প্রোটিয়াদের বিপক্ষে নেপালের ১ রানের স্বপ্নভঙ্গ 

  ক্রিকেট কার্নিভাল
  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

এভারেস্ট সমান আত্মবিশ্বাস নিয়েই বিশ্বকাপে এসেছিল নেপাল। এবং সেই আত্মবিশ্বাস যে মোটেও মিছে নয় সেটি তারা দেখাল গ্রুপপর্বে তাদের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ঐরি ও ভুরতেলের স্পিন ঘূর্ণিতে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে কেবল ১১৫ রানে। পরে রাবাদা-নরকিয়াদের মতো বিশ্বসেরা পেসারদের সামলে সহজ জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল নেপালিজরা। শেষ ১৮ বলের জন্য লাগত ১৮ রান। হাতে ছিল ৭ উইকেট। তবে ১৮তম ওভারে তাব্রেইজ শামসির জোড়া উইকেটে চাপে পড়ে যায় নেপাল। তবে সোমপাল ও গুলশান শেষ ওভারে ম্যাচ নিয়ে গেলে সেখানে দরকার ছিল কেবল ৮ রানের। ওটনিল বার্টম্যানের সামনে গুলাশান ঝা মিস করলেন শুরুর দুই বল। তবে পরের দুই বলে একটি চার ও একটি ডাবলের পর শেষ ২ বলে সমীকরণ দাঁড়াল কেবল ২ রানের। তবে বার্টম্যানের শেষ দুই বলের দুই বাউন্সার ব্যাটেই লাগাতে পারলেন না গুলশান এবং শেষ বলে প্রান্ত বদল করতে গিয়ে হলেন রান আউট। এতেই ১ রানের হারে স্বপ্নভঙ্গ হলো নেপালের। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে সাক্ষী হতে পারলো না ঐতিহাসিক জয়ের। 

ম্যাচটি জিতলে প্রথমবারের মতো সুপার এইটে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো করতে পারত নেপাল। সেটি নিশ্চিত করতে অবশ্য তাদের হারাতে হতো বাংলাদেশকে। তবে নাটকীয় ম্যাচে এই হারের পরই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেলে রোহিত পোডেলের দলের। ২০১৪ বাংলাদেশ আসরের পুরো এক দশক পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলল নেপাল। তবে এখানেও গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিলেও তাদের লড়াকু মনোভাব নিশ্চিতভাবেই মন ছুঁয়ে গেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। 

বিজ্ঞাপন

এদিকে গ্রুপ ‘ডি’-তে চার ম্যাচের চারটিতেই জিতল প্রোটিয়ারা। এতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে পাড়ি জমাচ্ছে এইডেন মার্করামের দলটি।

কিংসটাউনের আর্নস ভ্যালেতে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল। সেখানে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৫ রানের সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

বিজ্ঞাপন

দুই ওপেনার কুশল ভুরতেল ও আসিফ শেখের ব্যাটে চড়ে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা বেশ ভালো করেছিল নেপাল। তাদের ওপেনিং জুটিতেই আসে ৩৫ রান। তবে অষ্টম ওভারে ৩ বলের বলের মধ্যে ভুরতেল ও রোহিতকে সাজঘরে ফেরান শামসি।

আনিল শা’কে নিয়ে সেই চাপ অনায়াসেই সামলে নিয়েছিলেন আসিফ। তৃতীয় উইকেটে তাদের ৫০ রানের জুটি থামে দলীয় ৮৫ রানে গিয়ে। সেখানে আনিল ফেরেন ২৭ রান করে। জয়ের পাল্লা সেখানে অনেকটাই নেপালের দিকে। ৩৮ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল স্রেফ ৩১ রান এবং হাতে ছিল ৭ উইকেট। কোনো উইকেট না হারিয়ে তারা সমীকরণ নিয়ে আসে ১৮ বলে ১৮ রানের। তবে ১৮তম ওভারে শামসির ফের জোড়া আঘাত এবং শেষ ওভারের নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত স্বপ্নভঙ্গ হয় নেপালিজদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম কোনো ম্যাচ জিততে তাই আরও অপেক্ষা করতে হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দলটিকে। প্রোটিয়াদের হয়ে সেখানে ৪ ওভারে সেফ ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন শামসি। এতে জেতেন ম্যাচসেরার খেতাবও। 

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই কিছুটা দেখেশুনে খেলছিল প্রোটিয়া ব্যাটাররা। রানের গতি  কিছুটা ধীরগতির হলেও ১৩ ওভারে ২ উইকেটে স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ৭৩ রান। সেখান থেকি শুরু ঐরি-ভুরতেলের স্পিন ঘূর্ণির। এতে রানের গতি আর বাড়াতেই পারেনি তারা। উল্টো দলীয় ১০০ রানের পৌঁছানোর আগেই পাড়ি জমান মার্করাম, ক্লাসেন ও মিলাররা। ৭ উইকেটে ১১৫ রানেই থামে তাদের ইনিংস। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ভুরতেল নিয়েছেন ৪টি এবং ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ঐরি নিয়েছেন ৩টি।

নেপালের গ্রুপপর্বে শেষ ম্যাচ আগামী ১৭ জুন, বাংলাদেশের বিপক্ষে। রোহিত-ঐরিদের জন্য ম্যাচটি কেবলই নিয়মরক্ষার হলেও বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটি সুপার এইট নিশ্চিতের।