৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  বিজয়ের ৫০ বছর


আমিনুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

৫০ বছরেও অরক্ষিত বিজয়ের সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের হাজিরহাট এলাকায় জাফরগঞ্জ ব্রিজের পাশে রংপুর শহরের ব্যবসায়ী অশ্বিনী ঘোষসহ ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ব্রিজের ওপর দুই দিনে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। আমার বাবাকেও জাফরগঞ্জ ব্রিজের কাছে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে পাকিস্তানি সেনারা।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না জাফরগঞ্জ ব্রিজ বধ্যভূমির কথা। নিহতদের স্মরণে সেখানে নির্মাণ করা হয়নি কোনো নামফলক বা স্মৃতিস্তম্ভ। এমন আরও অনেক জায়গা রয়েছে, যা আজও সংরক্ষণ করা হয়নি।

আক্ষেপের সঙ্গেই কথাগুলো বললেন প্রজন্ম একাত্তর রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি দেবদাস ঘোষ দেবু।

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রংপুরে পুরোপুরি সংরক্ষণের আওতায় আসেনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো। কিছু বধ্যভূমি সংস্কার করা হলেও অযত্ন আর অবহেলায় অরক্ষিতভাবে পড়ে থাকা বেশীর ভাগ বধ্যভূমি নিশ্চিহ্নের পথে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা মুক্তিকামী বাঙালিদের ধরে এনে নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তারই রক্ষমাখা নীরব সাক্ষী বধ্যভূমি এবং গণকবরগুলো। এর মধ্যে কিছু জায়গা বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হলেও অনেক জায়গা এখনো চিহ্নিতই করা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরে ছোট-বড় অনেক বধ্যভূমি থাকলেও সরকারিভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে মাত্র ১৩টি। সেগুলো হলো- রংপুর টাউন হল, দখিগঞ্জ শ্মশান, সাহেবগঞ্জ, দমদমা, বালার খাইল, নব্দীগঞ্জ, লাহিড়ীরহাট, ঘাঘট নদী, নিসবেতগঞ্জ, জাফরগঞ্জ ব্রিজ, বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর এবং মিঠাপুকুর উপজেলার জয়রাম আনোয়ারা বধ্যভূমি। এছাড়াও জানা-অজানার মধ্যে রয়েছে মডার্ন সিনেমা হল, কুকুরুন বিল, নারিরহাট, শংকরদহ, বৈরাগীগঞ্জ, বলদিপুকুর, দেবীপুর, শিবগঞ্জ এলাকা বধ্যভূমি এবং রংপুর সেনানিবাস গণকবর। এসব দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা বধ্যভূমি আর কোন জায়গায় রয়েছে গণকবর। নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানানোর জন্য বেশির ভাগ বধ্যভূমিতে নেই তথ্য নির্ভর কোনো নামফলক ও শহিদদের তালিকা।


ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর বধ্যভূমি:

রংপুরের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে অন্যতম বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদাররা দুইটি ট্রেনে চড়ে রামনাথপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া ও কিসমত ঘাটাবিল এলাকার ঝাকুয়াপাড়া সংলগ্ন স্থানে আসে। এরপর তারা রামনাথপুর ও বিষ্ণুপুরে বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ সময় যারা বেঁচে যান তারা প্রাণভয়ে আশ্রয় নেন ঝাড়ুয়ার বিল-পদ্মপুকুর পাড়ে; কিন্তু রাজাকাররা ঝাড়ুয়ারবিল-পদ্মপুকুর পাড়ে সাধারণ মানুষের আশ্রয় নেয়ার বিষয়টি টের পেয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে জানালে তারা সেখানে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে সবাইকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে বদরগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নে ঝাড়ুয়ার বিল বধ্যভূমি ও পদ্মপুকুর এলাকায় ২০১৪ সালে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

রংপুর টাউনহল বধ্যভূমি:

রংপুর শহরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা সবচেয়ে বেশি হত্যাকা­ণ্ড ঘটায় রংপুর টাউন হলে। এটাকে টর্চার সেল বানানো হয়েছিল। এটি ছিল পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতনের একটি প্রধান কেন্দ্র। এই টাউন হলে মেয়েদের ধরে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হতো এবং শেষে মেরে ফেলা হতো। এসব লাশসহ অসংখ্য মুক্তিকামী বাঙালির লাশ টাউন হলের পেছনের একটি কূপে ফেলে দেয়া হতো। গত বছর টাউন হল চত্বর বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে ওই কূপ থেকে বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।


মডার্ন সিনেমা হল বধ্যভূমি

১৯৭১ সালের ১ মে ১৯ জন বাঙালি সেনা অফিসার ও সৈনিককে সেনানিবাস থেকে বের করে এনে রাত ১২টার দিকে সাহেবগঞ্জের এই মডার্ন সিনেমা হলের পেছনের বধ্যভূমিতে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এই বধ্যভূমি থেকে বেঁচে যান এক রিকশাচালক। নভেম্বরের ৮ তারিখে পাকিস্তানি সেনাদের এক দালাল জব্বার ওই রিকশাচালককে ন্যাপের কর্মী বলে ধরে নিয়ে যায়। তাকে মডার্ন সিনেমা হলে আটক রাখা হয়। এখানে তখন প্রায় সাড়ে ৩০০ বন্দীকে আটকে রাখা হয়েছিল। ১৩ দিন অমানুষিক নির্যাতনের পর তাদের সিনেমা হলের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একে একে জিনকি, মালেক, আলী হোসেন, ফারুক হোসেনসহ সবাইকে জবাই করা হয়। এরই এক ফাঁকে সেই রিকশাচালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

ঘাঘট নদতীরে নিসবেগঞ্জ বধ্যভূমি:

পাকিস্তানি বাহিনীর ২৩তম ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার ছিল রংপুর শহরের নিসবেগঞ্জ এলাকায়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ অবাঙালি পাকিস্তানি সেনা অফিসার লে. আব্বাসের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শহরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলে ২৮ মার্চ হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ তীর-ধনুক-বল্লম-লাঠি-দা-কুড়াল এবং বাঁশের লাঠি হাতে রংপুর সেনানিবাস আক্রমণের উদ্দেশ্যে ঘাঘট নদের তীরে জমায়েত হতে থাকে। এ সময় ক্যান্টনমেন্ট থেকে বৃষ্টির মতো গুলি ছোড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। ঘাঘট নদের পানি সেইদিন হাজারো শহিদের রক্তে লাল হয়ে যায়। এতে এই ঘাঘট নদের তীর একটি বৃহৎ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়। এক সময় নিশবেতগঞ্জ সেতু এলাকার সর্বত্র মানুষের মাথার খুলি ও কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে শহীদদের স্মরণে রক্তগৌরব নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।

দমদমা সেতু বধ্যভূমি:

রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে দুই মাইল দক্ষিণ-পূর্বে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে দমদমা সেতুর নিচে রয়েছে একটি বধ্যভূমি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখের মধ্যরাতে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অধ্যাপক সুনীল বরণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন রায় এবং অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়কে বাসা থেকে বের করে আনে। পরে ক্যাম্পাসের ভিতরেই তাদের উপর শারীরীক নির্যাতন চালানো হয়। এই অবস্থায় অধ্যাপক কালাচাঁদ রায়ের সহধর্মিণী মঞ্জুশ্রী রায় বাসা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর জন্য বেরিয়ে আসেন। পরে পাকসেনারা  মঞ্জুশ্রী রায়-সহ অন্যান্য অধ্যাপকদের রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দমদমা ব্রীজ এর কাছে আনে এবং রাস্তা সংলগ্ন একটি বাঁশের ঝাঁড়ে গুলি করে হত্যা করে।


স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এই স্থানে আরও বহু মানুষকে ধরে হত্যা করে। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে- রংপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক ধরে এনে, ৭ই জন মধ্যরাতে এখানে জড় করে হত্যা করা হয়। এই দিনে প্রায় ২০০ লোককে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু মানুষকে এখানে এনে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে দায়িত্ব নেয়ার দীর্ঘ সময় পরেও বধ্যভূমি সংরক্ষণে তেমন উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

দখিগঞ্জ শ্মশানঘাট বধ্যভূমি:

রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানঘাটে ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল রংপুর সেনানিবাসের দুটি মেস থেকে ১১ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকসেনারা এই ১১ জনকে দখিগঞ্জ শ্মশানে এনে গুলি করে। এই সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তাজহাটের দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক (মন্টু ডাক্তার)। দশ জনের লাশের সাথে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মরার মতো পড়ে থাকেন। পাকসেনারা সবাইকে মৃত মনে করে চলে গেলে, দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় শচীন ডাক্তারের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে তিনি ভারতে চলে যান এবং স্বাধীনতার পরে দেশে ফিরে আসেন। এই দলে মন্টু ডাক্তারের সঙ্গে ছিলেন রংপুরের ভাসানী ন্যাপ নেতা ইয়াকুব মাহফুজ আলী। এই বধ্যভূমিতে নামফলক ও শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

সাহেবগঞ্জ বধ্যভূমি:

রংপুর জেলখানা থেকে ১১ জন বন্দী ইপিআর সদস্যকে ধরে এনে হত্যা করে। হারাগাছ রোড ও সাহেবগঞ্জের মাঝামাঝি একটি স্থানে এই শহীদদের গণকবর রয়েছে।

রংপুর সেনানিবাস গণকবর:

রংপুর সেনানিবাসের পাশেই রয়েছে একটি গণকবর। এই গণকবরটিতে পাকিস্তানি বাহিনী বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং বাঙালি ইপিআর সদস্যসহ প্রায় ২০০ ব্যক্তির লাশ পুঁতে রেখেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর এখান থেকে প্রায় ১০ হাজার শহীদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ১২ এপ্রিল হানাদাররা সৈয়দপুর থেকে বহু মাড়োয়ারিকে ধরে এনে হত্যা করে এখানে পুঁতে রাখে।

সতের শহীদকে আজও ভোলেনি গঙ্গাচড়াবাসি:

১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার শংকরদহ গ্রামে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। পাক হানাদার বাহিনীর বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হন ১৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী। এদের মধ্যে মসজিদে নামাজরত অবস্থায় পাক সেনারা ব্রাশ ফায়ার করে মেরেছে ৬ জন, চলতি পথে গুলি করে ১০ জন এবং বেয়নেট চার্জ করে মেরেছে ১ জনকে। ১৯৭১-এর ১২ ডিসেম্বর সকালবেলা কোম্পানি কমান্ডার মীর আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল গঙ্গাচড়া থানা আক্রমণ করে। তার পূর্বেই পাক সেনারা পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা থানা ব্যারাক থেকে কিছু অস্ত্র, গোলাবারুদসহ একজন পাকিস্তানি বাবুর্চীকে ধরে নিয়ে যায় তিস্তা নদীর অপরপ্রান্তে মুক্ত স্বাধীন এলাকায়। এ খবর পেয়ে পরদিন রংপুর সেনানিবাস থেকে একদল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গঙ্গাচড়ায় আসে। ক্ষিপ্ত সৈন্যরা ব্রাশফায়ার করতে তিস্তা নদীর তীরবর্তী শংকরদহ গ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার পথে গঙ্গাচড়ার মফিজ উদ্দিন, ফজর উদ্দিন, আব্দুল আজিজ ও হবিবর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে। ওইদিন বিকালে এলাকার শান্তি কামনায় বকুলতলা পুরাতন মসজিদে নফল নামাজ আদায় করছিলেন মহিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মৌলভী তৈয়ব আলী, বছির উদ্দিন, সহির উদ্দিন, মহির উদ্দিন, নবির উদ্দিন ও তার সাত বছরের পুত্র সন্তান। নরঘাতকরা মসজিদ আক্রমণ করে নামাজরত অবস্থায় ব্রাশফায়ার করে উক্ত ৬ জনকেই হত্যা করে।

স্বাধীনতার এত বছর পরও গঙ্গাচড়ায় নিহতদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিসৌধ, আসেনি ইতিহাসের পাতায় তাদের নাম, পালন হয় না গণহত্যা দিবস। তবে ভয়াল সেই স্মৃতি আজও কাঁদায় গঙ্গাচড়ার মানুষকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. দিনেশ চন্দ্র ভৌমিক মন্টুর ছেলে সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, ‌স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বধ্যভূমিগুলোতে রাষ্ট্রীয় ভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এসব বধ্যভূমিসহ সংশ্লিষ্ট সকল স্থাপনা সংরক্ষণে সরকারকে আরও গুরুত্ব বাড়াতে হবে।’

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু বলেন, সরকারের উচিত বধ্যভূমিগুলোকে সংরক্ষণ এবং ফুটিয়ে তোলা, যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বেঁচে থাকে। তা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আকাঙ্খা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কষ্ট-অর্জন অজানা থেকে যাবে। 

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বধ্যভূমি এবং গণকবর সংস্কারের জন্য কাজ করছে। রংপুরে যে সব বধ্যভূমি এখনও অরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দমদমা বধ্যভূমি, টাউন হলের পিছনের বধ্যভূমি, সাহেবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ শেষ করা হয়েছে। সেসব বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ ও নামফলক বসানো হয়েছে।

আজ কোন এলাকায় কত সময় কারফিউ শিথিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে। এর মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্দান্ত আসতে পারে। 

তবে আজও (২৬ জুলাই) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা কারফিউয়ের আওতায় থাকবে।

ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরসহ চার জেলায় ফের শুরু হবে কারফিউ।

সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা সেখানে কারফিউ শিথিল থাকবে। বরিশালেও একই সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে। 

এছাড়া চট্টগ্রামে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা, রাজশাহীতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা এবং সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

যেসব অঞ্চলে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের আট বিভাগেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

এ অবস্থায় খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

একইসঙ্গে খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

এ সময় টাঙ্গাইল, সিলেট ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। 

বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

  বিজয়ের ৫০ বছর

;