লাল-সবুজে বিজয়ের ৫০ উদযাপন
বিজয়ের ৫০ বছররক্তের দামে কেনা বিজয়ের ৫০ বছরে লাল-সবুজের বর্ণিল সাজে সেজেছে রাজধানী ঢাকা। আড়ম্বর পরিবেশে উদযাপন করা হচ্ছে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী।
আতশবাজি ও নাচ-গানের মধ্যদিয়ে বিজয় উদযাপন করেছে তরুণ প্রজন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এবং কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তারুণ্যের আয়োজনে মেতে উঠেছে নানা বয়সী আর শ্রেণী-পেশার মানুষ। অনেক শিশুরাও এসেছে বাবার সাথে, কেউবা মায়ের সাথে। আবার অনেকে এসেছেন স্বপরিবারে।
‘৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে দেশ পেয়েছি, আজ তার ৫০ বছর। এই চেতনা সবার মধ্যে উজ্জীবিত হোক। বর্তমান প্রজন্ম যদি এসব না জানে তাহলে একটা সময় তাদের মধ্যে দেশ প্রেম থাকবে না।’ বলছিলেন ছোট ছেলেকে নিয়ে শহিদ মিনারে আসা শামসুল হক।
বিজয়ের দিনে বিভিন্ন গণপরিবহনসহ প্রাইভেট গাড়িতে জাতীয় পতাকা শোভা পাচ্ছে। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ছোট-বড় নানা আকারের পাতাকা বিক্রি করতে দেখা গেছে ফেরিওলাদের।
‘বিজয় দিবসকে ঘিরে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের কাছে জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়েছে। অন্যরকম ভালো লাগা, দেশপ্রেম থেকে লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি শুরু করলেও এখন ভালোই বিক্রি হচ্ছে। রাস্তায় ঘুরে পতাকা বিক্রি করতে' করতে বলছিলেন মাসুদ মিয়া’।
বিজয়ের প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভোর থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশের ৫০ বছর উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ৭১ কিলোমিটার বিজয় পদযাত্রা করছে ক্রিড়াবিদরা।
এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের মানুষকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় এই শপথ পড়িয়েছে তিনি।
স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের যে চেতনা প্রস্ফুটিত হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয় বাঙালি জাতি। সেই চেতনাকে ধারণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা সকলের।