ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা
ক্রিকেট কার্নিভাল![ছবি: সংগৃহীত](https://imaginary.barta24.com/resize?width=800&height=450&format=webp&quality=85&path=uploads/news/2024/Jun/26/1719407459181.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার জয় তুলে নিয়েই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। ইতিহাস গড়ার ৪৮ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই আরও একবার মাঠে নামতে হচ্ছে রশিদ খানদের, তায় আবার সেটা সেমিফাইনালের মঞ্চে। বিপক্ষ দল হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমির এই ম্যাচের মাধ্যমে আরও এক ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছে আফগানদের। কারণ এই ম্যাচ জিতলেই যে প্রথমবারের মতো ফাইনালে চলে যাবে আফগানিস্তান!
এই দলটার ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ। আজ থেকে বিশ বছর আগে তারা প্রথম আনুষ্ঠানিক ম্যাচটা খেলেছিল এসিসি ট্রফিতে। যার বিশ বছর পরই আজ তারা দাঁড়িয়ে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। বিগত ২০ বছরে দলটা যা করেছে, অন্য যে কোনো দলের এটা অর্জন করতে ৫০ বছর লাগিয়ে ফেলার কথা।
আফগানরা নিজেদের পরিশ্রম, অধ্যবসায়, কঠোর অনুশীলন, প্রতিভার এবং দক্ষতার সঙ্গে মানসিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়ে এমনটা করে দেখিয়েছে। এমনটা আসলে হওয়ারই ছিল। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে শেষ কয়েক বছরে আফগান খেলোয়াড়দের জয়জয়কার জানান দিচ্ছিল, আফগানরা ঠিক পথেই আছে। এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা প্রমাণ দিচ্ছে তারই।
তবে তাদের প্রতিপক্ষ যে দল, তাদের কথা ভুলে গেলেও চলবে না। দক্ষিণ আফ্রিকাও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের দুয়ারে! ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা হচ্ছে প্রোটিয়াদের ট্রফিকেসে সবশেষ ট্রফি। এরপর থেকে দলটা আইসিসি ইভেন্টগুলোর সেমিফাইনালে খেলেছে ১০ বার। কিন্তু তার একবারও দলটা জিততে পারেনি। আগামীকাল সকালে ১১তম বারের মতো 'চোকার্স' খ্যাত দলটা নামবে সেমিফাইনালের মঞ্চে।
আফগানিস্তান চাইবে নিশ্চয়ই আবারও দক্ষিণ আফ্রিকার পথের কাঁটা হতে। নিজেদের ইতিহাস না থাকার একটা বড় সুবিধা হচ্ছে, অতীতের কোনো দুঃস্মৃতিও নেই। কোনো চাপও নেই। বিষয়টা জানিয়ে আফগান কোচ জনাথন ট্রট নিজেই বলেছেন, ‘আমরা সেমিফাইনালে যাচ্ছি কোনো ইতিহাস ছাড়া, সেমিফাইনাল সম্পর্কিত কোনো দাগ ছাড়া।’
চাপটা দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থাকবে বেশ। তবে সে চাপ জয় করার রসদও বুঝি আছে দলটার। এই পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ইংল্যান্ড… সবার বিপক্ষেই কমবেশি স্নায়ুর পরীক্ষা দিয়ে জিততে হয়েছে তাদের। আর তাতেই এই দলটাকে নিয়ে নিয়ে দেখা যাচ্ছে সম্ভাবনা। অতীতের ‘চোকার্স’ অপবাদ ঘোচানোর সম্ভাবনা।
শেষ পর্যন্ত ইতিহাসটা কোন দল গড়বে, দক্ষিণ আফ্রিকা নাকি আফগানিস্তান, সে প্রশ্নের উত্তরের জন্য ক্রিকেট বিশ্বকে অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েক প্রহর।