদ্মপুকুর পাড়ে; কিন্তু রাজাকাররা ঝাড়ুয়ারবিল-পদ্মপুকুর পাড়ে সাধারণ মানুষের আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি টের পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে জানালে তারা সেখানে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে সবাইকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে বদরগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নে ঝাড়ুয়ার বিল বধ্যভূমি ও পদ্মপুকুর এলাকায় ২০১৪ সালে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

রংপুর টাউনহল বধ্যভূমি:

রংপুর শহরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা সবচেয়ে বেশি হত্যাকা­ণ্ড ঘটায় রংপুর টাউন হলে। এটাকে টর্চার সেল বানানো হয়েছিল। এটি ছিল পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতনের একটি প্রধান কেন্দ্র। এই টাউন হলে মেয়েদের ধরে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হতো এবং শেষে মেরে ফেলা হতো। এসব লাশসহ অসংখ্য মুক্তিকামী বাঙালির লাশ টাউন হলের পেছনের একটি কূপে ফেলে দেয়া হতো। গত বছর টাউন হল চত্বর বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে ওই কূপ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।


মডার্ন সিনেমা হল বধ্যভূমি

১৯৭১ সালের ১ মে ১৯ জন বাঙালি সেনা অফিসার ও সৈনিককে সেনানিবাস থেকে বের করে এনে রাত ১২টার দিকে সাহেবগঞ্জের এই মডার্ন সিনেমা হলের পেছনের বধ্যভূমিতে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এই বধ্যভূমি থেকে বেঁচে যান এক রিকশাচালক। নভেম্বরের ৮ তারিখে পাকিস্তানি সেনাদের এক দালাল জব্বার ওই রিকশাচালককে ন্যাপের কর্মী বলে ধরে নিয়ে যায়। তাকে মডার্ন সিনেমা হলে আটক রাখা হয়। এখানে তখন প্রায় সাড়ে ৩০০ বন্দীকে আটকে রাখা হয়েছিল। ১৩ দিন অমানুষিক নির্যাতনের পর তাদের সিনেমা হলের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একে একে জিনকি, মালেক, আলী হোসেন, ফারুক হোসেনসহ সবাইকে জবাই করা হয়। এরই এক ফাঁকে সেই রিকশাচালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

ঘাঘট নদতীরে নিসবেগঞ্জ বধ্যভূমি:

পাকিস্তানি বাহিনীর ২৩তম ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার ছিল রংপুর শহরের নিসবেগঞ্জ এলাকায়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ অবাঙালি পাকিস্তানি সেনা অফিসার লে. আব্বাসের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শহরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলে ২৮ মার্চ হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ তীর-ধনুক-বল্লম-লাঠি-দা-কুড়াল এবং বাঁশের লাঠি হাতে রংপুর সেনানিবাস আক্রমণের উদ্দেশ্যে ঘাঘট নদের তীরে জমায়েত হতে থাকে। এ সময় ক্যান্টনমেন্ট থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছোড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। ঘাঘট নদের পানি সেইদিন হাজারো শহিদের রক্তে লাল হয়ে যায়। এতে এই ঘাঘট নদের তীর একটি বৃহৎ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। এক সময় নিশবেতগঞ্জ সেতু এলাকার সর্বত্র মানুষের মাথার খুলি ও কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে শহীদদের স্মরণে রক্তগৌরব নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

দমদমা সেতু বধ্যভূমি:

রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে দুই মাইল দক্ষিণ-পূর্বে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে দমদমা সেতুর নিচে রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখের মধ্যরাতে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অধ্যাপক সুনীল বরণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন রায় এবং অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়কে বাসা থেকে বের করে আনে। পরে ক্যাম্পাসের ভিতরেই তাদের উপর শারীরীক নির্যাতন চালানো হয়। এই অবস্থায় অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়ের সহধর্মিণী মঞ্জুশ্রী রায় বাসা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বেরিয়ে আসেন। পরে পাকসেনারা  মঞ্জুশ্রী রায়-সহ অন্যান্য অধ্যাপকদের রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দমদমা ব্রীজ এর কাছে আনে এবং রাস্তা সংলগ্ন একটি বাঁশের ঝাঁড়ে গুলি করে হত্যা করে।


স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এই স্থানে আরও বহু মানুষকে ধরে হত্যা করে। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে- রংপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক ধরে এনে, ৭ই জন মধ্যরাতে এখানে জড় করে হত্যা করা হয়। এই দিনে প্রায় ২০০ লোককে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু মানুষকে এখানে এনে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে দায়িত্ব নেয়ার দীর্ঘ সময় পরেও বধ্যভূমি সংরক্ষণে তেমন উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দখিগঞ্জ শ্মশানঘাট বধ্যভূমি:

রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানঘাটে ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের দুটি মেস থেকে ১১ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকসেনারা এই ১১ জনকে দখিগঞ্জ শ্মশানে এনে গুলি করে। এই সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। দশ জনের লাশের সাথে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মরার মতো পড়ে থাকেন। পাকসেনারা সবাইকে মৃত মনে করে চলে গেলে, দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় শচীন ডাক্তারের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি ভারতে চলে যান এবং স্বাধীনতার পরে দেশে ফিরে আসেন। এই দলে মন্টু ডাক্তারের সঙ্গে ছিলেন রংপুরের ভাসানী ন্যাপ নেতা ইয়াকুব মাহফুজ আলী। এই বধ্যভূমিতে নামফলক ও শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

সাহেবগঞ্জ বধ্যভূমি:

রংপুর জেলখানা থেকে ১১ জন বন্দী ইপিআর সদস্যকে ধরে এনে হত্যা করে। হারাগাছ রোড ও সাহেবগঞ্জের মাঝামাঝি একটি স্থানে এই শহীদদের গণকবর রয়েছে।

রংপুর সেনানিবাস গণকবর:

রংপুর সেনানিবাসের পাশেই রয়েছে একটি গণকবর। এই গণকবরটিতে পাকিস্তানি বাহিনী বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং বাঙালি ইপিআর সদস্যসহ প্রায় ২০০ ব্যক্তির লাশ পুঁতে রেখেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর এখান থেকে প্রায় ১০ হাজার শহীদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১২ এপ্রিল হানাদাররা সৈয়দপুর থেকে বহু মাড়োয়ারিকে ধরে এনে হত্যা করে এখানে পুঁতে রাখে।

সতের শহীদকে আজও ভোলেনি গঙ্গাচড়াবাসি:

১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার শংকরদহ গ্রামে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হন ১৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী। এদের মধ্যে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় পাক সেনারা ব্রাশ ফায়ার করে মেরেছে ৬ জন, চলতি পথে গুলি করে ১০ জন এবং বেয়নেট চার্জ করে মেরেছে ১ জনকে। ১৯৭১-এর ১২ ডিসেম্বর সকালবেলা কোম্পানি কমান্ডার মীর আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল গঙ্গাচড়া থানা আক্রমণ করে। তার পূর্বেই পাক সেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা থানা ব্যারাক থেকে কিছু অস্ত্র, গোলাবারুদসহ একজন পাকিস্তানি বাবুর্চীকে ধরে নিয়ে যায় তিস্তা নদীর অপরপ্রান্তে মুক্ত স্বাধীন এলাকায়। এ খবর পেয়ে পরদিন রংপুর সেনানিবাস থেকে একদল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গঙ্গাচড়ায় আসে। ক্ষিপ্ত সৈন্যরা ব্রাশফায়ার করতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী শংকরদহ গ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার পথে গঙ্গাচড়ার মফিজ উদ্দিন, ফজর উদ্দিন, আব্দুল আজিজ ও হবিবর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে। ওইদিন বিকালে এলাকার শান্তি কামনায় বকুলতলা পুরাতন মসজিদে নফল নামাজ আদায় করছিলেন মহিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৌলভী তৈয়ব আলী, বছির উদ্দিন, সহির উদ্দিন, মহির উদ্দিন, নবির উদ্দিন ও তার সাত বছরের পুত্র সন্তান। নরঘাতকরা মসজিদ আক্রমণ করে নামাজরত অবস্থায় ব্রাশফায়ার করে উক্ত ৬ জনকেই হত্যা করে।

স্বাধীনতার এত বছর পরও গঙ্গাচড়ায় নিহতদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিসৌধ, আসেনি ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম, পালন হয় না গণহত্যা দিবস। তবে ভয়াল সেই স্মৃতি আজও কাঁদায় গঙ্গাচড়ার মানুষকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. দিনেশ চন্দ্র ভৌমিক মন্টুর ছেলে সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, ‌স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বধ্যভূমিগুলোতে রাষ্ট্রীয় ভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এসব বধ্যভূমিসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্থাপনা সংরক্ষণে সরকারকে আরও গুরুত্ব বাড়াতে হবে।’

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু বলেন, সরকারের উচিত বধ্যভূমিগুলোকে সংরক্ষণ এবং ফুটিয়ে তোলা, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেঁচে থাকে। তা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আকাঙ্খা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কষ্ট-অর্জন অজানা থেকে যাবে। 

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বধ্যভূমি এবং গণকবর সংস্কারের জন্য কাজ করছে। রংপুরে যে সব বধ্যভূমি এখনও অরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দমদমা বধ্যভূমি, টাউন হলের পিছনের বধ্যভূমি, সাহেবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ শেষ করা হয়েছে। সেসব বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ ও নামফলক বসানো হয়েছে।

  বিজয়ের ৫০ বছর

‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে, জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লেকচার সিরিজের মূল বক্তা এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসের কো ফাউন্ডার ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্জেস বলেছেন, রুয়ান্ডা, আর্মেনিয়া, পূর্ব তিমুরসহ অনেক দেশেই গণহত্যা হয়েছে। বাংলাদেশেও গণহত্যা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন গণহত্যা না হয়, সেজন্য জবাবদিহিতা ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সোমবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তিনি এসব কথা বলেন।

‘বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু লেকচার সিরিজের আওতায় এই আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্জেস বলেন, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে আমি প্রথম আসি। তখনো বাংলাদেশের গণহত্যার বিষয়ে আমি অবহিত ছিলাম না। তবে কি ঘটনা ঘটেছিলো আমি পরবর্তীতে সেটা জানার চেষ্টা করি এবং জানতে পারি।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মানবিক কারণে শরণার্থীদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে আসছে। এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে প্রকৃত ঘটনা আসিয়ানকেও অবহিত করার চেষ্টা করছি।

বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী দেশ রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে তা দেয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের চেয়েও ১৯৭১ সালে ব্যাপকভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে।তবে স্বীকৃতি কেন নয়, এটাই আমাদের প্রশ্ন।

তিনি আরও বলেন, ৫ বছর আগে জাতীয় সংসদে আমরা ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তখন থেকেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আমরা গণহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করার চেষ্টা করি। এতদিন পরেও সেই গণহত্যার ঘটনা শুনে মানুষ ধাক্কা খায়। আতকে উঠে। সেই ঘটনা এখনো সবাইকে জানানো জরুরি।

তবে দুঃখজনক হলেও হয়তোবা সম্ভব নয় যে, জাতিসংঘ এই গণহত্যাকে আলাদাভাবে স্বীকৃতি দেবে। এটার বাস্তবতা যে ভিন্ন, সেটাও আমরা কয়েক বছর ধরে আপনাদের বলে আসছি, আপনারাও সেটা বোঝেন। তবে যাদের কাছে এটা গ্রহণ করতে কষ্ট হবে, তাদের কাছে ব্যাখ্যা করারও সুযোগ আছে। সেটা হলো, সেই সময়ের ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমান বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, বা আমাদের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। তাদের অনেকের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে, তারা প্রাইভেট মিটিংয়ে আমাদের বলবেন, এই কাজগুলো ঠিক হয়নি, ভুল ছিলো, বলেনও। তবে পাবলিকলি তারা বলেন না। আমাদের প্রত্যাশা তারা যেন এখন বলেন, না সেই সময়ে তাদের অগ্রজরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। আর এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমরা আরও জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবো। বিশ্বব্যাপী এটার গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পাস হয়। তারপর থেকেই সরকার শক্তভাবে এটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এটা একটি কঠিন কাজ। ১৯৭১ সালের প্রজন্মকে আমরা ধীরে ধীরে হারাচ্ছি। সে কারণে এখন সেই সময়ের ঘটনা শিক্ষার্থীদের অবহিত করার চেষ্টা করছি।

 

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

১৫৯ উপজেলাকে গৃহ-ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতটি জেলা এবং ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এর ফলে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা নয়টি এবং উপজেলার সংখ্যা ২১১টি।

সকল ভূমিহীনদের আবাসন নিশ্চিত করার সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আগে গৃহহীনদের আরও ৩৯৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে এসব বাড়ি হস্তান্তর করেন।

এর আগে প্রথম ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় আরও ৩৯৩৬৫টি বাড়ি বিতরণের ফলে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,১৫,৮২৭টি। 

প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নোয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশালের বানারীপাড়ার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

সরকার শুধু খাস জমিতে প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণই করছে না, বাড়ি নির্মাণের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছ থেকে জমি কেনা হচ্ছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন। বঙ্গবন্ধুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭,৭১,৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৮,৫৬,৫০৫ (আনুমানিক একটি পরিবারে পাঁচজন ব্যক্তি হিসাবে)।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৫,৫৪,৫৯৭ পরিবারকে সরাসরি পুনর্বাসন করা হয়েছে এবং ২,১৬,৭০৪ পরিবারকে ভূমি মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসের বিভিন্ন কর্মসূচির অধীনে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

সুষম সার ব্যবহারে সাশ্রয় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সুষম সার ব্যবহারে সাশ্রয় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা

সুষম সার ব্যবহারে সাশ্রয় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা

  • Font increase
  • Font Decrease

ফসল উৎপাদনে জমিতে পরিমিত ও লাভজনক মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষকরা জানান, সুষম সার ব্যবহারে শতকরা ৮ থেকে ১৪ ভাগ ফসল উৎপাদন বাড়ে এবং এতে বছরে বিশ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। তাঁরা বলেন, বিগত বছরসমূহে প্রতি বছর সার বাবদ সরকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘সার নীতি সংলাপ’ অনুষ্ঠানে গবেষকরা এ আহবান জানান। কৃষককে সুষম সারের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করার পরামর্শ দিয়েছেন সার নীতি সংলাপের প্যানেল আলোচকরা।

সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে আনা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ইউরিয়ার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আবার ডিএপির ব্যবহারও বাড়ছে। এতে করে সারের অপচয় হচ্ছে এবং সার আমাদনির খরচও বাড়ছে।

কৃষিসচিব আরও বলেন, জমিতে এক কেজি ডিএপি সার ব্যবহার বাড়ালে ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া সার কম ব্যবহার করলে হয়। এক্ষেত্রে টিএসপি সার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। এ বার্তাটি মাঠ পর্যায়ে না পৌঁছানোর কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকারের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। এজন্য মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে অঞ্চল ভিত্তিক সার সুপারিশমালা ব্যবহার করে ফসল আবাদে সুষম সার ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। সরকার পরিমিত মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারে গবেষণা ও ব্যবস্থাপনার উপর ‘নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ফর ডাইভারসিফাইড ক্রপিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রকল্প লিডার ড. রিচার্ড ডব্লিউ বেল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সুপারিশসহ সুষম সার ব্যবহারে কৃষকরা কতটুকু সুফল পেতে পারে, তার একটি চিত্র তুলে ধরেন। তাঁর উপস্থাপনায় উঠে আসে কৃষকরা সুষম সার ব্যবহার করলে বছরে ধান উৎপাদন বেশি হবে ৭৫ লাখ টন। সার্বিকভাবে বছরে লাভ হবে ২০ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারের সভাপতিত্বে প্যানেল ডিসকাশনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিফ) এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার এবং কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য পরিচালক ড. মোঃ বক্তীয়ার হোসেন।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

রাজবাড়ীর চারটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
রাজবাড়ীর চারটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত

রাজবাড়ীর চারটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজবাড়ীর চারটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হলো। উপজেলাগুলো হলো- কালুখালী, পাংশা, বালিয়াকান্দি ও রাজবাড়ী সদর। বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সারাদেশে মুজিববর্ষ উপলক্ষে চতুর্থ পর্যায়ে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী ‘ক’ শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার না থাকায় এ জেলার রাজবাড়ী সদর, পাংশা ও বালিয়াকান্দি ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০২২ সালের জুনে কালুখালী উপজেলাকে 'ক' শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন।

এদিকে চতুর্থ ধাপে রাজবাড়ীতে মোট ঘর পাচ্ছেন ২৭৭ টি পরিবার। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৩৫টি, পাংশা উপজেলায় ১২০টি, বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১২০টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় ২টি ভূমিহীন পরিবার এই ঘর পেলেন। রাজবাড়ী জেলায় ইতোমধ্যে ২১২২টি ঘর উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা অডিটোরিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল কালাম আজাদ, বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাসিবুল হাসানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপকারভোগী ও সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গ।

জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান তার বক্তব্য বলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে-এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন’। ১৯৭২ সালের ৩রা জুলাই বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত সমবায় সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই উক্তির উপর ভিত্তি করে বর্তমান সরকার ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় পরিবার পুনর্বাসন করে আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’ এরই ধারাবাহিকতায় মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;